অর্থনীতি

খুঁড়িয়ে চলছে ৬ হাজার কোটি টাকার রং শিল্প

দেশের সম্প্রসারণশীল উন্নয়নের পাশাপাশি বাড়ছে অবকাঠামোগত স্থাপনা, দালানকোঠা। এসব স্থাপনা দৃষ্টিনন্দন ও দীর্ঘস্থায়ী করতে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের রঙের ব্যবহার। এতে বড় হচ্ছে রঙের বাজার। তবে, বার্ষিক ছয় হাজার কোটি টাকার এ শিল্প খুঁড়িয়ে চলছে সরকারের নীতি সহযোগিতার অভাবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রং অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য হলেও সরকার এটাকে বিলাসীপণ্য ঘোষণা দিয়ে শিল্পটিকে ভঙ্গুর করে রেখেছে। পাশাপাশি উপকরণ আমদানিতে শুল্কও অত্যধিক। আবার ফিনিশড প্রোডাক্ট বিক্রিতে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আমদানি করা বিদেশি পেইন্টের চেয়ে দেশে উৎপাদিত পেইন্টের উৎপাদন ব্যয় বেশি হচ্ছে। যে কারণে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা।

দেশের জাতীয় অর্থনীতির সঙ্গে পেইন্ট শিল্পের প্রবৃদ্ধি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বর্তমানে ব্যাংক রেট হঠাৎ করে ৯ শতাংশ থেকে লাফ দিয়ে ১৩-১৪ শতাংশে হয়ে গেছে। এটি পেইন্ট শিল্পের বড় বাধা।- অ্যাংকর পেইন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুর রহমান

বাংলাদেশ পেইন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমএ) তথ্য বলছে, বাংলাদেশে মাথাপিছু রঙের ব্যবহার প্রতিবেশী ও উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। বাংলাদেশে মাথাপিছু রঙের ব্যবহার ১ দশমিক ৩১ কেজি, যেখানে ভারতে সাড়ে ৪ কেজি, ভিয়েতনামে ২ দশমিক ৮ কেজি, চীনে ৭-৯ কেজি এবং উন্নত দেশগুলোতে ২০-২৫ কেজি।

পেইন্ট শিল্পে জড়িতরা বলছেন, বাংলাদেশে ব্যবহৃত পেইন্টের ৮০-৮৫ শতাংশ ডেকোরেটিভ। ইন্ডাস্ট্রিয়াল, মেরিন এবং অন্যান্য মিলে ১৫-২০ শতাংশ। বিপিএমএর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে ২৩০ হাজার মেট্রিক টন রঙের ব্যবহার হয়েছে। এর মধ্যে ডেকোরেটিভ পেইন্ট ৮৪ দশমিক ৭ শতাংশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পেইন্ট ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, মেরিন পেইন্ট ২ শতাংশ এবং অন্য পেইন্ট ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।

ফরেন ইনভেস্টর হিসেবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের দেশের সরকারের কাছ থেকে বেশি সুবিধা পায়। এতে লোকাল ইনভেস্টর হিসেবে আমাদের হীনম্মন্যতায় পড়তে হয়। তাছাড়া স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের আশাব্যঞ্জক নীতি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না।- মুনস্টার পেইন্টের বিজনেস অপারেশন হেড এস এম ইমরান

ডেকোরেটিভ পেইন্টের মধ্যে সিন্থেটিক এনামেল ১৮ শতাংশ, ডিসটেম্পার ১৭ শতাংশ, ইন্টারনাল ইমালশন ১৫ শতাংশ, এক্সটারনাল ইমালশন ১৪ শতাংশ, সিমেন্ট পেইন্ট ৬ শতাংশ এবং আন্ডারকোট, সিলার, পুটিং এবং থিনার মিলে রয়েছে ৩০ শতাংশ।

পেইন্ট বাজারে প্রতিযোগী কারা

দেশে পেইন্ট ইন্ডাস্ট্রি ৩৩টি। বিপিএমএ বলছে, দেশে পেইন্ট মার্কেটের ৯০ শতাংশের অংশীদার দেশের শীর্ষ ১০ কোম্পানি। বাজারের শীর্ষস্থানে রয়েছে বার্জার। পেইন্ট মার্কেটের ৫০ শতাংশের বেশি বার্জারের নিয়ন্ত্রণে। চট্টগ্রামের কালুরঘাটে বার্জারের বড় কারখানা রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এশিয়ান পেইন্টস। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মীরসরাই অর্থনৈতিক জোনে তাদের কারখানা রয়েছে। যেখানে ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু হয়েছে।

আমদানি করা রং ল্যাবে পরীক্ষার কোনো বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু স্থানীয়ভাবে তৈরি করা রং পরীক্ষার প্রয়োজন হয় এবং বিএসটিআই মান বজায় রাখতে হয়। এতে দেশে রং উৎপাদনের খরচ বেশি হয়।- বিপিএমএর জেনারেল সেক্রেটারি অরুণ মিত্র

আরও পড়ুনবিদেশি ব্র্যান্ডের দখলে মেরিন পেইন্টের বাজার ৬০০ কোটি টাকার মেরিন পেইন্টের বাজারে বাধা শুল্ক-করের বোঝা বিএনপি নেতার প্রতিষ্ঠানকে ঢাল বানিয়ে ডিপো বানাচ্ছে সাইফ পাওয়ার 

এরপরে রেইনবো পেইন্টস, কানসাই নেরোল্যাক, নিপ্পন পেইন্টস দেশে রঙের বাজারে অবস্থান তৈরি করেছে। পাশাপাশি পেইন্ট মার্কেটের বিভিন্ন অঞ্চলে মুনস্টার পেইন্টস, রক্সি পেইন্টস, এলিট পেইন্টস, পেইলাক পেইন্টস, উজালা পেইন্টস, আল-করিম পেইন্টস এবং অ্যাকোয়া পেইন্টের রয়েছে শক্তিশালী অবস্থান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড নিপ্পন, ডিউলাক্স, জতুন, নেরোল্যাক বাংলাদেশে তাদের বাজার সম্প্রসারণ করেছে।

জাতীয় রাজস্বে রং শিল্পের অংশগ্রহণ

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২৩০ হাজার ২৮০ মেট্রিক টন রং বিক্রি হয়েছে। এর বাজারমূল্য ৬ হাজার ৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট ও ট্যাক্স মিলে জাতীয় কোষাগারে জমা হয়েছে প্রায় ১১শ কোটি টাকা।

যা বলছেন দেশি উদ্যোক্তারা

পেইন্ট শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে দেশি উদ্যোক্তারা পাল্লা দিয়ে নিজেদের অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছেন। অ্যাংকর পেইন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশের জাতীয় অর্থনীতির সঙ্গে পেইন্ট শিল্পের প্রবৃদ্ধি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বর্তমানে ব্যাংক রেট হঠাৎ করে ৯ শতাংশ থেকে লাফ দিয়ে ১৩-১৪ শতাংশে হয়ে গেছে। এটি পেইন্ট শিল্পের বড় বাধা।’

এ শিল্প উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমরা সরকারকে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, পেইন্ট একটি অ্যাসেনশিয়াল পণ্য। সরকার অ্যাসেনশিয়াল গুডস ঘোষণা দিলে রঙের ব্যবহার বাড়ানো যাবে। লোহার জানালা, গ্রিলে প্রয়োজনীয় রং ব্যবহার করা না হলে মরিচা ধরে এগুলো নষ্ট হয়ে যায়। রং ব্যবহার না করলে স্ট্র্যাকচারের ইন্টেরিয়র কিংবা এক্সটেরিয়র উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, স্থাপনার স্থায়ীত্ব কমে যায়। এতে পরোক্ষভাবে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

তিনি বলেন, ‘পেইন্টে আমাদের ৫ শতাংশ সম্পূরক কর (সাবসিডিয়ারি ডিউটি-এসডি) দিতে হচ্ছে। আল্টিমেটলি এ কর ভোক্তাদের কাছ থেকে আদায় করতে হয়। এতে পেইন্টের দাম বাড়ছে। এজন্য পেইন্টের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ সাবসিডিয়ারি ডিউটি প্রত্যাহার করা হলে সাশ্রয়ীমূল্যে ভোক্তারা পেইন্ট ব্যবহার করতে পারবেন।’

ইম্পেরিয়াল পেইন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ব্যবসা করছে, ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে। তাদের মূলধনী সংকট নেই। বিশেষ করে এশিয়ান ভারতের এক নম্বর ব্র্যান্ড, বার্জারও দু-তিন নম্বরে রয়েছে। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে শিল্পগুলোকে আর্থিকসহ নীতিগত সহযোগিতা দেয়। কিন্তু আমাদের উল্টো সরকারকে দিতে হচ্ছে। তাতে তাদের মতো জায়ান্ট কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা করলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠার সুযোগ নেই। তাছাড়া বিদেশিদের চেয়ে দেশি উদ্যোক্তাদের করের হার বেশি।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে দেশি উদ্যোক্তাদের অনেকে তাদের কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু সরকারি সহযোগিতা পেলে তারাও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এগিয়ে যেতে পারতেন।’

৪০ বছরের বেশি সময় ধরে পেইন্ট শিল্পে আছে চট্টগ্রামের মুনস্টার পেইন্ট। কথা হলে মুনস্টার পেইন্টের বিজনেস অপারেশন হেড এস এম ইমরান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ফরেন ইনভেস্টর হিসেবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের দেশের সরকারের কাছ থেকে বেশি সুবিধা পায়। এতে লোকাল ইনভেস্টর হিসেবে আমাদের হীনম্মন্যতায় পড়তে হয়। তাছাড়া স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের আশাব্যঞ্জক নীতি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। যে কারণে পেইন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হওয়ার পরেও দেশে নতুন বিনিয়োগকারী তৈরি হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘দেশীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা পেইন্ট শিল্পে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে আছি। আমাদের প্রোডাক্টের গুণগত মানও ভালো। দেশে বিদেশি যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে, তারা এখানে তাদের প্রোডাক্ট উৎপাদন করছে। কিন্তু এসব প্রোডাক্টের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করছে। ওরা যে কাঁচামাল আমদানি করছে, একই ধরনের কাঁচামাল আমরাও আমদানি করছি। তাই পণ্যের গুণগত মানের দিকে কেউ কারও থেকে পিছিয়ে নেই। কিন্তু নামের কারণেই তারা এগিয়ে।’

পেইন্ট শিল্পের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের দাবি

রং শিল্পের সম্প্রসারণে শুল্ক ও অশুল্ক সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করার দাবি জানিয়েছে পেইন্ট কারখানা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পেইন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ)।

বিপিএমএর জেনারেল সেক্রেটারি অরুণ মিত্র জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশের নির্মাণ বিপ্লবে রং শিল্পের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। রং এমন একটি অতি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান যা পরিবেশ ও ঝুঁকি থেকে দেশের মূল্যবান সম্পদ রক্ষা করে। পাশাপাশি সম্পদের নিরাপত্তা ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে রং ব্যবহার করা হয়। দেশীয় সম্পদের অপচয়, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যয় কমাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘পেইন্টস শিল্পে স্থানীয় অনেক উদ্যোক্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টিকতে না পেরে তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। পেইন্ট শিল্পের কাঁচামালের প্রায় ৯৯ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমদানি পর্যায়ে সাড়ে ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত ডিউটি দিতে হয়। আবার উৎপাদন পরবর্তী সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি ১০ শতাংশ এবং ভ্যাট ১৫ শতাংশসহ মিলে ২৫ শতাংশ সরকারি রাজস্ব দিতে হচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে রং উৎপাদনে খরচ বাড়ছে।’

রং কারখানার নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের প্রয়োজন। সেখানে সরকার থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি।

অরুণ মিত্র বলেন, ‘বেশিরভাগ ফিনিশিং পণ্যের রং বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ফিনিশড গুডস আমদানির ক্ষেত্রে আন্ডার ডিক্লারেশন, মিস ডিক্লারেশন ও আন্ডার ইনভয়েসের মাধ্যমে তৈরি রং আমদানি হওয়ার কারণে স্থানীয়ভাবে তৈরি করা রং দামের প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছে না। আবার সরকারি বড় বড় প্রকল্পের জন্য শুল্কমুক্তভাবে রং আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়।’

স্থানীয় পর্যায়ের রং তৈরির খরচ বেশি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমদানি করা রং ল্যাবে পরীক্ষার কোনো বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু স্থানীয়ভাবে তৈরি করা রং পরীক্ষার প্রয়োজন হয় এবং বিএসটিআই মান বজায় রাখতে হয়। এতে দেশে রং উৎপাদনের খরচ বেশি হয়। আমদানি করা রঙের সঙ্গে দেশে উৎপাদন করা রং মূল্যের প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না।’

সরকারের কাছে রংকে অপরিহার্য পণ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘রংকে বিলাসীপণ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অপরিহার্য পণ্য হিসেবে ঘোষণা করার জন্য আমরা বিপিএমএর পক্ষ সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। পাশাপাশি শুল্ক বাধা হিসেবে স্থানীয় উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি।’

দেশে রং তৈরি হলেও দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কারিগরি ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রং শিল্পের জন্য দক্ষ জনবল গড়ে উঠছে না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে রং নিয়ে কোনো অনুষদ নেই। রং তৈরির অনুষদ খোলার জন্য আমরা বিপিএমএর পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করেছি। পাশাপাশি রঙের জন্য আলাদা শিল্পাঞ্চল বরাদ্দ দেওয়া হলে দেশের রঙের বাজার আরও সম্প্রসারিত হবে।’

এমডিআইএইচ/এএসএ/এমএফএ/জিকেএস