ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

২০০৩ সালের বিশ্বকাপে কেন ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশ?

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৯:৫৪ পিএম, ২৬ মে ২০২০

‘২০০৩ সালের বিশ্বকাপ’- বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। না পারার এক ব্যর্থ মিশন। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে হওয়া ওই বিশ্বকাপ এখনো অনেকের কাছেই ‘দুঃস্বপ্ন।’

একটা পুরোদস্তুর টেস্ট খেলুড়ে দেশ হয়ে বাংলাদেশই প্রথম বিশ্বকাপে দু’দুটি আইসিসির সহযোগি সদস্য দেশের কাছে হেরেছিল সেবার। কানাডার বিপক্ষে হার ছাড়াও ওই আসরে বাংলাদেশ পারেনি কেনিয়ার সাথেও।

বলার অপেক্ষা রাখে না, ওই চরম ব্যর্থতা নিয়ে সে সময় রাজ্যের সমালোচনাও হয়েছিল। অনেক তীর্যক কথা-বার্তাও হয়েছে। পাকিস্তানি কোচ মহসিন কামালের যোগ্যতা ও মান নিয়েও হাজারটি প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। এমনকি খালেদ মাসুদ পাইলটের অধিনায়কত্ব ও মাঠে দল পরিচালনা এবং মাঠের বাইরের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ওই বিশ্বকাপের ব্যর্থতা ও খেলোয়ড়দের মাঠ ও মাঠের বাইরের আচরণ খুঁটিয়ে দেখতে এবং জানতে তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়েছিল তখন।

কিন্তু আসলে কেন এভাবে ব্যর্থ হয়েছিল সেবার পাইলটের দল? ১৯৯৯’র সফল ও বিশ্বকাপ অভিষেকে সাড়া জাগানো দলে আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আর আকরাম খানের মত ঝানু, পরিণত ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ছিলেন। ২০০৩ সালে তার ঘাটতি ছিল। প্রথম দুজন একদমই ছিলেন না। আর আকরাম খান পায়ের গোড়ালিতে ব্যাথা পাওয়া মাশরাফির বিকল্প হিসেবে গিয়ে শুধু কেনিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি খেলেছেন।

Bangladesh-Canada 2003 world cup

কিন্তু তারপরও আল শাহরিয়ার রোকন, হাবিবুল বাশার, অলক কাপালি, মাশরাফি বিন মর্তুজা, খালেদ মাসুদ পাইলট, খালেদ মাহমুদ সুজন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোহাম্মদ রফিক, মঞ্জুরুল ইসলাম ও তাপশ বৈশ্যর মত পারফরমাররা ঠিকই দলে ছিলেন; কিন্তু তারপরও কেন এমন ভরাডুবি হলো? কি কারণে সব ম্যাচ (ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে খেলাটি বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছিল) হার?

গতকাল ঈদের রাতে ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের সাথে ইউটিউব লাইভে সে কারণ ব্যাখ্যা করেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন; কিন্তু সেবার তো মাঠের ব্যর্থতার পাশাপাশি মাঠের বাইরের আচরণ ও ঘটনাকে ব্যর্থতার কারণ হিসেবেও দাঁড় করানো হয়েছে।

সে সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি? সঞ্চালক নোমান মোহম্মদের এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘আমি আসলে সেটা বলতে পারবো না। তবে আমার মনে হয় প্রথম ও শেষ কথা হলো আমরা ভাল খেলতে পারিনি। আর দল হিসেবে পারফরমও করতে পারিনি।’

কানাডা ও শ্রীলঙ্কার সাথে প্রথম দুই ম্যাচ না খেলা সুজন বাকি ম্যাচগুলোয় অংশ নিয়েছেন। তার উপলব্ধি, ‘সেটা ছিল পুরো দলের ব্যর্থতা। তবে এজন্য কাউকে আমি দায়ী করতে চাই না। আমরা পুরো দলই ব্যর্থ হয়েছি।’

সুজন যোগ করেন, ‘এখন যেমন ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের দ্যুতি দিয়ে সাকিব, তামিম, মুশফিক আর মাশরাফিরা ম্যাচ জেতাচ্ছে। এমনকি সৌম্য আর লিটন দাসরাও ভাল খেলে দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু আমাদের সময় তেমন আহামরি ও ম্যাচ জেতানো ব্যক্তিগত পারফরমেন্স ছিল না। এমন ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের দ্যুতিতে দল টেনে নেয়া কিংবা দল জেতানোর মত পারফরমার কম ছিল। টিম স্পিরিট আর টিম পারফরমেন্সই ছিল মূল শক্তি।’

কিন্তু খালেদ মাহমুদ সুজনের ধারনা, ২০০৩ বিশ্বকাপে ওই দুটিরই ঘাটতি ছিল বেশি। সুজনের কথা, ‘আমি জানি না যে- আমি সঠিক না ভুল, তবে আমার মনে হয় আমাদের ওই বিশ্বকাপে টিম স্পিরিটে পরিষ্কার ঘাটতি ছিল। দলের ভিতরে আমরা ছোট ছোট দ্বীপের মত হয়ে গিয়েছিলাম। দল হিসেবে মোটেও খেলতে পারিনি। সেটাই ব্যর্থতার মূল কারণ।’

সুজনের অনুভব, আমি সেই ১৯৯৬ সালে জাতীয় দলের সাথে সম্পৃক্ত হই। ওই সময় আমাদের পারষ্পরিক সমাঝোতা আস্থা ও সম্প্রীতি ছিল দারুন। সেটা পুঁজি করেই টিম পারফরমেন্স হতো। আমাদের তখনকার শক্তিই ছিল একটি দল হয়ে খেলা এবং টিম পারফরমেন্স; কিন্তু ২০০৩-এ দলের মধ্যে বন্ধনটা আলগা ছিল। যতটা টিম হিসেবে খেলা উচিৎ ছিল, তা হয়নি। ব্যক্তিগত পারফরমেন্সটাও কারো আহামরি হয়নি।’

এআরবি/আইএইচএস