ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

বঙ্গবন্ধুতে ভরা গ্যালারির সামনে খেলতে চান জামাল ভূইঁয়া

রফিকুল ইসলাম | প্রকাশিত: ০১:২৪ পিএম, ১০ জুন ২০২০

কলকাতার সল্টলেকে অর্ধ লক্ষাধিক দর্শকের সামনে গত বছর ভারতের বিপক্ষে খেলা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি অনেক দিন মনে থাকবে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার। এত দর্শকের সামনে খেলতে নাকি দারুণ লাগছিল তার। যদি ওই দর্শক হতো তাদেরই সমর্থক? তাহলে তো আরো দারুণ লাগতো তার।

১২ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে তেমন একটি সুযোগের অপেক্ষায় বাংলাদেশ অধিনায়ক। শত শত লাল-সবুজ পতাকা উড়বে গ্যালারিতে। 'বাংলাদেশ-বাংলাদেশ' চিৎকার গ্যালারি থেকে আছড়ে পড়বে তাদের কানে। প্রচন্ড চাপে পড়বে সুনীল ছেত্রীরা। ভারত ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী যেমন গত বছর তেরঙ্গা পতাকা হাতের দর্শকদের গলা ফাটানি দিয়ে কাবু করতে চেয়েছিলেন জামালদের। কিন্তু উল্টো তারাই ছিলেন চাপে।

একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, অক্টোবর-নভেম্বরে বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইয়ের বাকি ম্যাচগুলো দর্শকশূন্য গ্যালারিতে হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে। স্বয়ং বাংলাদেশ কোচ জেমি ডেও দেখছেন খালি গ্যালারির সামনে ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু এ সম্ভাবনার খবরটায় মন খারাপ জামাল ভূঁইয়ার। মঙ্গলবার রাতে জার্মানি থেকে জাগো নিউজের সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পরের চার ম্যাচ নিয়ে আলোচনাকালে দর্শকশূন্য গ্যালারির প্রসঙ্গ উঠতেই জামালের প্রশ্ন, ‘এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে নাকি?’

সিদ্ধান্ত হয়নি। হতে পারে। করোনা ভাইরাস পুরোপুরি কেটে না গেলে গ্যালারিতে দর্শক প্রবেশের ঝুঁকিটা নাও নিতে পারে ফিফা-এএফসি। ‘জানি না। সিদ্ধান্ত কি হবে। কিন্তু দর্শক ছাড়া ফুটবল জমে নাকি? ক্লোজডোর ফুটবল খেলে কোনো মজা নেই। গ্যালারিভর্তি দর্শকের সামনে ফুটবল খেলতে মজাই আলাদা। কলকাতায় আমি দারুণ মজা পেয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেও ভারতের বিরুদ্ধে ভরা গ্যালারির সামনে খেলতে চাই’-জার্মানি থেকে বলছিলেন জামাল ভূঁইয়া।

জামাল ডেনমার্ক প্রবাসী হলেও নববধূ থাকেন জার্মানিতে। এখন লকডাউনকালে পুরোপুরি জামাই আদরটা নিতে পারছেন। জার্মানির পরিস্থিতি কেমন? বলতেই জামাল ভূঁইয়ার কথা, ‘ওয়েট, তোমাকে ভিডিও কল দিচ্ছি।’ এর পর ঘরের জানালা দিয়ে আশপাশের পরিবেশটা দেখালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। জানালেন-ওখানকার অবস্থা বেশ ভালো।

অনিশ্চিত ফুটবলের মধ্যে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের বাকি ম্যাচগুলোর সিডিউল দিয়েছে ফিফা-এএফসি। কোচ জেমি ডে যেটাকে উল্লেখ করেছেন সবচেয়ে বড় ও খুশির খবর হিসেবে। জামাল ভূঁইয়াও তাই।

তিনি বলেন, ‘ফুটবল মাঠে ফিরছে, এর চেয়ে ভালো খবর আর কি হতে পারে? তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, অক্টোবর-নভেম্বরে ম্যাচগুলো না দিয়ে নভেম্বর-ডিসেম্বরে দিলে ভালো হতো। আশা করছি, পরিস্থিতি তখন অনেক উন্নতি হয়ে যেতো।’

চারটি ম্যাচ শেষ। চারটি বাকি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্জন মাত্র ১ পয়েন্ট। বাকি ৪ ম্যাচে কি লক্ষ্য বাংলাদেশ অধিনায়কের? ‘লক্ষ্যটা তো সব সময় পজিটিভই থাকে। সেটাই থাকা উচিত। বাস্তবতা হলো সম্ভাবনা এবং দক্ষতা। আমাদের যে চারটি ম্যাচ আছে তার মধ্যে নিজেদের মাঠে খেলবো আফগানিস্তান, ভারত ও ওমানের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে আফগানিস্তান ও ভারতের বিরুদ্ধে কিন্তু আমাদের জয়ের চান্স আছে। তাই পরের চার ম্যাচ থেকে অন্তত ৪ পয়েন্ট আমরা পাওয়ার চেষ্টা করবো। তা হলে ৫ পয়েন্ট নিয়ে আমরা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের মিশনটা শেষ করতে পারবো’-বলছিলেন জামাল ভূঁইয়া।

কিন্তু আফগানিস্তান ও ভারতের বিরুদ্ধে জয়ের প্রত্যাশার কারণ কি? ওরা তো আমাদের চেয়ে ভালো দল। র‌্যাংকিংয়েও এগিয়ে। তাহলে?

জামাল বললেন, ‘আমরা যদি ওদের বিরুদ্ধে খেলা আগের দুই ম্যাচের দিকে তাকাই তাহলে কি দেখবো? সেখানে র‌্যাংকিংয়ের কোনো প্রভাব ছিল না। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা অনেক সুযোগ নষ্ট করে একটি গোল খেয়ে বসেছি। ভারতের বিরুদ্ধে এগিয়ে গেলাম, অনেক সুযোগও মিস হয়েছে আমাদের। দুটি ম্যাচই তো আমরা ভালো খেলেছি। তাই জয়ের আশা কেন করবো না?’

ম্যাচের সিডিউল ঘোষণা হলো। বাকি চার মাস। আপনারা নেই খেলার মধ্যে। এ অবস্থায় প্রস্তুতির জন্য কত দিন ভালো মনে করেন আপনি?

‘ম্যাচের আগে ১ মাস ১০ দিনের মতো ক্যাম্প করলেই হবে। তবে ক্যাম্প ভালো হতে হবে। বিদেশে হলে তো আরো ভালো। আমরা এর আগে বেশ কয়েকটি দেশে অনুশীলন ক্যাম্প করেছি। এর মধ্যে আমাদের জন্য পারফেক্ট মনে হয়েছে কাতার ও থাইল্যান্ডকে। এ দুটি দেশের একটিতে অনুশীলন ক্যাম্প করতে পারলে অনেক ভালো হবে। কারণ, জাতীয় দলের ক্যাম্পের সুযোগ-সুবিধা হতে হবে সর্বোচ্চ। তা না হলে সেভাবে উন্নতি হবে না’-বলেন জামাল ভূঁইয়া।

আরআই/এমএমআর/পিআর