শিশুর প্রথম ৫ বছরে যে ভুলগুলো স্থায়ী ক্ষতি ডেকে আনে

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২৪ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শিশুর বেড়ে ওঠার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় তার জীবনের প্রথম পাঁচ বছর। এই সময়ে মস্তিষ্কের দ্রুত বিকাশ ঘটে, গড়ে ওঠে মানসিক ও সামাজিক দক্ষতার ভিত। কিন্তু বাবা–মায়ের কিছু আচরণ অনিচ্ছা সত্ত্বেও শিশুর মনে গভীর ক্ষত তৈরি করতে পারে।
এই ক্ষতগুলোর প্রভাব থেকে যায় সারা জীবন। ইউনিসেফ একাধিক গবেষণায় দেখিয়েছে, এ সময়ের ভুল পরিবেশ শিশুর শেখা, অনুভূতি প্রকাশ, এমনকি ভবিষ্যতের মানসিক সুস্থতার উপর দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি ফেলে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক শিশুর প্রথম ৫ বছরে কোন ভুল আচরণগুলো স্থায়ী ক্ষতি ডেকে আনতে পারে -

১. শিশুর উপর শারীরিক বা মানসিক সহিংসতা

শাস্তি হিসেবে মারধর করা, ভয় দেখানো কিংবা চিৎকার করা শিশুর জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। এ ধরনের আচরণে শিশুর মধ্যে তৈরি হয় ‘টক্সিক স্ট্রেস’, যা মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। পরিণত বয়সে এটি আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়, আচরণগত সমস্যার জন্ম দেয় এবং মানসিক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

শিশুর প্রথম ৫ বছরে যে ভুলগুলো স্থায়ী ক্ষতি ডেকে আনে

২. পারিবারিক অশান্তি

বাবা–মায়ের ঘনঘন ঝগড়া বা আশপাশে ক্রমাগত উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ইউনিসেফ জানিয়েছে, শিশুরা এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের অসহায়, অবহেলিত ও নিরাপত্তাহীন মনে করে। এর ফলে তারা হয়তো চুপচাপ হয়ে যায়, আবার অনেক সময় অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।

৩. অবহেলা

ভালোবাসা ও মনোযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়া শিশুর জন্য এক ধরনের নীরব নির্যাতন। খাবারের অভাব যেমন শরীরের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে, তেমনই যত্ন বা স্নেহের অভাব মানসিক বিকাশকে থামিয়ে দেয়। অবহেলিত শিশুরা অনেক সময় শেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং সামাজিক সম্পর্ক গড়তে সমস্যায় পড়ে।

শিশুর প্রথম ৫ বছরে যে ভুলগুলো স্থায়ী ক্ষতি ডেকে আনে

৪. অনিয়মিত যত্ন

শিশুরা নিরাপদ পরিবেশে রুটিন মেনে বেড়ে উঠতে চায়। যদি তারা অনিয়মিত যত্ন, অসম্পূর্ণ ঘুম বা বারবার বদলে যাওয়া পরিবেশে বড় হয়, তবে তাদের মধ্যে উদ্বেগ, ভয় আর অস্থিরতা তৈরি হয়। ইউনিসেফ জোর দিয়ে বলেছে, প্রথম পাঁচ বছরে স্থিতিশীল পরিবেশ শিশুর আত্মবিশ্বাস ও আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অপরিহার্য।

শিশুর শৈশবের প্রথম ধাপকে বলা হয় জীবনের ভিত্তি। সহিংসতা, অবহেলা বা পারিবারিক অশান্তি যদি এই সময়ে ছায়া ফেলে, তবে তার ক্ষতি পূরণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই প্রতিটি বাবা–মায়ের জন্য সচেতন থাকা জরুরি।

সূত্র: ইউনিসেফ

এএমপি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।