ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

নবিজি (সা.) কেন চোখে সুরমা দিতে বলেছেন?

ইসলাম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৭:৫৪ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৩

সুরমা লাগানো সুন্নত। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে চোখে সুরমা লাগাতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে ইছমিদ সুরমা লাগাতে বলতেন। ইছমিদ উন্নতমানের সুরমা। কিন্তু নবিজি কেন চোখে সুরমা দিতে বলেছেন?

নিয়মিত সুরমা লাগালে চোখের জ্যোতি বাড়ে। চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধক জীবাণুকে ধ্বংস করে সুরমা। চোখের ময়লা দূর করে। চোখের পাতায় লোম গজায়। এছাড়া সুরমা ব্যবহার করলে চোখের জন্য ছোঁয়াচে সব ধরনের রোগজীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়। হাদিসের একাধিক বর্ণনা থেকেও তা প্রমাণিত।

১. হজরত সালেম ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

عَلَيْكُمْ بِالإِثْمِدِ فَإِنَّهُ يَجْلُو الْبَصَرَ وَيُنْبِتُ الشَّعَرَ

‘তোমরা অবশ্যই ইছমিদ সুরমা ব্যবহার করবে। কেননা তা চোখের ময়লা দূর করে, দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং চোখের পাতায় লোম গজায়।’ (ইবনে মাজাহ ৩৪৯৫)

২. হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি-

عَلَيْكُمْ بِالإِثْمِدِ عِنْدَ النَّوْمِ فَإِنَّهُ يَجْلُو الْبَصَرَ وَيُنْبِتُ الشَّعَرَ

‘তোমরা ঘুমানোর সময় অবশ্যই ইছমিদ সুরমা ব্যবহার করবে। কেননা তা দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করে এবং চোখের পাতায় লোম গজায়।’ (ইবনে মাজাহ ৩৪৯৬)

৩. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

خَيْرُ أَكْحَالِكُمُ الإِثْمِدُ يَجْلُو الْبَصَرَ وَيُنْبِتُ الشَّعَرَ

‘তোমাদের জন্য উত্তম সুরমা হচ্ছে ইছমিদ। তা চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং চোখের পাতায় লোম গজায়।’ (ইবনে মাজাহ ৩৪৯৭, আবু দাউদ ৩৮৭৮)

৪. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা ‘ইছমিদ’ সুরমা ব্যবহার করো। কারণ, তা চোখের জ্যোতি বাড়ায়, চোখ পরিষ্কার রাখে এবং অধিক ভ্রু উৎপন্ন করে। তিনি (ইবনে আব্বাস) আরও বলেন, ‘নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি সুরমাদানি (সুরমা রাখার পাত্র) ছিল। প্রত্যেক রাতে ঘুমানোর আগে ডান চোখে ৩বার এবং বাম চোখে ৩বার সুরমা লাগাতেন।’ (বায়হাকি)

৫. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

مَنِ اكْتَحَلَ فَلْيُوتِرْ مَنْ فَعَلَ فَقَدْ أَحْسَنَ وَمَنْ لاَ فَلاَ حَرَجَ

‘যে ব্যক্তি সুরমা লাগায়, সে যেন বেজোড় সংখ্যকবার লাগায়। যে তা করলো, সে ভালো করলো এবং যে তা করলো না, তার দোষ হবে না।’ (ইবনে মাজাহ ৩৪৯৮)

৬. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন-

 كَانَتْ لِلنَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مُكْحُلَةٌ يَكْتَحِلُ مِنْهَا ثَلاَثًا فِي كُلِّ عَيْنٍ

‘নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি সুরমাদানি ছিল। তিনি তা থেকে প্রতি চোখে তিনবার করে সুরমা লাগাতেন।’ (ইবনে মাজাহ ৩৪৯৯, তিরমিজি ২০৪৮)

সুরমা লাগানোর উপকারিতা বিজ্ঞানের গবেষণায়ও প্রমাণিত। হাদিস ও বিজ্ঞানের গবেষণায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ সুন্নত পালনে চোখ অনেক বড় বড় অসুবিধা ও ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকবে। গবেষণা থেকে আরও জানা যায়, সুরমা চোখের জন্য ছোঁয়াচে সব ধরনের রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে। চোখের প্রবেশকৃত ধূলা ও ক্ষতিকর পদার্থগুলো নিঃসরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধক জীবাণুকে ধ্বংস করে। এমনকি চোখের জ্বালাপোড়া নিরাময় করে।

সুতরাং সবার উচিত, সুরমা ব্যবহার করা। চোখের যাবতীয় ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকা। হাদিসের ওপর আমল করা। সুন্নতের অনুসরণে নিজেদের চোখকে ক্ষতি থেকে মুক্ত রাখা। আল্লাহ তাআলা হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

আরও পড়ুন