ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

কালের সাক্ষী আলেকজান্ডার ক্যাসেল

ভ্রমণ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৩:০৫ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০২৫

খন্দকার বদিউজ্জামান বুলবুল

সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার কেন্দ্র ময়মনসিংহের টিচার্স ট্রেনিং কলেজ। সাধারণ পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় প্রায়ই লোহার একটি দ্বিতল ভবন চোখে পড়ে। যা অন্য সব ভবন থেকে বেশ আলাদা এবং দৃষ্টিনন্দন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, এটি ঐতিহাসিক আলেকজান্ডার ক্যাসেল। বর্তমানে এটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের পাঠাগার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

আলেকজান্ডার ক্যাসেল ময়মনসিংহের সমৃদ্ধ ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ১৮৭৯ সালে মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য তাঁর বাগানবাড়িতে দ্বিতল ভবনটি নির্মাণ করেন। ঐতিহাসিক বাড়িটি মহারাজার অতিথিশালা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তৎকালীন জেলা কালেক্টর এন এস আলেকজান্ডারের নামানুসারে নামকরণ করা হয় ‘আলেকজান্ডার ক্যাসেল’।

শুরুতেই বলেছিলাম, ইট-পাথরে তৈরি আর দশটা সাধারণ ভবন বা দালান থেকে আলেকজান্ডার ক্যাসেলের নির্মাণশৈলী বেশ আলাদা। লোহা আর কাঠের অনবদ্য ব্যবহার স্থাপনাটিকে দিয়েছে জগৎ জোড়া খ্যাতি। ফলে স্থানীয়দের কাছে ভবনটি ‘লোহার কুঠি’ নামেও পরিচিত। ভবনের দুপাশে বসানো আছে দুটি গ্রিক মূর্তি। যা ভবনের সৌন্দর্যে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।

আরও পড়ুন
মাগুরায় সীতারাম রাজার বাড়ি প্রায় ধ্বংসের পথে
আবার লালকুঠি হবে পর্যটকদের বড় আকর্ষণ

আলেকজান্ডার ক্যাসেলের চার কোণে আছে মোটা লোহার থাম, যা ভবনটিকে মজবুত করেছে। এর নির্মাণশৈলী যে কাউকে মুগ্ধ করবে। বাড়িটির টিনের চাল বেশ ঢালু, যা দেখতে অনেকটা ইউরোপীয় পুরোনো ধাঁচের। ভবনের ঘরগুলোয় পৌঁছতে হলে অবশ্যই বেশকিছু সিঁড়ি পেরিয়ে যেতে হবে। নিচতলায় আছে বেশকিছু শয়নকক্ষ। এখানে আছে কারুকার্যের অসাধারণ নিদর্শন। ১৯৪৮ সালে বাগানবাড়ি ঘিরে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।

কালের সাক্ষী হয়ে এখনও টিকে আছে লোহার কুঠিটি। আলেকজান্ডার ক্যাসেলে অনেক বরেণ্য ও গুণী ব্যক্তির সমাবেশ ঘটেছে। তাদের পদচারণায় ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে লোহার কুঠিটি। স্যার সলিমুল্লাহ, মহাত্মা গান্ধী, লর্ড কার্জন, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, ওয়াজেদ আলী খান পন্নী, শওকত আলী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অনেক বরেণ্য গুণীজন এখানে এসেছেন এবং রাত যাপন করেছেন।

সময়ের সাথে সাথে ভবনের সৌন্দর্যে কিছুটা ভাটা পড়েছে। অযত্ন-অবহেলায় ক্ষয় হচ্ছে ভবনটি। লোহা ও কাঠ ভেঙে পড়ছে, খসে পড়ছে পলেস্তরা। ভবনের সামনে থাকা নারীর ভাস্কর্যটি এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তবে এখানেও পড়েছে ধুলো। বর্তমানে আলেকজান্ডার ক্যাসেলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।

লেখক: শিক্ষার্থী, আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ।

এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন