ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

তারেক রহমান

গণভোটের আড়ালে পরাজিত স্বৈরাচারকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৫২ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০২৫

হুমকি-ধামকি না দিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, একটি দল ফ্যাসিবাদের নিষ্ঠুরতা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে গিয়ে ফ্যাসিবাদের ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়েছিল। বর্তমান পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে সেই দলের ছাতার নিচে পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার আশ্রয় নিয়েছে কি না- এটি ভাবার সময় এসেছে। গণভোটের আড়ালে পতিত, পরাজিত ও পলাতক অপশক্তিকে রাষ্ট্র- রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

বুধবার (১২ নভেস্বর) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল বর্তমানে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। নির্বাচনের জটিলতা সৃষ্টি মানে একদিকে রাষ্ট্রের খবরদারির সুযোগ নেওয়া, অন্যদিকে পতিত স্বৈরাচারের পুনরাগমনের পথ সুগম করা। এই স্বৈরাচারীর সহযোগিতায় আমরা সম্প্রতি রাজধানীতে আগুন সন্ত্রাস দেখেছি।

তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গণতান্ত্রিক জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। এসময় তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে হুমকি-ধামকি না দিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার (নির্বাচনে অংশ নেওয়ার) আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন
দেশে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ সংকট তৈরি করা হয়েছে: মির্জা ফখরুল
চলতি মাসের শেষ দিকে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান: সালাহউদ্দিন

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জুলাই সনদে যা অঙ্গীকার করা হয়েছে, বিএনপি সেই অঙ্গীকার রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু কেউ যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুর্বল ভেবে অপকৌশলের আশ্রয় নেয় বা বিএনপির বিজয় ঠেকাতে ষড়যন্ত্র করে, তবে সেটিই শেষ পর্যন্ত তাদের রাজনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের বলছি- অযথা পরিস্থিতি ঘোলাটে করবেন না।

দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, এ বছর আলু চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। প্রতি কেজি আলুর খরচ যেখানে ২৫–২৭ টাকা, সেখানে তারা অর্ধেক দামে বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে কৃষকরা প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কায় আছেন। গণভোটে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করার চেয়ে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এখন অনেক বেশি জরুরি।

তারেক রহমান আরও বলেন, বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যায় বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে। অথচ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে শতাধিক আলোচনার পরও সড়ক নিরাপত্তা ইস্যুটি গুরুত্ব পায়নি।

দুপুর আড়াইটায় শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব, এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানউল্লাহ, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী মহাসচিব এহসান মাহবুব জুবায়ের, গণফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার প্রমুখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাত্তার পাটোয়ারী।

কেএইচ/কেএসআর/এমএস