ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

সরকার তাসের ঘরের মতো ভেসে যাবে : খালেদা জিয়া

প্রকাশিত: ০১:১৬ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪

২০ দলের নেতৃত্বে জনগণের আন্দোলনে সরকার তাসের ঘরের মতো ভেসে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বেগম খালেদা জিয়া বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এমন একটি নির্বাচনের পন্থা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বের করার আহবান আমরা দীর্ঘদিন জানিয়ে আসছি। এর মধ্যে প্রায় এক বছর চলে গেছে। মানুষের অবস্থা ও দেশের পরিস্থিতি দিন-দিন খারাপ হচ্ছে। সকলের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আহবানে তারা সাড়া দেয়নি। তাই আমাদের আর বসে থাকার কোন উপায় নেই।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ আন্দোলন চায়, পরিবর্তন চায়। তারা তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। তারা ভোট দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সে জন্য তারা বিএনপি ও ২০ দলের প্রতি আন্দোলন করার প্রতিনিয়ত আহবান জানাচ্ছে। আমি যেখানেই যাচ্ছি, দলে দলে লোক এসে আন্দোলনের দাবি জানাচ্ছে। কাজেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অচিরেই আমাদেরকে আন্দোলন শুরু করতে হবে। আমরা অস্ত্রের মোকাবিলায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পথে নামবো। আমাদের আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক, জনগণের আন্দোলন। জনগণের সেই আন্দোলনে স্বৈরাচারী, অবৈধ সরকার তাসের ঘরের মতো ভেসে যাবে।
 
খালেদা জিয়া আরও বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের অংশ্র গ্রহণে নির্বাচন হতে হবে। আর সকল দলের জন্য লেভেল প্লেয়ি ফিল্ড থাকবে। কেউ ক্ষমতাসীন হয়ে আর কেউ ক্ষমতাহীন হয়ে নির্বাচন করবে, সেটা হতে পারে না। আর নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, পুলিশ এগুলোকেও দল নিরপেক্ষ অবস্থানে আনতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য করে বেগম জিয়া বলেন, সরকার ভিনদেশী হানাদারদের পথ বেছে নিয়েছে। দেশের এই পরিস্থিতিতে, জনগণের এই চরম দুঃসময়ে কি আপনারা বসে থাকতে পারেন? নিশ্চিয়ই না। তাই আপনারদের প্রতিবাদ করতে হবে, আন্দোলন সংগঠিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় দাবি করে তারা স্বাধীনতা যুদ্ধ সংগঠিত করেছে। তাদের দাবি যে কতটা ভিত্তিহীন তা এখন  তাদের দলভূক্ত লোকদের বই-পত্র থেকে পরিষ্কার হয়ে গেছে। কিন্তু সত্য কথা বললে তার তথ্য ভিত্তিক জবাব না দিয়ে গালিগালাজ করে। আর গালিগালাজ হচ্ছে আওয়ামী লীগের সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধার চেতনা।

মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির চেয়ারপারসন আরও বলেন, আপনাদেরকে  নিয়ে  বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা হবে। মুক্তিযোদ্ধারা থাকবে সামনের কাতারে।

এ সময় খালেদা জিয়া সরকারকে কাছে কিছু দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে দলীয় রাজনীতি বন্ধ করতে হবে, তাদের স্বার্থ ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে, শহীদ ও বিপন্ন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করবে হবে, মুক্তিযোদ্ধারা কারারুদ্ধ হলে কারাগারে তাদের বিশেষ মর্যাদা দিতে হবে, মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে রিজার্ভ সিট রাখতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে আবেগাশ্রয়ী রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।

এর আগে বেগম খালেদা জিয়া রনাঙ্গনের ১০জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ২০ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের নেতৃত্বে বেগম খালেদাকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এনডিপির চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব.) অলি আহমেদ, গণস্বাস্থ্য বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শমসের মবিন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, সালেহ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, প্রচার  সম্পাদক জয়নুল আবদীন ফারুক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।