লাইফস্টাইল

শিশুকে গুড টাচ–ব্যাড টাচ শেখানোর কৌশল

শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠা প্রতিটি শিশুর অধিকার। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি স্পর্শেই থমকে যেতে পারে শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা। ধ্বংস করে দিতে পারে তার আনন্দময় শৈশবকে।

তাই যে কোনো ধরনের যৌন নির্যাতন থেকে নিজেকে রক্ষা করতে শিশুকে গুড টাচ-ব্যাড টাচ বা ভালো স্পর্শ, মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে।

আজ (৬ অক্টোবর) শিশু অধিকার দিবস। চলুন জেনে নেওয়া যাক শিশুকে গুড টাচ ও ব্যাড টাচ শেখাবেন যেভাবে-

গুড টাচ ব্যাড টাচ কী

একটি শিশুকে সবাই ভালোবাসবে এটা খুব স্বাভাবিক। স্পর্শের মাধ্যমে ভালোবাসা ও আন্তরিকতা প্রকাশ হয়। যেসব স্পর্শ শিশুদের ভালোবাসার অনুভূতি দেয় ও নিরাপদ অনুভব করায় তাই গুড টাচ। প্রাপ্তবয়স্ক কোনো ব্যক্তি নিজের বিকৃত যৌনাকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য যদি শিশুকে স্পর্শ করে, তাই ব্যাড টাচ। ব্যাড টাচ খুবই অস্বস্তিকর, যা শিশুর মানসিকতায় প্রভাব ফেলতে পারে।

কখন থেকে শেখাবেন

ছেলে বা মেয়েশিশুকে ছোটবেলা থেকেই তার শরীর সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। বুঝাতে হবে তার নিজের শরীর মানে একান্তই তার নিজস্ব। সাধারণত দুই বছর বয়স থেকে শিশুরা তাদের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। তাই তখন থেকেই একটু একটু করে খেলার ছলে প্রত্যেকটি অঙ্গ সম্পর্কে সঠিকভাবে শেখাতে হবে। তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ অনুভব করলে সঠিকভাবে বলতে পারবে।

যেভাবে বোঝাবেন ও শেখাবেন

১. শিশুকে বুঝিয়ে বলুন পরিচিত বা অপরিচিত, যে কোনো বয়সের যত কাছেরই আত্মীয়ই হোক না কেন, কোনো আদর বা স্পর্শ অস্বস্তিকর লাগলে তাকে সরাসরি ও দৃঢ়ভাবে ‘না’ বলতে।

২. যে কোনো নেতিবাচক বা খারাপ আচরণ পেলে তাকে চিৎকার করতে শেখান। কারো স্পর্শ ভালো না লাগলে যেন সে সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার শুরু করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, শেখাতে গিয়ে যেন শিশুর মনের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।

৩. পরিবারের কোন সদস্য শিশুকে গোসল করাতে, টয়লেট করাতে বা কাপড় পরিবর্তন করাতে পারবে সেই ব্যাপারে বুঝিয়ে বলতে হবে।

৪. গুড টাচ ও ব্যাড টাচ নিয়ে এখন প্রচুর বই ও ভিডিও পাওয়া যায়। বই পড়ে, গল্পের ছলে, ছবি এঁকে অথবা একসঙ্গে বসে ভিডিও দেখে তাকে বুঝিয়ে বলতে পারেন।

ব্যাড টাচের শিকার হলে যা করবেন

১. শিশু অস্বস্তিকর স্পর্শের ব্যাপারে জানালে, তার কথা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। তাকে আশ্বস্ত করা করতে হবে যে, আপনি তার পাশে আছেন।

২. শিশুর ট্রমা কাটাতে তাকে প্রচুর সময় দিন। তার মনের ভেতরের ভয়টাকে কাটান। কোনোভাবেই শিশুকে দোষারোপ করবেন না। প্রয়োজনে কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করুন।

৩. শিশুরা যদি ব্যাড টাচের শিকার হয়, তাহলে সেই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত এবং সামাজিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বাবা-মায়ের দায়িত্বপূর্ণ আচরণ এবং সচেতনতা শিশুর মানসিক এবং শারীরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে।

সূত্র: দ্য একাডেমি অব স্কলার, ফ্যামিলি হেল্প সেন্টার ও অন্যান্য

আরও পড়ুনশিশুর প্রথম ৫ বছরে যে ভুলগুলো স্থায়ী ক্ষতি ডেকে আনেআপনার যে কথাগুলো সন্তানের আত্মবিশ্বাস ভেঙে দিতে পারে

এসএকেওয়াই/এএমপি/এমএস