মানতের গোশত খাওয়া ও খাওয়ানোর বিধান
মানতের গোশত খাওয়ার বিধান ছবি: ক্যানভা
প্রশ্ন: মানতের গোশত খাওয়ার বিধান কী? অসুস্থ অবস্থায় মানত করেছিলাম সুস্থ হলে ছাগল জবাই করে খাওয়াব। সুস্থ হওয়ার পর মানত আদায়ের উদ্দেশ্যে ছাগল জবাই করে এলাকার দরিদ্র লোকদের দাওয়াত দেই। তাদের সঙ্গে বসে আমি ও আমার কিছু ধনী মেহমানও মানতের ওই পশুর গোশত খাই। পরে খটকা লাগে মানতের গোশত আমাদের খাওয়া জায়েজ হয়েছে কি না? জায়েজ না হয়ে থাকলে এখন করণীয় কী?
উত্তর: মানতের পশুর গোশত পুরোটাই দরিদ্রদের হক, পুরোটাই দরিদ্রদের মধ্যে দান করে দিতে হয়। মানতের গোশত মানতকারী নিজে খেতে পারে না, ধনী লোকদেরও খাওয়াতে পারে না। তাই মানতের গোশত আপনার খাওয়া জায়েজ হয়নি, আপনার ধনী মেহমানদের খাওয়ানোও জায়েজ হয়নি। এখন আপনার করণীয় হল, যে পরিমাণ গোশত আপনি ও আপনার ধনী মেহমানরা খেয়েছেন এর মূল্য দরিদ্রদের মধ্যে সদকা করে দেবেন।
ইসলামের পরিভাষায় শরিয়ত আবশ্যক করেনি এমন নফল কোনো আমল নিজের ওপর আবশ্যক করে নেওয়াকে ‘নজর’ বা মানত বলে। মানত শর্তযুক্ত ও শর্তমুক্ত হতে পারে। কেউ যদি কোনো বৈধ উদ্দেশ্য পূরণের শর্তে কোনো আমল করার প্রতিজ্ঞা করে, তাহলে তা শর্তযুক্ত মানত। যেমন কেউ যদি বলে, ‘আমি চাকরি পেলে দশ রাকাত নফল নামাজ পড়বো বা এক হাজার টাকা দান করবো’ এটি একটি শর্তযুক্ত মানত। এ ছাড়া শর্ত ছাড়া কোনো আমল নিজের ওপর আবশ্যক করে নিলে তাও মানত হিসেবে গণ্য হয়।
মানত করলে তা পূর্ণ করা ওয়াজিব। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, তারপর তারা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়, তাদের মানতসমূহ পূরণ করে এবং প্রাচীন ঘরের তাওয়াফ করে। (সুরা হজ: ২৯) আরেক আয়াতে আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের বর্ণনায় বলেছেন, তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেই দিনকে ভয় করে যার অকল্যাণ হবে ব্যাপক। (সুরা দাহর: ৭)
তবে কেউ কোনো গুনাহের কাজের মানত করলে তা পূরণ করা ওয়াজিব নয় বরং ওই মানত পূরণ না করা জরুরি। যেমন কেউ যদি শিরক-বিদআত হয় এমন কোনো মাজারে টাকা দান করার মানত করে, তাহলে এটা গুনাহের কাজ হওয়ায় তা পূরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
রাসুল (সা.) বলেছেন, কেউ ভালো কাজের মানত করলে সে যেন তা পূর্ণ করে। আর কেউ গুনাহের মানত করলে সে যেন তা পূর্ণ না করে। (সহিহ বুখারি: ৬৬৯৬)
ওএফএফ