রোনালদোর বিলাসী সাম্রাজ্য: লোহিত সাগরের ভিলা থেকে সুপারকার
ফুটবল মাঠে রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি মাঠের বাইরে বিলাসী জীবন ও বিনিয়োগের এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। লোহিত সাগরের বুকে সৌদি আরবের নুজুমা দ্বীপে দুটি এক্সক্লুসিভ ভিলা কেনা থেকে শুরু করে বিশ্বজুড়ে বিলাসবহুল সম্পত্তি, সুপারকারের সংগ্রহ ও অভিজাত ব্যবসায়িক বিনিয়োগ— সব মিলিয়ে সিআর সেভেন আজ শুধু একজন ফুটবল তারকা নন, বরং বৈশ্বিক লাক্সারি আইকন।
মাঠে তিনি গোলের মেশিন, মাঠের বাইরে এক অনন্য বিলাসী সাম্রাজ্যের মালিক। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো— ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি। শুধু রেকর্ড আর ট্রফিতেই থেমে নেই, বরং গড়ে তুলেছেন বিনিয়োগ, বিলাসিতা ও একচেটিয়া জীবনের এক বিশাল সাম্রাজ্য। সময় যতই গড়াক, ‘সিআর সেভেন’ এখনো ট্রেন্ডে।
এই বিলাসী গল্পের সর্বশেষ অধ্যায় লেখা হচ্ছে সৌদি আরবে। লোহিত সাগরের বুকে অবস্থিত নুজুমা দ্বীপে রোনালদো কিনেছেন দুটি এক্সক্লুসিভ ভিলা। দ্বীপটিতে পৌঁছানো যায় কেবল নৌপথে বা সি-প্লেনে। প্রায় ৮ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের এই বিনিয়োগ আবারও প্রমাণ করে— মাঠের বাইরে রোনালদো কখনোই ছোট লিগে খেলেন না।
বিশ্বজুড়ে রোনালদোর রিয়েল এস্টেট মানচিত্র
রোনালদোর সম্পত্তির তালিকা যেন এক রোমাঞ্চকর ভ্রমণকাহিনি। জন্মভূমি মাদেইরায় রয়েছে তার ৭ মিলিয়ন ইউরোর বেশি মূল্যের বিলাসবহুল ভিলা। নিজস্ব ফুটবল মাঠ, সুইমিং পুল ও জাকুজিসহ এই বাড়িতেই তিনি কোভিড মহামারির বড় একটি সময় কাটান।

স্পেনে মারবেল্লায়, অভিজাত লা রেসিনা গলফ কমপ্লেক্সে রয়েছে আরেকটি আবাসন। আর নিজ দেশ পর্তুগালে এসে রোনালদো যেন আরও এক ধাপ ওপরে উঠেছেন। ক্যাসকাইসের কুইন্তা দা মারিনহায় তার প্রাসাদসদৃশ বাড়িটি তিনতলা বিশিষ্ট, আয়তন ২ হাজার ৭০০ বর্গমিটারের বেশি।
আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে মুখ করা এই বাড়ির গ্যারেজেই রাখা যায় একসঙ্গে ২০টি গাড়ি। শুধু বাড়ি কিনতেই খরচ হয়েছে প্রায় ১১ মিলিয়ন ইউরো, যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জর্জিনা রদ্রিগেজের পছন্দ অনুযায়ী ব্যয়বহুল সংস্কার।
স্বপ্নের গাড়ির গ্যারেজ
রোনালদোকে যদি একটি জিনিস আলাদা করে চিহ্নিত করে, সেটি তার ‘ড্রিম গ্যারেজ’। বুগাত্তি সেন্টোডিয়েচি, ভেইরন ও শিরন; রোলস-রয়েস কুলিনান; দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য বেন্টলি ফ্লাইং স্পার— সবই আছে সেখানে। সঙ্গে ইতালীয় শিল্পকর্মের মতো গাড়ি— ফেরারি এফ১২ টিডিএফ, লাফেরারি, মনজা এসপি১ এবং একাধিক ল্যাম্বরগিনি। এই সংগ্রহকে অনেকেই চলমান গাড়ির জাদুঘর বলে থাকেন।
ঘড়ি থেকে ব্যবসা: সবখানেই সিআর সেভেন
এই বিলাসী জগতে যোগ হয়েছে কোটি টাকার ঘড়ির সংগ্রহ— ফ্রাঁক মুলার, রোলেক্স ডেটোনা কিংবা জিএমটি মাস্টার ‘আইস’। পাশাপাশি থেমে নেই তার ব্যবসায়িক বিনিয়োগও। ‘টাটেল’ ও ‘জেলা’সহ একাধিক অভিজাত রেস্তোরাঁয় রয়েছে রোনালদোর অংশীদারিত্ব।
ফুটবলের সাফল্যকে যিনি রূপান্তর করেছেন এক বৈশ্বিক লাইফস্টাইলে—ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো তারই নাম। মাঠে হোক কিংবা মাঠের বাইরে, বিলাস আর সাফল্যের সংজ্ঞা বদলে দিতেই যেন জন্ম তার।
আইএইচএস/