চুলের যত্নে আমরা নানা ধরনের শ্যাম্পু, সিরাম, তেল ব্যবহার করি। কিন্তু প্রকৃতিতে অনেক উপাদান আছে, যা চুলের যত্নে চমৎকার কাজ করে। তেমনই এক প্রাকৃতিক উপাদান হলো করলা। এর তেতো স্বাদের পেছনে লুকিয়ে আছে চুলের যত্নের গোপন রহস্য।
শুনতে একটু অদ্ভুত মনে হলেও করলা চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। করলা ব্যবহারে চুল পড়া, খুশকির সমস্যা দূর করে হতে পারে। তাই এখন থেকে করলা দেখলে শুধু রান্নার কথা মনে হবে না, চুলের যত্নেও এটি হতে পারে আপনার সেরা সঙ্গী।
করলা চুলে যে উপকার করেকরলায় থাকা ভিটামিন সি, আয়রন, জিঙ্ক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান, যা মাথার ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, খুশকি কমায় এবং চুলের গোড়া মজবুত করে। করলার রসে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান খুশকির জীবাণু ধ্বংস করে। এছাড়া এতে থাকা ভিটামিন সি রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত করলার ব্যবহারে চুল হবে ঘন, মজবুত ও উজ্জ্বল।
আসুন জেনে নেওয়া যাক চুলে করলার যেভাবে ব্যবহার করবেন-
নিয়মিত চুলে করলার রস ব্যবহার করলে সমস্যা কমে যাবে। পাশাপাশি ত্বকের সমস্যাও এড়াতে পারবেন। তাজা করলা কেটে ব্লেন্ডারে পেস্ট করে রস ছেঁকে নিন। এরপর এই রস মাথার ত্বকে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
করলার তেতো ভাব কমাতে চাইলে রসে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে চুল আরও ঝলমলে হবে।
২. করলা তেল হিসেবেকরলা ও নারিকেল তেলের মিশ্রণ চুলের জন্য এক কার্যকর হেয়ার টনিক হিসেবে কাজ করে। এক কাপ নারিকেল তেলে কয়েক টুকরো করলা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এবার ঠান্ডা করে ছেঁকে নিন। এই তেলটি সপ্তাহে দুই দিন স্ক্যাল্পে হালকা মালিশ করুন। এটি শুধু চুল পড়া রোধই করবে না, শুষ্ক চুলে এনে দেবে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ও নরম ভাব।
৩. করলার মাস্ক হিসেবেচুল কোঁকড়ানো এবং রুক্ষ হয়ে যায় এবং অতিরিক্ত ভেঙে যায়, তাহলে মাথার ত্বককে হাইড্রেট করতে করলার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।১ টেবিল চামচ তাজা করলার রসের সঙ্গে১ টেবিল চামচ টকদই মিশিয়ে নিন। এই হেয়ারপ্যাক চুলে ভালো করে লাগিয়ে ৪৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নিন। এতে চুল হবে ঘন ও মসৃণ।
স্ক্যাল্প থেকে অতিরিক্ত তেল ও খুশকি দূর করতে করলার তেলের সঙ্গে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ব্যবহার করুন। ১ টেবিল করলার তেল ও ১ টেবিল অ্যাপেল সিডার ভিনিগার একসঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট স্ক্যাল্পে লাগিয়ে শ্যাম্পু করে নিন। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুলের খুশকি একেবারে দূর হয়ে যাবে।
চুলের যে কোনো সমস্যার সমাধান দ্রুত হয় না। তাই করলা নিয়মিত ও ধৈর্য ধরে ব্যবহার করতে হবে। এর পাশাপাশি, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান ও ঘুম ঠিক রাখাতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, বি বিউটিফুল ইন্ডিয়া
আরও পড়ুন: চুলে জবা ফুল কীভাবে মাখবেন, বেটে না তেলে ফুটিয়েপেয়ারা পাতার গুণে পাবেন মাথাভর্তি চুল
এসএকেওয়াই/এমএস