ভিডিও EN
  1. Home/
  2. তথ্যপ্রযুক্তি

যেসব অ্যাপে প্রিয় রেস্তোরাঁর খাবার পাবেন ঘরে বসেই

মামুনূর রহমান হৃদয় | প্রকাশিত: ১২:৪১ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

একটা সময় ছিল, ক্ষুধা লাগলেই রেস্তোরাঁয় যেতে হতো। কখনো বন্ধুর সঙ্গে, কখনো একা। খাবারের জন্য লাইন, অপেক্ষা, ঝামেলা সবই ছিল দৈনন্দিন জীবনের অংশ। এখন সেই দিন আর নেই। প্রযুক্তি বদলে দিয়েছে খাবার পাওয়ার ধারণা। আজ মোবাইলের স্ক্রিনে কয়েকটি ট্যাপ করলেই প্রিয় রেস্টুরেন্টের খাবার চলে আসে ঘরের দরজায়। শহরের ব্যস্ত জীবনে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে এই অ্যাপগুলো এখন অনেকটা ‘ভার্চুয়াল রান্নাঘর’।

বাংলাদেশে বর্তমানে বেশ কিছু জনপ্রিয় ফুড ডেলিভারি অ্যাপ কাজ করছে, যারা গ্রাহকদের দৈনন্দিন জীবনে খাবার পাওয়াকে করেছে আরও সহজ ও দ্রুত। আজ এমন কয়েকটি অ্যাপের সন্ধান আপনাদের জানাব-

ফুডপান্ডা
প্রথমেই আসবে ফুডপান্ডার নাম। এটি দেশের সবচেয়ে বড় ও বহুল ব্যবহৃত ফুড ডেলিভারি অ্যাপ। রাজধানী থেকে শুরু করে বিভাগীয় শহর প্রায় সর্বত্র তাদের সেবা পাওয়া যায়। দেশি খাবার থেকে শুরু করে পিৎজা, বার্গার, এমনকি আইসক্রিম পর্যন্ত সবই মিলছে এই প্ল্যাটফর্মে। পাশাপাশি আছে রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং সুবিধা, যার মাধ্যমে গ্রাহক নিজের অর্ডার কোথায় আছে তা জানতে পারেন।

পাঠাও ফুড
এরপর আসে পাঠাও ফুড। দেশীয় স্টার্টআপ সাফল্যের এক অনন্য উদাহরণ। রাইড শেয়ারিংয়ের পাশাপাশি তারা খাবার সরবরাহেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বিশেষ করে ঢাকার স্থানীয় ছোট রেস্টুরেন্টগুলোকে যুক্ত করে পাঠাও ফুড তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি করেছে। ডেলিভারির গতি, অফার এবং সহজ পেমেন্ট অপশন একে তরুণ প্রজন্মের কাছে প্রিয় করেছে।

ফুডি
সম্প্রতি বাংলাদেশে দ্রুত প্রসার লাভ করা ফুডি একটি তুলনামূলক নতুন অনলাইন ফুড ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম। এটি ইউএস বাংলা গ্রুপের এক সংস্থা হিসেবে ২০২৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। ফুডি দেশের বিভিন্ন শহরে হাজারেরও বেশি রেস্টুরেন্টকে সংযুক্ত করে দ্রুত ফুড ও গ্রোসারি ডেলিভারি দেয়। অ্যাপের মাধ্যমে অর্ডার, রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং এবং একাধিক পেমেন্ট অপশন পাওয়া যায়। তারা খাদ্য অপচয় কমাতে ‘ফুড রেসকিউ’ ধরনের উদ্যোগও চালু করেছে।এমনকি কর্পোরেট ব্যাকিং ও স্থানীয় হোটেল-রেস্টুরেন্টদের সঙ্গে অংশিদারিত্ব বাড়িয়ে ডিজিটাল ফুড ইকোসিস্টেম গড়ার চেষ্টা করছে।

কুকস‌আপ
কুকস‌আপ একটু ভিন্ন ধরনের সেবা দেয়। এটি ঘরে রান্না করা খাবার ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেয়। যারা বাড়িতে রান্না করেন, সেইসব হোমশেফ বা গৃহিণীরা এখান থেকে আয় করার সুযোগ পান। ফলে একদিকে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে ক্রেতারা পাচ্ছেন ঘরোয়া স্বাস্থ্যকর খাবারের বিকল্প।

খাছ ফুড
এছাড়াও খাছ ফুড আছে যা একটু আলাদা প্রকৃতির। এটি অনলাইন ভিত্তিক ফুড মার্কেট। যেখানে ভেজালমুক্ত পণ্য, চাল, ডাল, মধু, ঘি, ফলমূলসহ স্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য বিক্রি করা হয়। শহুরে ব্যস্ত জীবনে যারা নিরাপদ খাবার খোঁজেন, তাদের জন্য এটি এক নির্ভরযোগ্য সমাধান।

এইসব অ্যাপ একদিকে যেমন সময় বাঁচাচ্ছে, অন্যদিকে খাদ্য শিল্পে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে। হাজারো ডেলিভারি ম্যান, হোটেল-রেস্টুরেন্ট কর্মী এবং অ্যাপ ডেভেলপার সবাই মিলে একটি ডিজিটাল ইকোসিস্টেম গড়ে তুলছে, যা বাংলাদেশের নগর জীবনের অংশ হয়ে গেছে।

খাবারে সমস্যা হলে দায় কার?
সবকিছুর মাঝেই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন থেকে যায়। খাবারে সমস্যা হলে দায় কার? যদি খাবারটি মানহীন, নষ্ট বা অস্বাস্থ্যকর হয়, তবে এর সম্পূর্ণ দায় রেস্টুরেন্টের, কারণ রান্না ও প্যাকেজিংয়ের দায়িত্ব তাদেরই। কিন্তু খাবার দেরিতে পৌঁছালে, ভুল অর্ডার এলে বা ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় হাতে এলে দায়ভার পড়ে ডেলিভারি কোম্পানির ওপর। বর্তমানে ফুডপান্ডা, পাঠাও ফুড, ফুডি এই অ্যাপগুলো তাৎক্ষণিক কাস্টমার সাপোর্ট, রিফান্ড এবং বিকল্প খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা রেখেছে। যদিও সব অভিযোগে সমাধান মেলে না, তবু গ্রাহক-রেস্টুরেন্ট-ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমেই এই সেবাগুলো আরও উন্নত ও নির্ভরযোগ্য হচ্ছে।

আজ ১৬ অক্টোবর, বিশ্ব খাদ্য দিবস। সব মিলিয়ে, আজকের দিবসে বলা যায়, প্রযুক্তি এখন শুধু তথ্য বা বিনোদনের মাধ্যম নয়, আমাদের পেটেরও সঙ্গী। ক্ষুধা লাগলেই রাস্তায় নামতে হয় না, ফুড অ্যাপে এক ক্লিকেই ঘরে চলে আসে সুস্বাদু ভোজন।

আরও পড়ুন
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ফোন, ওজন মাত্র ১৩ গ্রাম
‘ফোকাস মোড’ আপনার মনোযোগ ধরে রাখার ডিজিটাল সহায়ক

তথ্যসূত্র: ফুডপান্ডা, পাঠাও ফুড, ফুডি, কুকস‌আপ, খাছফুড।

কেএসকে/এএসএম

আরও পড়ুন