একদিনে ঘুরে আসুন কক্সবাজার
একদিনেই বেশ কয়েকটি স্পট ঘুরে দেখা যায়। ছবি: সৌজন্যে
সৈকতের শহর কক্সবাজার পর্যটকদের কাছে এক অনন্য নাম। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ভিড় করে এর প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে। যদিও কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য অন্তত ২-৩ দিন সময় নেওয়া ভালো। তবে একদিনেও সেখানকার বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় স্পট ঘুরে দেখা সম্ভব। একদিনে কী কী দেখবেন, কোথায় কোথায় ঘুরবেন সৈকতের এই শহরে?

দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে
সকালের শুরুটা হতে পারে সমুদ্রসৈকতে। ভোরবেলায় সাগরের ঢেউয়ের গর্জন আর সূর্যের প্রথম আলোর ঝলক সৃষ্টি করে অনন্য দৃশ্য। সৈকতে হাঁটাহাঁটি, বালুকাবেলায় বসে ঢেউ দেখা কিংবা ঘোড়ায় চড়ার অভিজ্ঞতা হতে পারে ভ্রমণের প্রথম আনন্দঘন মুহূর্ত। আর স্মার্টফোনে যদি থাকে তৃতীয় প্রজন্মের এআই অরা লাইট পোর্ট্রেট প্রযুক্তি, তাহলে রাতের শেষ ভাগ বা ভোরের ম্লান আলোয়ও সেই স্মৃতি ধরে রাখা যেতে পারে।
রঙিন সাম্পানের রাজ্য শ্যামলাপুর
কোলাহলমুক্ত শান্ত পরিবেশ যাদের পছন্দ, তাদের জন্য শ্যামলাপুর উপযুক্ত স্থান। এটি বাহারছড়া ইউনিয়নের পাশে টেকনাফের কাছে অবস্থিত। মাছধরার নৌকা ও জেলেরা ছাড়া কোনো লোককে সেখানে দেখা যাবে না। বলতে গেলে সৈকতের আনন্দ কিন্তু এমনই শান্ত স্থানে। পাশাপাশি ঝাউবনের সবুজ ছোঁয়া সেখানকার সময়টুকু আনন্দময় করে তুলবে। বলা যায়, শ্যামলাপুরের এই নির্জনতাই ভ্রমণপ্রিয়দের আকর্ষণ সৃষ্টি করে। সেখানেই দেখা যাবে রঙিন সাম্পান। স্মার্টফোনে সেগুলোর সঙ্গে তোলা ছবি স্মৃতিবন্দী করা যায়।

সমুদ্রে পাহাড় দেখা
উঁচু-নিচু পাহাড়ের ভেতর দিয়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক। সাপের মতো আঁকাবাঁকা সড়কটি দিয়ে যেতে দুপাশের সবুজ গাছপালা ও পাখির কিচিরমিচির যে কাউকেই মুগ্ধ করে। কক্সবাজারের রামু উপজেলায় অবস্থিত এই সড়কের নাম ‘গোয়ালিয়া-মরিচ্যা’ সড়ক। কক্সবাজারের এই এলাকা এখন পরিচিতি পেয়েছে ‘মিনি বান্দরবান’ নামে। পর্যটকেরা সাগর দেখার পাশাপাশি এলাকাটিতে গিয়ে খুঁজে পাচ্ছেন পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানোর আমেজ। ‘মিনি বান্দরবান’ দেখতে খোলা জিপ, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে বহু পর্যটককে ভিড় করতে দেখা যায়। সড়কটির দুপাশে কোথাও সুপারিবাগান, কোথাও আবার ধান ও সবজির খেত। এ ছাড়া কিছু স্থানে রয়েছে ঘরবাড়ি। সড়কটি ধরে তিন কিলোমিটার যাওয়ার পর পাহাড়চূড়ায় পাওয়া যায় ‘গোয়ালিয়া পার্ক’। পাহাড় কিংবা সমুদ্র যা-ই দেখুন না কেন, হাতের স্মার্টফোন হয় যদি ট্রাভেল পোর্ট্রেট তাহলে তো কথাই নেই। সনি আইএমএক্স৮৮২ সেন্সরের সাথে ৫০ মেগাপিক্সেল মেইন ক্যামেরা ও ভিভোর উন্নত এআই মাস্টার অ্যালগরিদম থাকায় দূরের কিংবা কাছের প্রতিটি ছবি হবে একদম পরিষ্কার ও নয়েজ-মুক্ত।

লাবণী ও ইনানি বিচ
মূল শহরের কাছে লাবণী বিচ সবচেয়ে জনপ্রিয় সৈকত। এখানে পর্যটকদের জন্য নানা আয়োজন থাকে। বিচ বাইক রাইড, কোরাল শো-রুম, কিংবা রঙিন ঝিনুকের দোকান। সৈকতে বসে ডাবের পানি খেয়ে সময় কাটানো যায়। এছাড়া হিমছড়ি থেকে কিছুটা দূরে ইনানি বিচ, যা তার পাথুরে চর আর নীলাভ পানির জন্য বিখ্যাত। ইনানির সৈকতে হাঁটতে হাঁটতে ভ্রমণকারীরা ভিন্ন রকম শান্তি খুঁজে পান। বিকেলের দিকে সূর্যাস্ত দেখার জন্য ইনানি হতে পারে সেরা জায়গাগুলোর একটি।

কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট
কক্সবাজার শহরের আরও দুই জনপ্রিয় সৈকত হলো কলাতলী ও সুগন্ধা। কলাতলীতে জেট স্কি রাইড কিংবা স্পিডবোটে সমুদ্রে ভ্রমণের সুযোগ আছে। আর সুগন্ধা পয়েন্টে রয়েছে রঙিন ঝিনুক, মুক্তা, শামুক-ঝিনুকের তৈরি শোপিসের দোকান। দুপুরের খাবারের জন্য সুগন্ধা এলাকার রেস্তোরাঁগুলোই আদর্শ।
হিমছড়ি ঝরনা ও ভিউ পয়েন্ট
দুপুরের পর ঘুরে আসতে পারেন শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের হিমছড়ি ঝরনা। পাহাড় বেয়ে ঝরে পড়া ঠান্ডা পানি, চারপাশের সবুজ বনভূমি আর ভিউ পয়েন্ট থেকে সমুদ্র দেখা, সবমিলে হিমছড়ি হিতে পারে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এখানে ছবি তোলার জন্যও জায়গাটি আদর্শ।
অ্যাকোয়াহলিক ট্যুরিস্ট ক্যারাভান
শুধু মেরিন ড্রাইভ ভ্রমণের উদ্দেশে বানানো এই পরিবহনটি একটি ছাদখোলা ডাবল ডেকার বাস। এতে চড়ে এক নজরে দেখে নেওয়া যায় চারপাশের সবকিছু। এছাড়াও এই পরিষেবার নিয়মিত তালিকায় রয়েছে পাটুয়ার টেক, শ্যামলাপুর হিলভিউ বিচ, টেকনাফ বিচ, অ্যাকোয়াজোন-১ ও ২, সাব্রাং এবং টেকনাফের জিরো পয়েন্ট। জায়গাগুলো উপভোগ করার পাশাপাশি স্মার্টফোনে যদি ফোর সিজন থাকে, যেখানে ছবিতে আনা যায় গ্রীষ্ম, শীত, শরৎ ও বসন্তের আবহ। তাহলে ভ্রমণে বাড়তি আনন্দ যোগ হবেই হবে। আর একনজরে সমুদ্র সৈকতসহ অর্ধচন্দ্রাকৃতির সাম্পান, পাহাড়, নারিকেল ও ঝাউবন দেখার জন্য এর থেকে উৎকৃষ্ট উপায় আর হয় না। এমনকি এই ক্যারাভানে কিচেন, লাইব্রেরি, ওয়াইফাই ও ওয়াশরুমেরও ব্যবস্থা রয়েছে। এদের বিভিন্ন প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সকাল, দুপুর ও সান্ধ্যকালীন খাবার। সাধারণ সময়সীমা সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হলেও, চাইলেই বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এই যানের সেবা নেওয়া যায়।

বার্মিজ মার্কেট ও সি-ফুড
দিনশেষে বেড়ানো যেতে পারে শহরের বার্মিজ মার্কেটে। বার্মিজ পণ্যের মধ্যে এখানে আছে জামা-কাপড়, আচার, মসলাসহ নানান রকম শোপিস। ভ্রমণের স্মারক হিসেবে প্রিয়জনদের জন্য কিছু কেনাকাটা করা যায় এখান থেকে। কক্সবাজারের খাবারের অন্যতম আকর্ষণ হলো সি-ফুড। চিংড়ি, কোরাল, রূপচাঁদা কিংবা লবস্টারের নানান পদ স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোতে পাওয়া যায়। সুগন্ধা এলাকায় সি-ফুডের রেস্টুরেন্ট সবচেয়ে জনপ্রিয়।

এক দিনের কক্সবাজার ভ্রমণে হয়তো সবকিছু দেখা সম্ভব নয়। তবে সৈকতের সৌন্দর্য, সতেজ পাহাড়ি ঝরনা আর সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করার জন্য একদিনই যথেষ্ট। তাই যদি ব্যস্ততার ফাঁকে একটি দিন সময় বের করা গেলে কক্সবাজার দিতে পারে এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা। সঙ্গে যদি থাকে স্মার্টফোন, সেটায় যদি থাকে ৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা এবং উভয় ক্যামেরাতেই ফোরকে ভিডিও রেকর্ডিং সুবিধা, যদি থাকে ৬৫০০ এমএএইচ ব্লুভোল্ট ব্যাটারি ও ৯০ ওয়াট ফ্ল্যাশচার্জের সুযোগ সম্পন্ন ফোনসেট, তাহলে তো সারাদিন ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতার সঙ্গে নিয়ে আসা যায় ভ্রমণের সব আনন্দস্মৃতি। এই ভ্রমণের পারফেক্ট সঙ্গী হতে পারে ভিভো ভি৬০ লাইট।