ভিডিও EN
  1. Home/
  2. তথ্যপ্রযুক্তি

হাতের ফোনই যখন সবচেয়ে আপন

মামুনূর রহমান হৃদয় | প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২৫

সকালের ঘুম ভাঙতেই চোখে পড়ে ক্ষুদেবার্তার নোটিফিকেশন, ইনস্টাগ্রামের স্টোরি কিংবা ফেসবুকের নতুন পোস্ট। বাস, ট্রেন, ক্লাসরুম এমনকি খাবার টেবিলেও এখন হাতের ফোনটাই সবচেয়ে আপন। পর্দার ঝলমলে আলো আমাদের মনকে যতটা আনন্দ দেয়, ঠিক ততটাই নিঃশব্দে কেড়ে নিচ্ছে প্রশান্তি।

প্রযুক্তির এই অতিনির্ভরতা দিনে দিনে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে নীরবে বিপর্যস্ত করে তুলছে। কাজের চাপ, সামাজিক প্রত্যাশা আর সোশ্যাল মিডিয়ার কৃত্রিম জীবন আমাদের এক অনির্বচনীয় মানসিক প্রতিযোগিতায় ফেলে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ৮ জনের মধ্যে ১ জন মানুষ মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন, যার একটি বড় অংশ তরুণ প্রজন্ম। ২০১৯ সালে জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, দিনে ৭ ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন ব্যবহারের সঙ্গে বিষণ্ণতা ও উদ্বেগের ঝুঁকি দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

টরন্টো ইউনিভার্সিটির ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট ড. লরা ম্যাকনাইট বলছেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাত্রা যখন পারসোনাল টাইম, ঘুম, সম্পর্ক কিংবা নিজের প্রতি যত্নে বাধা হয়ে দাঁড়ায়; তখন সেটিই হয়ে যায় মানসিক চাপের মূল উৎস।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই হাসছে, ঘুরছে, খাচ্ছে কিন্তু স্ক্রল করতে করতে মনে হয়, আমার জীবনটাই বুঝি ফাঁকা। এই ‘কম্প্যারেটিভ লাইফস্টাইল’ তরুণদের মধ্যে হীনম্মন্যতা, একাকিত্ব, এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতাও বাড়িয়ে তুলছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল।

একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, দিনে ৩ ঘণ্টার বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী কিশোর-কিশোরীর মধ্যে মানসিক চাপের ঝুঁকি শতকরা ৬০ ভাগ বেশি। তবে প্রযুক্তি যেমন ক্ষতিকর হতে পারে; তেমনই সঠিক ব্যবহারে এটি হয়ে উঠতে পারে মানসিক শান্তির উপায়ও। বিভিন্ন মেডিটেশন অ্যাপ যেমন- হেডস্পেস, কাম, ইনসাইট টাইমার, মেডিটো ইত্যাদি মানসিক প্রশান্তিতে দারুণভাবে সহায়তা করে। পাশাপাশি অনলাইন থেরাপি, কাউন্সেলিং, সাপোর্ট গ্রুপের মাধ্যমে অনেকেই পেয়েছেন মানসিক সহায়তা।

বিজ্ঞাপন

প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন অন্তত ১ ঘণ্টা ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ করুন। ঘুমাতে যাওয়ার ১ ঘণ্টা আগে ফোন ব্যবহার বন্ধ করুন। স্ক্রিন টাইম মনিটর করুন। নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার সীমিত করুন। পরিবারের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সময় গ্যাজেট দূরে রাখুন। ছুটির দিনে প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান।

প্রযুক্তি এখন আমাদের জীবনযাপনের অপরিহার্য অংশ। কিন্তু এটিকে যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করি, তবে একসময় সেটাই আমাদের জীবন, সম্পর্ক এবং মানসিক স্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে। প্রযুক্তির ব্যবহার হোক সচেতন, সংযত ও মানসিক সুস্থতাবান্ধব।

তথ্যসূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জেএএমএ পেডিয়াট্রিকস, সিডিসি ইয়ুথ রিস্ক বিহেভিয়ার সার্ভে।

বিজ্ঞাপন

এসইউ/জেআইএম

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন