৪ মাসে ডিএমপির ১৫ ওসি বদলি
রাজধানীর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এখনো সবার প্রথম আস্থা পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাকে (ডিএমপি) ৪৯টি ভাগে বিভক্ত করে তৈরি করা হয়েছে স্বতন্ত্র থানা। এদের প্রত্যেকটির মধ্যে পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) সমমর্যাদার তিনজন করে কর্মকর্তা রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন থানার অফিসার ইনচার্জ বা ওসি নামে পরিচিত। এলাকার অপরাধের দায়ভার প্রথমে বর্তায় তাদেরই উপর। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে তাদের বদলি করা হয়। গত ৪ মাসে এই বদলির সংখ্যা কমপক্ষে ১৫। তবে পুলিশের দাবি এই বদলি ‘রুটিন ওয়ার্ক’।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া নিয়মিতই ‘জনস্বার্থে’ ওসিদের বদলি করার কথা বলেন। এদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধেই অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা কিংবা নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
ডিএমপির হিসেব অনুযায়ী, ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডিএমপির মোট ১৫ জন ওসিকে বদলি করা হয়েছে। তবে মহানগর গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের শেষ দিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে পুলিশের মাঠ পর্যায়ের অন্তত ৪০ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।
যেসব থানা থেকে ওসিদের বদলি করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে সবুজবাগ, রামপুরা, বংশাল, ওয়ারী, সুত্রাপুর, রূপনগর, যাত্রাবাড়ী, শাহআলী, বিমানবন্দর, শাহজাহানপুর, উত্তরখান, মতিঝিল, মুগদা, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, শেরে বাংলা।
ওসিদের বদলির সময় প্রতিবারই কমিশনারের আদেশে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শকদের জনস্বার্থে ডিএমপি’র বিভিন্ন থানায় এই বদলি করা হয়েছে।
তবে এদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থানার অভিযোগ ছিল। প্রত্যাহারের জন্য হয়তো উপযুক্ত কারণও ছিল। এরা হচ্ছেন যাত্রাবাড়ী থানার ওসি অবনী সংকর কর, শেরে বাংলা থানার ওসি আবদুল মমিন এবং শাহ আলী থানার এ কে এম শাহীন মন্ডল। এক নারীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছিল যাত্রাবাড়ীর ওসির বিরুদ্ধে। পরে তাকে বদলি করে মহানগর গোয়েন্দাতে (ডিবি) পাঠানো হয়। ‘সাজানো বন্দুকযুদ্ধে’ শাহ আলম নামে এক ব্যবসায়ীর দুই পায়ে গুলি করার ঘটনায় শেরে বাংলার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
চাঁদা না পেয়ে সম্প্রতি বাবুল নামে এক চা দোকানিকে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠে শাহ আলী থানা পুলিশ ও সোর্সের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ডিএমপির বিভাগীয় তদন্তের পর প্রত্যাহার করা হয় ওসি শাহীন মণ্ডলকে।
৪ মাসে ১৫ ওসি বদলি, প্রত্যাহারের বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রসশাসন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার একটি কৌশলগত অংশ হচ্ছে বদলি। এটি একটি ‘রুটিন ওয়ার্ক’। প্রশাসনে সুশাসন নিশ্চিত করতে ডিএমপি কমিশনার যে কোন সময় অফিসারদের বদলি করতে পারেন।’
এদিকে বদলি, প্রত্যাহারের পাশাপাশি এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ডিএমপির ১৩ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে পদন্নোতিও দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জনকে পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিশনাল-ডিআইজি) এবং ৪ জনকে উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদে পদন্নোতি পেয়েছেন।
এআর/জেএইচ/এবিএস