অ্যাসিড শব্দটা শুনলে অনেকেই প্রথমে ভয় পেতে পারেন, এটা স্বাভাবিকও। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্কিন কেয়ারে অ্যাসিডের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। এখন নানা ধরনের অ্যাসিড ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানো, বলিরেখা কমানো এবং ব্রণসহ নানা ত্বকের সমস্যার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাসিড হলো গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, যা ত্বককে উজ্জ্বল, মসৃণ ও কোমল করতে সাহায্য করে। তবে মনে রাখতে হবে সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তাই অ্যাসিড ত্বকে ব্যবহারের আগে সঠিক পরিমাণ এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে জেনে ব্যবহার করলে ভালো সুফল পাওয়া যাবে।
গ্লাইকোলিক অ্যাসিড কী?গ্লাইকোলিক অ্যাসিড হলো এক ধরনের আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড, যা প্রাকৃতিকভাবে আখের রস থেকে তৈরি হয়। এটি ত্বক মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে এবং নতুন কোষের উৎপাদন বাড়ায়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল হয়, দাগ ও অসমান রং কমে আসে।
গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের ছোট আণবিক গঠন থাকার কারণে এটি সহজেই ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে, অর্থাৎ এপিডার্মিসের নিচের স্তর পর্যন্ত পৌঁছাতে কার্যকর হয়। ব্ল্যাকহেডস ও ব্রণের সমস্যা কমাতে এটি অসাধারণ উপাদান। এছাড়া বয়সের ছাপ কমাতেও এর জুড়ি নেই।
গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্যবহার করার সহজ উপায়গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নিন। প্রথম সপ্তাহে এক বা দুইবার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। সাধারণত এটি রাতে ব্যবহার করা ভালো, কারণ সূর্যের আলো ত্বককে সংবেদনশীল করে তোলে।
ব্যবহারের জন্য প্রথমে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন, তারপর গ্লাইকোলিক অ্যাসিডযুক্ত পণ্য-যেমন লোশন, ক্রিম বা সিরাম ব্যবহার করুন। ব্যবহারের পরে দিনের বেলায় অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। তবে খুব ঘন ঘন ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাই ধীরে ধীরে ত্বককে মানিয়ে নিয়ে পরিমাণ বাড়াতে পারেন।
সংবেদনশীল ত্বকে গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের ব্যবহারসংবেদনশীল ত্বকে প্রথমেই সরাসরি গ্লাইকোলিক অ্যাসিড মুখে লাগানোর পরিবর্তে গ্লাইকোলিক অ্যাসিডযুক্ত ক্লিনজার বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করে দেখা উচিত। এতে ত্বক ধীরে ধীরে এই অ্যাসিডের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং সরাসরি ব্যবহারে ত্বকে তীব্র প্রভাব পড়ে না।
যদি এটি ব্যবহারের ফলে অতিরিক্ত শুষ্কতা, লাল ভাব বা অস্বস্তি দেখা দেয়, তাহলে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্যবহার বন্ধ বা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। ত্বকের সহ্য ক্ষমতা অনুযায়ী এর ব্যবহার নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তৈলাক্ত ত্বকে গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের ব্যবহারতৈলাক্ত ত্বকের যত্নে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড একটি কার্যকর উপাদান। ত্বক যদি এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যায়, তবে এটি ব্রণ কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে আরও পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখে। তবে যে কোনো নতুন পণ্য বা অ্যাসিড ব্যবহার করার আগে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
একসঙ্গে কয়েকটি অ্যাসিডের ব্যবহারশুধু গ্লাইকোলিক অ্যাসিড আলাদাভাবে ব্যবহার করলে অনেকের ত্বকে জ্বালা বা অস্বস্তি হতে পারে। তাই ভালো ফলাফলের জন্য গ্লাইকোলিক অ্যাসিডকে ল্যাকটিক অ্যাসিড ও স্যালিসিলিক অ্যাসিডের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের নানা সমস্যা একসঙ্গে সমাধান করা যায়। গ্লাইকোলিক ও ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে কোমল ও উজ্জ্বল করে। এছাড়া স্যালিসিলিক অ্যাসিড তেল গ্রন্থিতে প্রবেশ করে ছিদ্র পরিষ্কার ও ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। তবে সবসময় সঠিক মিশ্রণে ব্যবহার করা জরুরি।
সূত্র: মেডিকেল নিউজ টু ডে, দ্য ওডেনারি, বি বিউটিফুল
আরও পড়ুন ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে পেঁপে ব্যবহার করবেন যেভাবেরাত জেগে কাজ করলে ত্বকের যত্ন নেবেন যেভাবে
এসএকেওয়াই/এমএস