যশোরবাসীর ভালবাসায় আপ্লুত স্বর্ণজয়ী মাহফুজা
সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে স্বর্ণজয়ী মাহফুজা আক্তার শিলাকে ফুলেল শুভেচ্ছা আর হৃদয় ছোঁয়া ভালবাসায় বরণ করে নিয়েছে যশোরবাসী। গেমস শেষে ঢাকায় ফেরার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ জেলা যশোরের মাটিতে পা রাখেন তিনি। নিজ এলাকার মানুষের ভালবাসার জবাবে আপ্লুত মাহফুজা আক্তার শিলা বলেন, ‘যশোরবাসী আমাকে এত ভালোবাসে, বাস থেকে নেমে এত সারপ্রাইজ পাব, আমি ভাবতেও পারিনি।’ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে যশোর সার্কিট হাউজে এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এসএ গেমসে জোড়া সোনাজয়ী জলকন্যা মাহফুজা আক্তার শিলা।
এর আগে বৃহস্পতিবার সোয়া একটার দিকে যশোর শহরের নিউমার্কেট বাসস্ট্যান্ডে এসে পৌঁছানো শিলা। এ সময় সেখানে উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্য তিনি হাত নেড়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাবিনা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) পারভেজ হাসান, জেলা প্রশাসকের স্ত্রী জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি রুনা লায়লাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে যশোরবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান।
এদিকে, স্বর্ণজয়ী মাহফুজা আক্তার শিলার যশোর আসার খবরে সেখানে আগে থেকে উৎসুক জনতা ভিড় করে। মেয়েকে দেখার জন্য আগে থেকে সেখানে উপস্থিত ছিলেন পিতা জেলার অভয়নগরের বাসিন্দা আলী আহম্মদ গাজী ও মাতা করিমন নেছা। দেশের জন্য গর্ব বনে আনা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে তারা আবেগে আপ্লুত হন। সেখানে উপস্থিত জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাহফুজার গর্বিত পিতা-মাতাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এরপর মাহফুজা ও তার পিতা-মাতাকে সাথে নিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সার্কিট হাউজে যান। সেখানে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভানেত্রী রুনা লায়লা স্বর্ণকন্যা শিলা এবং তার মা করিমন নেছা ও বাবা আলী আহম্মদ গাজীকে মিষ্টিমুখ করান।
সেখানে অভিব্যক্তি ব্যক্ত করতে গিয়ে মাহফুজা বলেন, আমি স্বপ্নেও ভাবিনি; যশোরের মেয়ে হিসেবে এমন সম্মান বয়ে আনতে পারবো। আমি এখন শুধু যশোরের মেয়ে নই, সারা দেশের। এ সময় তিনি ভবিষ্যতে আরও ভাল খেলার জন্য দোয়া কামনা করেন।
আর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে শিলা আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার পুরো দায়িত্বভার নিয়েছেন, এর চেয়ে ভালো খবর আর কী হতে পারে? আমি আগেও জাতীয় পদক জিতে যশোরে এসেছি; কিন্তু এবার এসে আমি মুগ্ধ। আমি এখন অপেক্ষা করছি আমার নিজের উপজেলা অভয়নগরের আনন্দ উপভোগের।’
এ সময় জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শিলা এখন আর শুধু যশোরের না, গোটা দেশের মেয়ে। তাকে দেখে যেন সারা বাংলার মেয়েরা উৎসাহিত হয়।’ তিনি বলেন, ‘শিলারা যে বাড়িতে থাকেন, সেটা নতুন করে তৈরি করে দেয়া হবে। ইতিমধ্যে তাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। ৫ম শ্রেণিতে তার যে ছোটবোন পড়ে, তার দায়িত্ব আমরা নিচ্ছি। তাদের পরিবারের স্বচ্ছলতা আনার জন্য যা যা করার তার সবই আমরা করব।’
সার্কিট হাউজে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শিলা তার গ্রামের বাড়ি অভয়নগরের নওয়াপাড়ার উপশহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। শুক্রবার তাকে নওয়াপাড়া শংকরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।
আইএইচএস/পিআর