আমরাও চাই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিক: তথ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রামে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক- এটা আমরাও চাই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দায়িত্ব শুধুমাত্র সরকারি দলের নয়। বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হচ্ছে একটি অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য অবাধ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা। কেউ যদি নির্বাচন বর্জন করে কিংবা প্রতিহতের অপচেষ্টা চালায়, তাহলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক না করা কিংবা অগ্রহণযোগ্য করার দায়-দায়িত্ব তাদের।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুরপাড়ে নিজ বাসভবনে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচনকেও অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ করার ক্ষেত্রে সরকারি দলের যেমন দায়িত্ব আছে, বিএনপিসহ বিরোধী দলেরও দায়িত্ব আছে। আমরা চাই একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী দিনের সরকার নির্বাচিত হোক।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে যে বৈঠক হয়েছে- সেখানে নানা বিষয়ের মধ্যে একটি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। আমরা সেই কথাটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রদূতদের জানিয়েছি। অন্যদেরও সেই কথা বলা হচ্ছে। আমরাও চাই দেশে আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক।
সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে মূর্খের মতো বার বার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন কেন বলেন সেটাই আমার প্রশ্ন? নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকার তখন শুধু ফ্যাসিলিটেটরের ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনকালীন যে সরকার দায়িত্বে থাকে পুলিশের একজন কনস্টেবল বদলি করারও ক্ষমতা থাকে না তাদের। সেই নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যেমন একটি পক্ষ, বিএনপিও একটি পক্ষ। আমরা সবাই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি।
তিনি বলেন, পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। ওনারা পাকিস্তানকে কেন এত অনুকরণ করেন সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন? বাংলাদেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ইউকে, ইউরোপ মহাদেশের বিভিন্ন দেশসহ সংসদীয় গণতন্ত্রের সব দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও ঠিক সেভাবে নির্বাচন হবে। চলতি সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। পাকিস্তানের আদলে স্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে সরকারি দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠকের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি তখন আকার অনুযায়ী পৃথিবীর ৬০তম অর্থনীতির দেশ ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে জিডিপির বিচারে ২৫টি দেশকে পেছনে ফেলে গত ১৪ বছরে আমরা জিডিপিতে ৩৫তম, পিপিপিতে ৩১তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হয়েছি। আগামী কয়েক বছর পর বাংলাদেশের ক্রম আরও উপরে উঠবে। বাংলাদেশ ইকনোমিক্যালি ইমার্জিং টাইগার, সেজন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে। সেই আগ্রহ থেকেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা এবং বিভিন্ন অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের আনাগোনা বাংলাদেশে অতীতের তুলনায় বেড়েছে। যেই দেশের অর্থনীতি চাঙা, বাজার বড় এবং ক্রম সম্প্রসারমাণ- সেখানে অন্যান্য দেশ কাজ করতে চায়। ফলে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে তাদের আগ্রহ বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। সেই কারণেই তাদের আনাগোনা, আসা-যাওয়া বেড়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশিদের আনাগোনা সবসময় ছিল, বিদেশিদের আনাগোনা বেশি হওয়া ভালো। তারা বাংলাদেশের ওপর আগ্রহ দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ যেহেতু ইমার্জিং ইকোনমি, বিদেশিরা একটু বেশি আসবে। আমাদের বাণিজ্য বহুমুখীকরণ হবে, আমরা আমাদের পণ্য বিক্রি করতে পারবো। তাদের আগ্রহ আছে বলেই আসছে। এটি দেশের জন্য ভালো।
ইকবাল হোসেন/কেএসআর/এএসএম