পাকা দেয়ালে তায়াম্মুম করার নিয়ম
দেয়ালে তায়াম্মুম করার নিয়ম। ছবি: ক্যানভা
প্রশ্ন: পাকা দেয়ালে তায়াম্মুম করা যাবে? দেয়ালে তায়াম্মুম করার নিয়ম কী?
উত্তর: মাটি বা মাটিজাতীয় বস্তু যেমন বালু, পাথর, চুন ও সুরমা ইত্যাদি দিয়ে তায়াম্মুম করা যায়। পোড়ামাটি, পাকা ইট, টাইলস, সিমেন্ট ও পাথরের মেঝে বা দেওয়ালেও (যদি ওপরে মাটিজাতীয় নয় এমন বস্তুর আবরণ না থাকে) তায়াম্মুম করা যায় যেহেতু এগুলোও মাটিজাতীয় উপাদান দিয়ে তৈরি হয়।
লোহা, প্লাস্টিক, কাঠ, কাপড়, সোনা, রুপা, পিতল, কাঁচ, মাটিজাতীয় নয় এমন বস্তু দিয়ে তৈরি রঙ, কাগজ ও ছাই এসব বস্তু দিয়ে তায়াম্মুম করা যায় না।
শহরের পাকা মসজিদ বা বাড়ির দেয়াল যদি ইট, বালু বা সিমেন্ট দিয়ে নির্মাণ করা হয় এবং তাতে কোনো রকম রঙ বা প্রলেপ না থাকে, তাহলে এ ধরনের দেয়ালে তায়াম্মুম শুদ্ধ হবে যেমন ওপরে উল্লেখ করা হয়েছে।
আর দেয়াল যদি রঙ করা হয়, তাহলে রঙের উপাদান বিবেচনা করতে হবে। যদি রঙ চুন বা মাটি জাতীয় প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি হয়, তবে তায়াম্মুম বৈধ হবে।
আর যদি ওই রঙ প্লাস্টিক, কেমিক্যাল বা তেল-জাতীয় কৃত্রিম উপাদান দিয়ে তৈরি হয়, তবে তাতে তায়াম্মুম বৈধ নয়। যেহেতু এগুলো মাটিজাতীয় বস্তু নয় এবং শরিয়তের দৃষ্টিতে পবিত্রতার মাধ্যম হিসেবে গণ্য হয় না।
দেয়ালে তায়াম্মুম করার নিয়ম
দেয়ালে তায়াম্মুমের নিয়ম হলো তায়াম্মুমের নিয়ত করে বিসমিল্লাহ পড়বেন, তারপর দেয়ালে মোট দুবার হাত লাগাবেন, প্রথমবার হাত লাগানোর পর হাত দিয়ে মুখমণ্ডল মাসাহ করবেন, দ্বিতীয়বার কুনুই পর্যন্ত উভয় হাত মাসাহ করবেন।
তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি; ১. নিয়ত করা। ২. মুখমণ্ডল মাসাহ করা। ৩. কুনুই পর্যন্ত হাত মাসাহ করা। এই তিনটি ফরজ পালন করলেই তায়াম্মুম হয়ে যায়।
তায়াম্মুমের সুন্নত ছয়টি; ১. তায়াম্মুমের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। ২. ধারাবাহিকতা রক্ষা করা অর্থাৎ প্রথমে মুখমণ্ডল ও পরে হাত মাসাহ করা। ৩. মুখমণ্ডল ও হাত মাসাহ করার মাঝখানে অন্য কোনো কাজ না করা। ৪. মাটি বা মাটিজাতীয় বস্তুতে হাত দিয়ে হাত আগে-পিছে নাড়াচাড়া করা। ৫. মাটি বা মাটিজাতীয় বস্তুতে হাত লাগানোর পর উভয় হাত ঝেড়ে ফেলা। ৬. মাটি বা মাটিজাতীয় বস্তুতে হাত রাখার সময় আঙুলগুলো খোলা রাখা।
দেয়ালের এক জায়গায় বারবার হাত লাগিয়ে তায়াম্মুম করা যায়। তায়াম্মুমের জন্য প্রত্যেকবার নতুন নতুন জায়গায় হাত লাগানো জরুরি নয়।
তায়াম্মুমের জন্য দেয়াল বা অন্যান্য মাটিজাতীয় বস্তুতে হাত দেওয়ার পর হাতে ধুলা-বালু লাগার প্রয়োজন নেই; বরং হাতে বেশি ধুলাবালু লাগলে মাসেহ করার আগে তা ঝেড়ে ফেলতে হবে যেমন ওপরে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওএফএফ