ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

হাতে লেখা ‘অবৈধ চালান’ দিচ্ছে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড

প্রকাশিত: ০৩:৪৩ এএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ক্রেতাদের হাতে লেখা ‘কাঁচা চালান’ দিচ্ছে দেশের সুপ্রতিষ্ঠিত ডায়মন্ড জুয়েলারির প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড। হাতে লেখা চালান ক্রেতাকে সরবরাহের ফলে বিপুল অংকের ভ্যাট ফাঁকির আশঙ্কা থেকে যায় বলে ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টারে (ইসিআর) চালান প্রস্তুতকে গুরুত্ব দিয়েছে ভ্যাট কর্তৃপক্ষ। তবে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ক্রেতাদের হাতে লেখা চালান নিতে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বছরের ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ধানমন্ডির র‌্যাংগস নাসিম স্কয়ারের ব্রাঞ্চ থেকে ডায়মন্ডের এক পিস লকেট কিনেন ফয়সাল আহমেদ নামে এক গ্রাহক। স্বর্ণের প্রলেপসহ ডায়মন্ডের ওই লকেটের বিল হয় সাড়ে ৬ হাজার টাকা। ডায়মন্ড ওয়ার্ড হাতে লেখা রশিদে ৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত করে ৩২৫ টাকা ‘অতিরিক্ত’ আদায় করে। সন্দেহ হলে ওই ক্রেতা ভ্যাট গোয়েন্দার ফেসবুক পেজে অভিযোগ করেন ফয়সাল। অভিযোগের সঙ্গে কাঁচা চালানটিও সংযুক্ত করেন তিনি।

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের এই ‘কাঁচা চালান’টি ‘বৈধ নয়’ বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। ভ্যাট গোয়েন্দার এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, “এটি ‘কাঁচা চালান’ এবং বৈধ নয়। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটে অভিযোগ করুন।”

কাঁচা চালানের বিষয়ে ঢাকার সেগুনবাগিচা সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা শাফায়াত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, “ভ্যাট প্রদানের ক্ষেত্রে ইসিআর (ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার) চালান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিক্রেতাকে ইসিআর চালান দিতেই হবে।”

মুসক ১১, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নম্বর সম্বলিত একটি ভ্যাট চালানের ফর্ম তৈরি করে একাধিক বার ব্যবহার করলে সরকার প্রকৃত ভ্যাটের টাকা থেকে বঞ্চিত হতে পারে বলে সবাইকে ইসিআরে বিল প্রস্তুতের নির্দেশনা দিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে এই নির্দেশনাকে অমান্য করে ক্রেতাদের ‘কাঁচা চালান’ নিতে বাধ্য করেছে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড।

‘কাঁচা চালান’ ও ভ্যাটের বিষয়ে জানতে চাইলে কিছু না বুঝেই জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকে মামলা দেয়ার ভয় দেখান ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মিডিয়া ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, “আমরা নিয়মিত ভ্যাট দিচ্ছি। না জেনে উল্টা-পাল্টা লিখবেন না। লিখলে সাংবাদিকদের উপর ইফেক্ট (প্রভাব) পড়বে।”

এর আগে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগারওয়ালা দৈনিক ইনকিলাবের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির ইমেইলে হাতে লেখা ‘অবৈধ’ কাঁচা চালানের স্ক্যান কপি পাঠানো হলে প্রতিষ্ঠানটির ধানমন্ডি ব্রাঞ্চের ম্যানেজার (একাউন্টস) রাজ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

diamond-world

শুধুমাত্র কাঁচা চালান দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে রাজ কুমার জাগো নিউজকে বলেন, “আমরা ইসিআর এবং হাতে লেখা চালান দুটিই দিয়ে থাকি। আপনার পাঠানো কাঁচা চালানটির তারিখ ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি। ভালোবাসা দিবসের দিন আমাদের অনেক ক্রেতা থাকায় আমরা সময় মতো চালান সরবরাহ করতে পারিনি। অনেকে সময়ের অভাবে ইসিআর চালান নিতে চান না।”

তবে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের একাধিক ক্রেতা জাগো নিউজকে শুধুমাত্র ‘কাঁচা চালান’ দেয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। তারা জানান, সচেতন ক্রেতারা কাঁচা চালানের বিষয়টি জানতে চাইলে ‘ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন’ নম্বর দেখিয়ে তাদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড। ভ্যাট আইনে বলা থাকলেও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড পণ্য বিক্রির তথ্যাদি গোপনে সংরক্ষণ করে।

এআর/আরএস/এমএস