ফুটবলকন্যা আনাই মগিনির বাড়িতে জেলা প্রশাসক
সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক আনাই মগিনির বাড়িতে গেলেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। এ সময় মগিনির পরিবারের সুখ-দুঃখের গল্প শুনেন তিনি। জানতে চান তাদের সমস্যার কথাও।
ভারতের বিরুদ্ধে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের সাতদিনের মাথায় বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে ফুটবলকন্যা, দুই বোন আনাই মগিনি এবং আনুচিং মগিনির বাড়ি সাত ভাইয়া পাড়া এলাকায় যান জেলা প্রশাসক।
বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে দুই জমজ বোন ফুটবলারের বাড়িতে গেলে দুই ফুটবল কন্যার মা-বাবা জেলা প্রশাসককে স্বাগত জানান। এ সময় তাদের পরিবারের সুপেয় পানির জন্য একটি নলকুপ ও বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য পিলার স্থাপনের প্রতিশ্রুতি নেন জেলা প্রশাসক।
দুই ফুটবল কন্যা আনাই মগিনি ও আনুচিং মগিনির জন্য পোস্ট অফিসে চার লাখ টাকার এফডিআর করে দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস।

এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কংকন চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা, অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ধুমকেতু চাকমা, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বাশরী মারমা প্রমুখ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন।
ফুটবলকন্যা আনাই মগিনি ও আনুচিং মগিনি খাগড়াছড়ির গর্ব উল্লেখ করে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘তারা যেভাবে ফুটবল নৈপুণ্যের মাধ্যমে সারাদেশে মানুষের কাছে খাগড়াছড়ির মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে সেভাবেই আমাদেরও উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। সব সংগঠন ও বিত্তবানদের উচিত তাদের প্রতি আলাদা নজর রাখা। তাহলে এরাই আমাদের জেলার মান বৃদ্ধি করতে পারবে বিশ্ববাসীর কাছে।’
এ সময় তাদের বাড়িতে যাওয়ার যে বাঁশের সাঁকো রয়েছে সেখানে একটি পাকা কালভার্ট নির্মাণের জন্য খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বলেছেন।
জেলা প্রশাসকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফুটবল কন্যা আনুচিং মগিনি বলেন, ‘আমরা দুই বোন বাংলাদেশ দলে খেলি। খেলতে গিয়ে আমরা চেষ্টা করি খাগড়াছড়ির মান ধরে রাখতে। যাতে আমাদের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ খাগড়াছড়ি জেলাকে মনে রাখে।’

আর্থিক সংকটের কারণে সবকিছু করা সম্ভব হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাদের জন্য যে সঞ্চয়পত্র করে দিচ্ছেন তাতে আমাদের অনেক উপকার হবে। লভ্যাংশের টাকা দিয়ে আমাদের অনেক কিছু করা সম্ভব হবে। আমরা জেলা প্রশাসকের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে এতো কষ্ট করে জেলা প্রশাসক আমাদের বাড়িতে আসবেন তা আমাদের কল্পনাও ছিল না’- বললেন আনুচিং মগিনি।
প্রসঙ্গত গত ২২ ডিসেম্বর বুধবার কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামলা স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে খেলার শেষ দিকেও যখন কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মিলছিল না, ঠিক তখন শাহেদা আক্তার রিপার ব্যাকহিল থেকে বল ধরেই দূল্লার শট করে ৭৯ মিনিটে লাল সবুজের বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন খাগড়াছড়ির মেয়ে আনাই মগিনি।
মুহূর্তের মধ্যেই বল কাঁপিয়ে দেয় ভারতের জাল। এক গোলই শেষ পর্যন্ত শিরোপা নির্ধারণ করে দেয়। এরপরই উৎসবে মাতে বাংলাদেশ।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/আইএইচএস