আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফেব্রুয়ারিতে সেই নির্বাচন না হলে দেশে অরাজকতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক।
জাগো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন এম এ মালিক।
প্রবাসে থেকেও বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় এম এ মালিক। লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। সম্প্রতি দেশে এসে জাগো নিউজের মুখোমুখি হন তিনি। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক খালিদ হোসেন।
জাগো নিউজ: দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
এম এ মালিক: দেশের পরিস্থিতি উন্নয়নে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার উপদেষ্টা পরিষদ চেষ্টা করছেন। আমাদের দলের চেয়ারপারসন এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহযোগিতা করছেন। তবে সার্বিকভাবে পরিস্থিতি এখনো এলোমেলো। এনসিপি বা জামায়াতে ইসলামীর কেউ গোপালগঞ্জে যেতে পারছে না। মনে হচ্ছে, দেশে দুই ধরনের আইনের শাসন চলছে। সেনাবাহিনী বলছে, আওয়ামী লীগ সশস্ত্র বিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার পেছনে ভারতের ‘র’-এর সম্পূর্ণ হাত রয়েছে। প্রশাসন ও সচিবালয় মূলত আওয়ামী সমর্থিত, ব্যবসা–বাণিজ্যও আওয়ামী মজুদারদের হাতে। সিন্ডিকেট সবখানে।
আরও পড়ুন‘তারেক রহমানের সাধারণ জীবনযাপন’৭৫ মামলার পলাতক আসামি তারেক রহমানদেশে ফিরেই ভোটার হবেন তারেক রহমাননিম্ন আদালতে জামিন পাওয়া যায় না, কিন্তু উচ্চ আদালতে গেলে হয়। পৃথিবীর অনেক জায়গায় শুনেছি জজ ঘুস খান, কিন্তু বাংলাদেশে এই অবস্থা স্থায়ী হয়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে দেশ দুর্বল, আর ‘র’-এর প্রভাব প্রবল। ভারত কখনই চায় না বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক—তারা স্বৈরাচারী সরকারকে সমর্থন করে।
জাগো নিউজ: আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা রয়েছে কি না?
এম এ মালিক: বাংলাদেশে ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন আর ভালো সরকার দরকার। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে দেশে অরাজকতা বাড়বে। চক্রান্ত তো চলছেই। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করছি। সমস্যার একমাত্র সমাধান নির্বাচন।
জাগো নিউজ: ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের দেশে ফেরার অপেক্ষায়। কবে ফিরবেন?
এম এ মালিক: গত ১৫ বছরের আন্দোলনে তারেক রহমানের নেতৃত্ব সফল হয়েছে। এমনকি জামায়াতের আমিরও বলেছেন, বিদেশে থেকেও তার ডায়নামিক লিডারশিপ প্রশংসনীয়। বিবিসির সিরাজুর রহমান বলেছেন, এই যুগের কার্ল মার্কস তিনি। অচিরেই দেশে ফিরবেন, যা অনেকে কল্পনাও করতে পারবেন না। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন মহাসচিব।
জাগো নিউজ: আপনি যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি, আর তারেক রহমানও সেখানে আছেন। অনেকে জানতে চান—তিনি কীভাবে লন্ডনে জীবনযাপন করছেন?
এম এ মালিক: তারেক রহমান প্রথমে লন্ডনে যখন যান, যে বাড়িতে থাকতেন তার ভাড়া ছিল অল্প। তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান (খুবই দক্ষ চিকিৎসক) এবং মেয়ে জাইমা রহমান (ব্যারিস্টার) সংসার চালান। আওয়ামী লীগের এত চক্রান্ত সত্ত্বেও তারা একটি দুর্নীতির প্রমাণও দিতে পারেনি।
আরও পড়ুননির্বাচনের আগে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ তারেক রহমানেরক্ষমতায় এলে তারেক রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নই হবে মূল লক্ষ্যতফসিল ঘোষণা হলেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমানএকজন বড় ব্যবসায়ী তাকে বাড়ি কিনে দিতে চাইলে তিনি দেখা করেননি। একবার একজন বেন্টলি গাড়ি উপহার দিতে চাইলে তার মেয়ে জাইমা বলেন, ‘আব্বু গরিব মানুষের একটা দেশের পলিটিক্স করেন, বেন্টলি ব্র্যান্ডের গাড়ি মানায় না।’ এরপর তিনি আর গাড়ি নেননি। দামি শার্ট বা পোশাক পরেন না—খুব সাধারণ জীবনযাপন করেন।
জাগো নিউজ: এত ব্যস্ততার মধ্যেও আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এম এ মালিক: জাগো নিউজকেও ধন্যবাদ।
কেএইচ/এমআরএম/এমএফএ/জেআইএম