মসজিদুল হারামে নামাজ আদায়ের মানত কীভাবে পূরণ করবেন?
মসজিদুল হারাম। ছবি: সংগৃহীত
কেউ যদি নির্দিষ্ট কোনো মসজিদে নামাজ আদায়ের মানত করে, তাহলে যে কয় রাকাত নামাজের মানত সে করেছিলো, তা যে কোনো জায়গায় আদায় করলে মানত পূর্ণ হয়ে যাবে। মসজিদে হারাম, মসজিদে নববি বা মসজিদে আকসায় নামাজ আদায়ের মানত করলেও ওই নামাজ যে কোনো মসজিদে বা যে কোনো জায়গায় আদায় করলে পূর্ণ হয়ে যাবে। কারণ মানত আমলের সাথে সম্পৃক্ত হয়, কোনো জায়গার সাথে সম্পৃক্ত হয় না।
জাবের (রা.) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন এক ব্যক্তি রাসুলকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি মানত করেছিলাম আল্লাহ যদি আপনাকে মক্কা বিজয়ের তওফিক দান করেন তাহলে বায়তুল মাকদিসে নামাজ পড়ব। রাসুল (সা.) বললেন, এখানেই নামাজ পড়ে নাও। লোকটি আবারও জিজ্ঞাসা করল। রাসুল (সা.) বললেন, তাহলে তোমার যা ইচ্ছা। (মুসনাদে আহমদ)
মানত করলে তা পূরণ করা ওয়াজিব
শরিয়ত আবশ্যক করেনি এমন নফল কোনো আমল নিজের ওপর আবশ্যক করে নেওয়াকে ‘নজর’ বা মানত বলে। মানত শর্তযুক্ত ও শর্তমুক্ত হতে পারে। কেউ যদি বিশেষ উদ্দেশ্য পূরণের শর্তে কোনো আমল করার প্রতিজ্ঞা করে, তাহলে তা শর্তযুক্ত মানত। শর্ত ছাড়া কোনো আমল নিজের ওপর আবশ্যক করে নিলে তাও মানত হিসেবে গণ্য হয়।
মানত করলে তা পূর্ণ করা ওয়াজিব। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, তারপর তারা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়, তাদের মানতসমূহ পূরণ করে এবং প্রাচীন ঘরের তাওয়াফ করে। (সুরা হজ: ২৯)
আরেক আয়াতে আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের বর্ণনায় বলেছেন, তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে যার অকল্যাণ হবে ব্যাপক। (সুরা দাহর: ৭)
মানত পূরণ না করতে পারলে কী করবেন?
তাই মানত করলে তার পূরণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। যদি কোনোভাবেই মানতটি পূরণ করা সম্ভব না হয় অথবা সেটা কোনো পাপ কাজ হয় তাহলে মানতের কাফফারা আদায় করতে হবে। মানতের কাফফারা কসমের কাফফারার মতো।
উকবা ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কসমের কাফফারাই মানতের কাফফারা। (সহিহ মুসলিম)
অর্থাৎ মানত করার পর কোনোভাবেই পূরণ করতে না পারলে কাফফারা হিসেবে দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়াবে অথবা দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে পোশাক দান করবে, সামর্থ্য না থাকলে তিন দিন রোজা রাখবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা নিজেদের পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান করা, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। যে সামর্থ্য রাখে না, তার জন্য তিন দিন রোজা রাখা। (সুরা মায়েদা: ৮৯)
ওএফএফ/জিকেএস