রবি পেসার হান্ট : সেরা পেসার এবাদত হোসেন
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপ থেকেই বাংলাদেশের পেসারর দুর্দান্ত বোলিং করে যাচ্ছেন। তাদের বোলিং নৈপুণ্য এতটাই যে, এখন বাংলাদেশের পেসাররা রীতিমত আতঙ্কে পরিণত হয়েছেন বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের। যে কারণে, পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনুস, ওয়াসিম আকরাম থেকে শুরু করে কিংবদন্তী পেসাররা বলতে বাধ্য হচ্ছে, ‘বাংলাদেশ একঝাঁক পেস বোলার পেয়ে গেছে। ফলে তাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ যে উজ্জ্বল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।’
পেস বোলিংয়র সে ধারা ধরে রাখতে রবি সুপার ফাস্ট ইন্টারনেটের সৌজন্যে দেশব্যাপি রবি ফাস্ট বোলার হান্ট ক্যাম্পেইন চালু করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। রোববার এই ক্যাম্পেইনের ছিল শেষ দিন। সারা দেশ থেকে বাছাই করা পেসারদের মধ্য থেকে সেরা পেসার হিসেবে বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছে মৌলভীবাজারের ছেলে এবাদত হোসেন।
আজ (রোববার) মিরপুরের একাডেমী মাঠে পেস বোলার হান্টের চূড়ান্ত নির্বাচনের প্রক্রিয়া শেষ করা হয়। কোচ সারওয়ার ইমরানের অধীনে প্রথমে বলের গতি, সুইং ও ধারাবাহিকভাবে গুড লেন্থে বোলিং করা বোলার বের করা হয়। সেরা ১০ জন ফাস্ট বোলারের নাম ঘোষণার মাধ্যমে শেষ হয় ক্যাম্পেইনটি। এই সেরা ১০ জন হলেন- এবাদত হোসেন, ইমরান আলী, নূর আলম সাদ্দাম, আরাফাত মিশু, এস খালিদ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, রাহি হোসেন প্রান্ত, শেখ নাজমুল হোসেন, মুজিবুর রহমান ও সুলতান হোসেন। এদের প্রত্যেককেই রবির সৌজন্যে ৫০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
পেসার হান্টের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্য এবাদত হোসেন ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার গতিতে বল করেন। তবে আগের রাউন্ডে তিনি প্রতি ঘণ্টায় ১৩৯ কিলোমিটার গতিতে বল করেছিলেন। সেরা পেসার ছাড়াও এদিন সেরা সুইং বোলার ও সেরা ধারাবাহিক বোলার নির্বাচিত করা হয়। সিলেটের ছেলে সুলতান হোসেন সেরা সুইং বোলার ও কক্সবাজারের ছেলে মুজিবুর রহমান সেরা ধারাবাহিক বোলার নির্বাচিত হন। এদের তিনজনকেই রবির সৌজন্যে ৩০ হাজার টাকা ও একটি করে ট্রফি দেওয়া হয়।
ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও সেরা পেসার নির্বাচন করা হয়। গোপালগঞ্জের মেয়ে পূজা চক্রবর্তী প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতে বেগে বল করে সেরা পেসার নির্বাচিত হন। এছাড়াও তাদের সঙ্গে আরও দু’জনকে সেরা তালিকায় রাখা হয়। এরা হলেন সুবহানা মুস্তারি ও রুপা রায়। এদের প্রত্যেককে রবির সৌজন্যে ৩০ হাজার টাকা করে, সঙ্গে ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
এছাড়াও দুই জন শারীরিক প্রতিবন্ধীকেও এ ক্যাম্পেইনের আওতায় আনা হয়। এ দু’জন হলেন মোহাম্মদ মনির হোসেন ও গোলাম রাব্বানি। এদের প্রত্যেককে রবির সৌজন্যে ২০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
অনুস্থানের শেষে বিজয়ীদের মাঝে ট্রফি, ক্রেস্ট ও অর্থ পুরস্কার প্রদান বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম, রবি’র চিফ অপারেটিং অফিসার মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী কমকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন, বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, কোচ সারওয়ার ইমরান ও জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেন।
উল্লেখ্য, ফাস্ট বোলার হান্ট ক্যাম্পেইনে সারা দেশ থেকে মোট ১৪ হাজার ৬১১ জন ফাস্ট বোলার প্রতিয়োগিতায় অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে ৮৬ জন ফাস্ট বোলারকে বাছাই করা হয়। এরপরের ধাপে ৫৬ জনকে শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে ডাকা হয়। এরপর আরেক দফা বাছাইয়ের ২৩ জনকে নিয়ে আজ (রোববার) চূড়ান্ত বাছাই প্রক্রিয়ার আয়োজন করা হয়। সেখান থেকে আজ শেষ দিনে ১০ জনকে আজ চূড়ান্ত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এই ১০ জনকে নিয়ে আসা হবে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটে এবং দেয়া হবে উচ্চতর প্রশিক্ষণ।
আরটি/আইএইচএস/পিআর