আইপিসিসিতে নেতৃত্বের আসনে বাংলাদেশি অধ্যাপক হান্নান
অধ্যাপক এম এ হান্নান
বাংলাদেশি অধ্যাপক এম এ হান্নান জাতিসংঘের ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)- এর সপ্তম মূল্যায়ন প্রতিবেদনে নেতৃত্বের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি আইপিসিসির ওয়ার্কিং গ্রুপ থ্রি এর সিএলএ (Coordinating Lead Author) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার এই নিয়োগের মেয়াদ ২০২৫ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত চার বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। অধ্যাপক হান্নানের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে মালয়েশিয়ার খনিজ সম্পদ ও টেকসই পরিবেশগত উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আইপিসিসি ব্যুরো তার বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও সামাজিক-অর্থনৈতিক জ্ঞান, ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্ব, দৃষ্টিভঙ্গির বৈচিত্র্য ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তাকে নির্বাচিত করেছে।
এই নিয়োগের মাধ্যমে অধ্যাপক হান্নান বৈশ্বিক পর্যায়ে টেকসই পরিবহন, জ্বালানি ব্যবহার ও কার্বন নির্গমন হ্রাসের কৌশল প্রণয়নে অন্যতম নেতৃত্বমূলক ভূমিকা পালন করবেন। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ার সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিসটিংগুইশড প্রফেসর হিসেবে কর্মরত। ২০২২ ও ২০২৩ সালে ক্ল্যারিভেট অ্যানালাইটিকস তাকে ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে হাইলি সাইটেড রিসার্চার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিশ্বের শীর্ষ ১ শতাংশ সাইটেশনের ভিত্তিতে তিনি বিশ্বের মাত্র ০ দশমিক ১ শতাংশ শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
আইপিসিসির ওয়ার্কিং গ্রুপ থ্রি মূলত জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে বৈজ্ঞানিক ও নীতিগত সুপারিশ প্রণয়ন করে থাকে।
অধ্যাপক হান্নানের দীর্ঘ গবেষণা অভিজ্ঞতা- বিশেষ করে বৈদ্যুতিক যানবাহন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থাপনা ও বুদ্ধিমান পরিবহন ব্যবস্থা বিষয়ে এই ধরনের কাজকে আরও সমৃদ্ধ ও প্রভাবশালী করবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
এই নিয়োগ কেবল অধ্যাপক হান্নানের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা খাতের আন্তর্জাতিক অবস্থানকেও আরও সুদৃঢ় করেছে। জলবায়ু অভিযোজন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে মালয়েশিয়ার অগ্রযাত্রায় তার নেতৃত্ব নতুন মাত্রা যোগ করবে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রেক্ষাপটে কার্বনমুক্ত পরিবহন, স্মার্ট নগরায়ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থার গবেষণাকে বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণে অন্তর্ভুক্ত করার নতুন সম্ভাবনাও তৈরি হবে তার নেতৃত্বে।
অধ্যাপক হান্নান তার নিয়োগ প্রসঙ্গে বলেন, এই নিয়োগ কেবল আমার নয়, বরং মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ এবং গ্লোবাল সাউথ বৈজ্ঞানিক সমাজের সম্মান। আমি বিশ্বাস করি, বৈশ্বিক জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগই হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই পৃথিবী গঠনের মূল চাবিকাঠি।
তিনি আরও বলেন, পরিবহন খাতে টেকসই প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বুদ্ধিমান অবকাঠামো উন্নয়ন জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এবং আমি সেই প্রক্রিয়ার অংশ হতে পেরে গর্বিত।
এএমএ/এমএস