নামাজের শেষ বৈঠকে যেসব বিষয়ে আশ্রয় চাইবেন

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব মানুষের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। তিনি নামাজের শেষ বৈঠকে আল্লাহর কাছে বেশ কিছু বিষয়ে আশ্রয় চাইতেন। পড়তেন বিশেষ কিছু দোয়া। মুমিন মুসলমানও সুন্নতের অনুসরণে নামাজের শেষ বৈঠকে আল্লাহর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে আশ্রয় চাইবেন। সেই বিষয়গুলো কী?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সম্পূর্ণ নিষ্পাপ। আল্লাহ তাআলঅ তাঁর আগের এবং পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন মর্মে কোরআনে পাকে আয়াত নাজিল করেছেন। এরপরও তিনি আল্লাহর কাছে ছোট-বড়, সাধারণ-জটিল বিভিন্ন বিষয়ে আশ্রয় চাইতেন। এর অন্যতম কারণ হলো- তাঁর উম্মতকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার শিক্ষা দেওয়া। তিনি নামাজের শেষ বৈঠকে এভাবে আশ্রয় চাইতেন-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নামাজে এই দোয়া পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবরি, ওয়া আউজুবিকা মন ফিতনাতিল মাসিহিদ দাঝ্ঝালি ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি; আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল মাছামি ওয়াল মাগরামি।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই, তোমার কাছে মাসীহ দাজ্জালের ফেতনা থেকে আশ্রয় চাই এবং তোমার কাছে জীবন-মৃত্যুর ফেতনা থেকে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে পাপকার্য ও ঋণগ্রস্ততা থেকেও আশ্রয় চাই।’
নামাজে ঋণ থেকে আশ্রয় চাইবেন কেন?
ঋণগ্রস্ততার কারণে মানুষ দুইটি মারাত্মক গুনাহ করে ফেলে। ঋণ পরিশোধে বেশি বেশি মিথ্যা কথা বলে এবং ওয়াদা খেলাফ করে। তাই ঋণ থেকে মুক্ত থাকতে হাদিসে দোয়া করার কথা বলা হয়েছে। ঋণ থেকে মুক্ত থাকতে হাদিসে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এভাবে-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা আরও বর্ণনা করেন, এক ব্যাক্তি তাঁকে (নবিজিকে) বললো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি ঋণগ্রস্ততা থেকে এত বেশি আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন কেন? তিনি বললেন, মানুষ যখন ঋণগ্রস্ত হয়, তখন (দুইটি কাজে বেশি জড়িয়ে পড়ে)-
১. মিথ্যা কথা বলে এবং
২. ওয়াদা করার পরও ওয়াদা খেলাফ বা ভঙ্গ করে।’ (মুসলিম)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ঋণগ্রস্ত হলেই তা পরিশোধের সর্বাত্মক চেষ্টা করা। ঋণগ্রস্ততার মাধ্যমে নিজেকে মিথ্যা বলা ও ওয়াদা খেলাফ করার গুনাহ থেকে হেফাজত থাকা জরুরি। এ দুটি কাজই মুনাফিকের আলামত। আর মুনাফিকের অবস্থান জাহান্নামের সর্বশেষ স্তরে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মিথ্যা ও ওয়াদা খেলাফের গুনাহ থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি জাহান্নাম থেকে বাঁচাতে যথা সময়ে ঋণ পরিশোধের তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম