ফোন ও ল্যাপটপ রিস্টার্ট করা কেন জরুরি
নির্দিষ্ট সময় পর পর ফোন ও ল্যাপটপ রিস্টার্ট করা জরুরি
প্রতিদিন আমরা ফোন ও ল্যাপটপে অসংখ্য কাজ করি সোশ্যাল মিডিয়া, অফিসের কাজ, গেমিং, অনলাইন ক্লাস বা ভিডিও দেখাসহ নানা কিছু। দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করতে করতে ডিভাইসগুলো ধীরে ধীরে অতিরিক্ত লোডের শিকার হয়। অনেকেই ফোন বা ল্যাপটপ একটানা দিন-দুয়েক ব্যবহার করেন, কিন্তু রিস্টার্ট করেন না। অথচ নিয়মিত রিস্টার্ট করা ডিভাইসের পারফরম্যান্স, নিরাপত্তা এবং স্থায়িত্ব বজায় রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিচে কেন ফোন ও ল্যাপটপ রিস্টার্ট করা প্রয়োজন তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো।
১) র্যাম পরিষ্কার করে ডিভাইস দ্রুত করে
ফোন বা ল্যাপটপে প্রতিবার কোনো অ্যাপ খোলা হলে তা কিছু অস্থায়ী ডাটা র্যামে জমা রাখে। একটানা ব্যবহার করলে সেই ডাটাগুলো জমতে জমতে র্যাম ভারী হয়ে যায়। ফলে ডিভাইস ধীর হয়ে যায়, অ্যাপ খুলতে সময় নেয় এবং মাঝে মাঝে ফ্রিজ বা হ্যাংয়ের মতো সমস্যাও দেখা দেয়। রিস্টার্ট করলে পুরো র্যাম রিফ্রেশ হয়ে যায় এবং ডিভাইস আবার নতুনের মতো দ্রুত কাজ করতে শুরু করে।
২) ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ ও লুকানো প্রসেস বন্ধ হয়
অনেক অ্যাপ সরাসরি বন্ধ করলেও ব্যাকগ্রাউন্ডে থেকে যায়। এগুলো নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে, ব্যাটারি খরচ করে এবং ডিভাইসের প্রসেসরের ওপর চাপ বাড়ায়। দীর্ঘক্ষণ এভাবে চলতে থাকলে ডিভাইস গরম হতে শুরু করে ও পারফরম্যান্স কমে যায়। রিস্টার্ট করলে এসব লুকানো প্রসেস সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ডিভাইস আবার হালকা ও স্মুথ হয়ে ওঠে।
৩) ছোটখাটো বাগ ও গ্লিচ দূর হয়
হঠাৎ ওয়াই-ফাই কানেক্ট না হওয়া, ব্লুটুথ কাজ না করা, স্ক্রিন টাচে সমস্যা, অ্যাপ ক্র্যাশ হওয়া এসব সাধারণ সমস্যার কারণ থাকে সফটওয়্যারের ক্ষুদ্র বাগ। রিস্টার্ট একধরনের সিস্টেম রিফ্রেশ যা এসব ছোট বাগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঠিক করে। ফলে ডিভাইস আগের তুলনায় স্থিতিশীলভাবে কাজ করে।
৪) সিকিউরিটি আপডেট ও সিস্টেম প্যাচ কার্যকর হয়
নতুন সিকিউরিটি আপডেট বা সিস্টেম প্যাচ ডাউনলোড হলেও সেগুলো ডিভাইস রিস্টার্ট না করলে পুরোপুরি সক্রিয় হয় না। এতে নিরাপত্তা দুর্বল হয়ে যায় এবং সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। নিয়মিত রিস্টার্ট করলে আপডেটগুলো ঠিকভাবে কার্যকর হয় এবং ডিভাইস সুরক্ষিত থাকে।
৫) ক্যাশে পরিষ্কার হয়ে স্টোরেজ হালকা লাগে
অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে করতে প্রচুর ক্যাশে জমা হয়, যা সিস্টেমকে ধীর করে দেয়। রিস্টার্টের ফলে অনেক অস্থায়ী ক্যাশ নিজে থেকেই মুছে যায়। ফলে ফোন বা ল্যাপটপ কিছুটা হালকা হয় এবং স্টোরেজ ব্যবহারে স্বস্তি আসে।
৬) প্রসেসরকে রিফ্রেশ করে
ডিভাইস একটানা চালু থাকলে প্রসেসর সবসময় কাজ করে, যা তাকে অতিরিক্ত গরম করে এবং শক্তি খরচ বাড়ায়। এতে ব্যাটারি দ্রুত নষ্ট হয় এবং প্রসেসরের আয়ু কমতে থাকে। একটি রিস্টার্ট প্রসেসরকে বিরতি দেয়, তাপমাত্রা ঠিক রাখে এবং ডিভাইসকে দীর্ঘস্থায়ী করে।
৭) নেটওয়ার্ক সমস্যা সমাধান করে
মোবাইল ডেটা ধীর হয়ে যাওয়া, ওয়াই-ফাই সিগন্যাল দুর্বল হওয়া বা কানেকশন ড্রপের মতো সমস্যার মূল কারণ হয় সাময়িক নেটওয়ার্ক গ্লিচ। রিস্টার্ট নেটওয়ার্ক সেটিংস রিফ্রেশ করে এবং ফোন বা ল্যাপটপকে আবার স্থিতিশীল নেটওয়ার্কে ফিরিয়ে আনে।
৮) অ্যাপ ক্র্যাশ বা ফ্রিজ হওয়া কমায়
কিছু অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে আটকে থাকে অথবা সিস্টেমের সঙ্গে সংঘর্ষ তৈরি করে, তখন অ্যাপ বারবার ক্র্যাশ করতে থাকে। রিস্টার্ট করলে সেসব আটকে থাকা প্রসেস মুছে যায়। ফলে অ্যাপগুলো নতুনভাবে লোড হয়ে ঠিকভাবে কাজ করতে পারে।
৯) ডিভাইসের আয়ু বাড়ায়
নিয়মিত রিস্টার্ট করার মাধ্যমে প্রসেসরের চাপ কমে, মেমোরি পরিষ্কার হয়, ব্যাটারি হিটিং কমে এবং সফটওয়্যার ফাইলগুলো সঠিকভাবে কাজ করে। ফলে ফোন বা ল্যাপটপ দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল থাকে এবং এর আয়ুষ্কাল প্রকৃত অর্থেই বাড়ে।
আরও পড়ুন
ফোন হ্যাক হলে বুঝবেন যেভাবে
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ফোন, ওজন মাত্র ১৩ গ্রাম
কেএসকে/জেআইএম