বর্ষায় ঘুরে আসুন চায়ের দেশের ৫ স্থান

শুরু হয়েছে বর্ষাকাল। এই ঋতুতে ভ্রমণ করার জন্য কিছু জায়গা বেশি উপযুক্ত। তাই ছায়াঘেরা চা-বাগান আর সবুজ প্রকৃতির আলিঙ্গনে হারিয়ে যেতে চাইলে এই বর্ষায় একবার ঘুরে আসুন চায়ের দেশ মৌলভীবাজার। এখানে রয়েছে এমন কিছু মনকাড়া স্থান; যেখানে প্রকৃতি কথা বলে। হিমেল বাতাস আর সবুজের ছায়ায় মিলবে অনাবিল প্রশান্তি।
হাম হাম ঝরনা
প্রকৃতির এক অপরূপ সৃষ্টি হাম হাম ঝরনা। বর্ষায় আরও জোরালো হয়ে ওঠে এ ঝরনা। রাজকান্দি রেইন ফরেস্টের গভীরে লুকিয়ে থাকা হাম হাম ঝরনা অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য এক আদর্শ গন্তব্য। হাম হাম জলপ্রপাত যেতে হলে প্রথমে মৌলভীবাজার পৌঁছাতে হবে। ব্যক্তিগত পরিবহন ব্যবহার করতে পারেন চাইলে। কিংবা কমলগঞ্জ বা শ্রীমঙ্গল থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যায়। সেখানে অনেক স্থানীয় গাইড আছেন; যারা আপনাকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারবেন। তবে এ জলপ্রপাত দেখতে কিন্তু কর্দমাক্ত পথ দিয়ে ৩-৪ ঘণ্টা ট্রেকিং করতে হবে। মানসিক প্রস্তুতি রাখবেন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
রাজকান্দি সংরক্ষিত বন
জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এ বনে হাঁটলে মন হারিয়ে যাবে সবুজ নিসর্গে। এখানে দেখা মেলে বন্যপ্রাণী, পাখি আর বিরল গাছপালার। সবুজে মোড়ানো এই সমৃদ্ধ বন ৩টি বিট নিয়ে গঠিত-আদমপুর, কুরমা ও কামারছড়া। আপনি যদি প্রকৃতিতে নির্জনতা ও প্রশান্তি খুঁজে থাকেন। তবে রাজকান্দি আপনার জন্য উপযুক্ত। সেখানে অনেক কাছ থেকে বন্যপ্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। আর স্থানটি পাখিদের কলতানে মুখরিত থাকে সব সময়। রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টে যাওয়ার সময় সঙ্গে ট্যুরিস্ট গাইড নিয়ে যাওয়া ভালো। এ মায়াময় বনে যেতে খুব একটা ঝক্কি পোহাতে হয় না। নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করেও যাওয়া যেতে পারে আবার গণপরিবহনের ব্যবস্থাও রয়েছে। ব্যক্তিগত পরিবহনে গেলে কমলগঞ্জ উপজেলায় যেতে হবে। সেখান থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূর এগোলেই বন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
পরিকুণ্ড ঝরনা
মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের কথা আমরা সবাই শুনেছি। কিন্তু এর কয়েকশ মিটার দূরে মৌলভীবাজারের আরেকটি রত্ন লুকিয়ে আছে। এটিই পরিকুণ্ড ঝরনা। বর্ষাকালে এর শান্ত জল ও নির্মল পরিবেশ পর্যটকদের মন জুড়িয়ে দেয়। এটি মূলত মৌসুমী ঝরনা হওয়ার কারণে এর সৌন্দর্য শুধু বর্ষাকালেই উপভোগ করা যায়। পরিকুণ্ড ঝরনা পরিকুণ্ড ইকোপার্কের ভেতর অবস্থিত। এটি মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত থেকে খুব বেশি দূরেও নয়। মৌলভীবাজারে পৌঁছানোর পর বড়লেখা উপজেলা থেকে অটোরিকশা নিয়ে সরাসরি মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক যাওয়া যাবে। আর সেখানেই দেখা মিলবে পরিকুণ্ড ঝরনার। নবীনছড়া ট্রেইল ধরে পৌঁছাতে হয় চা বাগান বেষ্টিত এক চমৎকার জলপ্রপাত পরিকুণ্ডে। বর্ষাকালে রূপে গাঢ় হয় এ ঝরনার সৌন্দর্য।
বিজ্ঞাপন
মাধবপুর লেক
পাহাড় ও চা বাগানের পাশে মাধবপুর লেক যেন সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি। বর্ষাকালে এর রূপ বেড়ে দ্বিগুণ হয়। শ্রীমঙ্গল থেকে আনুমানিক ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাধবপুর লেক বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন আঙ্গিকে নিজেকে মেলে ধরে। টলটলে জল ও শাপলার উপস্থিতি মনকে প্রশান্তি এবং শান্তির অনুভূতিতে পূর্ণ করে দেয়। পরিষ্কার নীল আকাশ, সবুজের প্রাচুর্য ও পাতার বুনো গন্ধ আপনার ইন্দ্রিয়কে উদ্বেলিত করবে। শহরের জীবনের একঘেয়েমি, ক্লান্তিমাখা সময়কে কয়েক ঘণ্টার জন্য ঝেড়ে ফেলতে যেতে পারেন মাধবপুর লেক। বর্ষায় মাধপুর লেকের রূপ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। মাধবপুর লেকে যেতে চাইলে শ্রীমঙ্গল যেতে হবে আগে। সেখান থেকে কলাবাগান পাড়া পরবর্তী গন্তব্য। যেখানে গাড়ি বা সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে পৌঁছে যাওয়া যাবে। চাইলে একজন ট্যুর গাইডও ভাড়া করে নেওয়া যেতে পারে।
বিজ্ঞাপন
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান
বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উদ্যান। ট্রেইলে হাঁটার সময় দেখা মিলবে হানুমান, উল্লুক, পাখি আর নানা প্রজাতির বৃক্ষরাজির। মোহনীয় জাতীয় উদ্যানটি সারাবছরই পর্যটকদের সমাগমে প্রাণবন্ত থাকে। সেখানে বিরল প্রজাতির পাখি, বানর ও হরিণ দেখার সুযোগও পাওয়া যায়। এ ছাড়া সংরক্ষিত এ বন হাইকিং ও ট্রেকিংয়ের জন্যও দুর্দান্ত। চাইলে একজন স্থানীয় গাইডের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। সহজেই বাসে বা যে কোনো ব্যক্তিগত পরিবহনে সেখানে যাওয়া যাবে।
এসইউ/এমএস
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন