ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

ফাহিমের চোখে যেখানে গুরুত্বহীন রয়ে গেছেন মাহমুদউল্লাহ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২৫

‘সাইলেন্ট কিলার’; বাংলায় রূপান্তর করলে উক্ত শব্দযুগলের অর্থ- ‘নীরব ঘাতক’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে এ নামে ডাকেন অনেকেই।

যদিও শব্দ চয়নটা ঠিক পরিশুদ্ধ নয়। ঘাতক শব্দটা শুনতে কানে লাগে। তাই একটা বড় অংশের কাছে এ তকমা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তবে এটা সত্য, শব্দটির ভাব সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য।

সবাই জানেন ও মানেন, মাহমুদউল্লাহ নীরবে-নিভৃতে আসল কাজ করে থাকেন। ঘরোয়া ক্রিকেট, ক্লাব ক্রিকেট, বিপিএল, জাতীয় দল সর্বত্রই নিজের দায়িত্ব পালনে ছিলেন সচেষ্ট, সর্বোচ্চ আন্তরিক ও দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক। বেশ সাফল্যের সঙ্গে নিজের কাজ করতে পারতেন। পারফরমার মাহমুদউল্লাহ অবশ্যই সফল।

তবে এটা সত্য যে, পারফরমার হিসেবে ভালো হলেও মাহমুদউল্লাহর সফলতা সেভাবে ফলাও করে দেখানো হয়নি। ডানহাতি অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের সাফল্যের সাতকাহন জনসম্মুখে প্রচারিত হয়েছে কম।

এক কথায়- মাহমুদউল্লাহ যতটা নিবেদিত প্রাণ, পরিশ্রমী, কার্যকর ও সফল পারফরমার; তার কৃতিত্ব সেভাবে হাইলাইট করা হয়নি।

ছেলেবেলা থেকে মাহমুদউল্লাহকে খুব কাছ থেকে দেখা নাজমুল আবেদীন ফাহিমও তাই মনে করেন। কেন তাকে নিয়ে তত হৈচৈ হয়নি। কী কারণে সম সাময়িক পঞ্চপাণ্ডবের বাকি চারজন- মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের তুলনায় কম আলোচিত-আলোড়িত?

কেউ কেউ মনে করেন, মাহমুদউল্লাহ নিজেই এসব থেকে সরে থাকার মানসিকতায় গড়া। আবার কারো মত, মাহমুদউল্লাহ মিডিয়া থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চাইতেন, যে কারণে মিডিয়াই তাকে কম হাইলাইট করেছে।

কেউ কেউ এভাবেও ভাবছেন, মাহমুদউল্লাহ কতটা বড় মাপের ক্রিকেটার? মেধা, প্রজ্ঞায় ঘরোয়া ও জাতীয় দলে তার অবদান কতখানি, সেটা সর্বসাধারণ হয়তো ঠিকমত বুঝতেই পারেননি। যে কারণে মাহমুদউল্লাহ হাইলাইট হয়েছেন কম।

দেশ বরেণ্য ক্রিকেট বিশ্লেষক ফাহিমের ব্যাখ্যা, মাহমুদউল্লাহর চেয়ে মিডিয়ার ভূমিকা বেশি ছিল। মিডিয়া তাকে হাইলাইট করেনি। সেটা কীভাবে?

বিসিবির এ পরিচালক বলেন, ‘রিয়াদ এমন একটা জায়গায় ব্যাটিং করতো, সেটা আসলে খুব হাইলাইট হওয়ার জায়গা নয়। নীচের দিকে যেখানে নামতো, সেখানে তখন সেঞ্চুরি করা সহজ ছিল না। সাধারণত, ওত নীচে নেমে কেউ তা করতেও পারে না। সে হয়তো ছয় নম্বরে নামতো। আবার কোনো সময় সাত নম্বরেও খেলেছে। ওই পজিশনে ৩০-৪০ আর ৫০ রানের ওপরে যাওয়া খুব কঠিন। সেখানে রিয়াদের ২০-৩০ রানের ইনিংসগুলোকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। আমরা গুরুত্ব দিয়ে আসছি বড় বড় স্কোর যারা করেছে তাদেরকে।’

পাশাপাশি মাহমুদউল্লাহর অন্তর্মুখী স্বভাবও তাকে বাকিদের তুলনায় কম প্রদীপের আলোয় রেখেছে বলে মনে করেন ফাহিম।

ফাহিমের ব্যাখ্যা, ‘আর একটা দিক হলো, রিয়াদ নিজেও নিজেকে গুটিয়ে রেখেছে। আমার মনে হয় সে (মাহমুদউল্লাহর) একটু ইন্ট্রোভার্ট টাইপের মানুষ। অন্তর্মুখী স্বভাবের। উপলব্ধি করেছে, বাংলাদেশে মিডিয়ার আকর্ষণ পেতে হলে সাকিব ও তামিমের মতো ভক্ত-সমর্থক থাকতে হতে হবে। শুধু খেলাটাই মূখ্য নয়। রিয়াদের ওসব কিছু ছিল না। তার আগ্রহও ছিল না। আমি অন্তত দেখিনি। যতটা খেলা সম্ভব হয়েছে, যেমন পারফর্ম করতে পেরেছে, ঠিক ততটাই উপস্থাপনের চেষ্টা ছিল রিয়াদের।’

ভালো পারফরমার হওয়ার ক্ষেত্রে এটি মাহমুদউল্লাহকে সাহায্য করেছে উল্লেখ ফাহিম বলেন, ‘তাকে কৃতিত্ব দিতেই হয়। এই যে নিজের গন্ডির মধ্যে থাকা এবং নিজের কাজ নিয়েই মাথা ঘামানো, এর জন্যই হয়তো রিয়াদ অনেক ভালো পারফরমার হয়েছে। তবে আমজনতার মাঝে পরিচিতি পেয়েছে কম।’

এআরবি/এমএইচ/জিকেএস