ভিডিও EN
  1. Home/
  2. তথ্যপ্রযুক্তি

সম্ভাবনাময় পেশা হ্যাকিং

মোশারফ হোসাইন | প্রকাশিত: ১২:৪৫ পিএম, ০৪ জুলাই ২০২৩

হ্যাকিংকে আমরা খারাপ দৃষ্টিতে দেখি, কিন্তু এটি ভুল ধারণা, হ্যাকিং থেকে আরেকজন হ্যাকারই রক্ষা করতে পারে। ক্রিমিনাল ধরতে হলে যেমন পুলিশকেও মাঝে মাঝে ক্রিমিনালের মতো চিন্তা করতে হয়, এই বিষয়টাও তেমনি।

যদি একটি মোবাইল ফোনে সিকিউরিটিজনিত দুর্বলতা থাকে চাইলেই একজন ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার হ্যাকিং টুলস কাজে লাগিয়ে মোবাইলটি হ্যাক করে নিতে পারে। একজন এথিক্যাল হ্যাকার কিন্তু মোবাইলের সিকিউরিটিজনিত সেই সমস্যাটা ঠিক করতে পারবে যেন অন্য কোনো হ্যাকার খারাপ উদ্দেশ্যে মোবাইলটি হ্যাক না করতে পারে। আলাপচারিতায় এমনটিই বলছিলেন, ইসি কাউন্সিলের স্বীকৃত এথিক্যাল হ্যাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের শিক্ষার্থী শীর্ষেন্দু মন্ডল।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

শীর্ষেন্দু বলেন, যখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি তখন থেকেই আমার মনে হ্যাকিং বিষয়টা নিয়ে আগ্রহ জন্মায়। সে সময় গেমস খেলতাম প্রচুর এবং গেমসের সিডি কিনতাম অনেক। সেই সিডি আনার পর গেম ইন্সটল করতে লাইসেন্স কী প্রয়োজন হতো গেম খেলার জন্য। সিডিগুলোতে এক ধরনের ক্র্যাক ফাইল পাওয়া যেতো যেটা দিয়ে লাইসেন্স না কিনেই গেমটা খেলা যেত। তখন থেকেই মনে বেশ আগ্রহ জন্মালো যে এই বিষয়গুলো কীভাবে কাজ করে? কীভাবে টাকা ছাড়াই গেমটা খেলা সম্ভব, ইত্যাদি।

এরপর একটা যুগ আসলো ফেসবুকের! আশপাশে দেখলাম সবার ফেসবুক আইডি আছে, আমিও একসময় বাবা কে অনেক অনুরোধ করে ফেসবুক আইডি খুলি। ফেসবুকে তখন দেখতাম অনেকে হ্যাকিং বিষয়ক পোস্ট করতো, যাদের নাম এখানে সঙ্গত কারণেই উল্লেখ করছিনা। তাদের পোস্টগুলো আমি ফলো করতাম, এর পাশাপাশি গুগলে প্রায়ই সেইসব ব্যাপারগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি করতাম। এরপর ফেসবুকভিত্তিক বেশকিছু হ্যাকার গ্রুপের ব্যাপারে জানতে পারলাম। এভাবেই অল্প অল্প করে বেশ কিছুটা পথ এসেছি এবং আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই। বর্তমানে আমি ইসি-কাউন্সিল, ইন্টারন্যাশনাল ইনফরমেশন সিস্টেম সিকিউরিটি সার্টিফিকেশন কনসোর্টিয়াম, সিসকো, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সাইবারসিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি (সিআইএসএ) ও নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে সাইবার সিকিউরিটির ওপর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের জবাবে ইথিক্যাল হ্যাকার শীর্ষেন্দু মন্ডল বলেন, হ্যাকিং একটা সম্ভাবনাময় পেশা যদি সেটা ইথিক্যালি করা হয়ে থাকে। এটা এমন একটা গুণ, যার ভালো-মন্দ দুটি দিকই আছে। ধরুন আপনার কম্পিউটারে বা সার্ভারে কোনো একটা বাগ রয়েছে। একজন ইথিক্যাল হ্যাকার বা হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার সেই বাগের ব্যাপারটা আপনাকে জানালো এবং এর ফলে আপনি সেটি ঠিক করতে পারলেন। এতে আপনার কোনো ধরনের ক্ষতি হবার আশঙ্কা থাকলো না। এই কাজগুলোই একজন ইথিক্যাল হ্যাকার করে থাকে।

আমরা যে এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করি নিজেদের নিরাপদ রাখতে, সেগুলোও কিন্তু এসব ইথিক্যাল হ্যাকারদেরই সৃষ্টি। অনেকে বাগ বাউন্টি করে প্রতি মাসে ঘরে বসেই, কেউ বা রিমোট জব করেই অনেক টাকা আয় করছে। আমাদের দেশ ডিজিটাল হচ্ছে, সুতরাং ডিজিটাল নিরাপত্তা একটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও বটে!

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ইথিক্যাল হ্যাকার হয়ে ঘরে বসেই দেশের বাইরের অনেক কাজ করা সম্ভব। এটি একদিকে যেমন দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে সহায়তা করবে, তেমনি একটি দক্ষ সাইবার স্পেস নিশ্চিত করবে আমাদের জন্য। এখন প্রায়শই শোনা যায় যে ২টি দেশের মধ্যে সাইবার হামলা চলছে! অদূর ভবিষ্যতে যুদ্ধগুলো কিন্তু এই সাইবার স্পেইসেই হবে। সুতরাং, এই পেশার পৃষ্ঠপোষকতা এবং পর্যাপ্ত ট্রেনিং এখন থেকেই আমাদের দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

শীর্ষেন্দুর দেশে বড় একটা সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে চান। যেটা দেশের সাইবার নিরাপত্তাজনিত দিকগুলো নিয়ে কাজ করবে। ভবিষ্যতে যদি দেশে সাইবার আর্মি প্রতিষ্ঠা করা হয়, সেখানেও কাজ করার ইচ্ছা আছে শীর্ষেন্দুর।

কেএসকে/জিকেএস

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন