ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর আমরা যারা সিরিয়াস আহতদের নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল ও প্রাইভেট ক্লিনিকে যাচ্ছিলাম, সেখানেও আমাদের ওপর হামলা করেছিল। এসব হামলা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঢাবি ভিসি মাকসুদ কামালের নির্দেশে হয়েছিল। শেখ হাসিনার প্ল্যানের সহযোগী ছিলেন ওবায়দুল কাদের এবং বাহাউদ্দিন নাছিম।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্ত সংস্থার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জবানবন্দি দিতে এসে এমন তথ্য জানান তিনি।
সাদিক কায়েম বলেন, আপনারা জানেন যখন আমরা যৌক্তিক আন্দোলন করছিলাম, সে যৌক্তিক আন্দোলনকে ১৪ জুলাই রাজাকারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন শেখ হাসিনা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিটি হল থেকে স্লোগান দিয়েছিলেন- ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’। সেদিন শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের দমন করার জন্য এবং তাদের বহিষ্কার করার জন্য।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন এরই মধ্যে একটা অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। ওই সময়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাকসুদ কামাল ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম, ইনান, সৈকতসহ সবাইকে তার বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন এবং বহিরাগত নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের দমন করার জন্য।
আরও পড়ুনসচিবালয়ে আন্দোলন: কঠোর অবস্থানে সরকার, ৪ কর্মচারী পুলিশ হেফাজতে জিয়াউলসহ ১১জনের বিরুদ্ধে ৮ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ
ডাকসু ভিপি বলেন, পরদিন ১৫ জুলাই রাজু ভাস্কর্যে আমাদের একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল, সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা এবং বহিরাগত নিয়ে এসে আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম হামলা করেছিল। যখন আমরা আমাদের আহত ভাই বোনদের নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলাম ঢাকা মেডিকেলে, সেদিন আপনারা দেখতে পেয়েছেন ঢাকা মেডিকেলে দফায় দফায় আমাদের ভাই বোনদের ওপর হামলা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, চানখাঁরপুল থেকে বহিরাগত নিয়ে এসে আমাদের ভাই বোনদের ওপর হামলা করা হয়েছিল। তো পরবর্তী ১৭ ও ১৬ জুলাই আমরা আমাদের শহীদ মিনারে কর্মসূচি দিয়েছিলাম এবং এই শহীদ মিনারের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা এবং খুনি হাসিনার পেটোয়া বাহিনী চানখাঁরপুল থেকে দফায় দফায় আমাদের ওপর হামলা করেছিল। ওইদিন চানখাঁরপুলে অনেকেই আহত হন এবং সায়েন্সল্যাবেও সেদিন যারা আন্দোলনে নেতৃবৃন্দ ছিলেন, ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ছিলেন, সেদিন তাদের ওপর হামলা করা হয়।
সাদিক কায়েম বলেন, ১৫ জুলাই রাতে নটরডেম কলেজের কিছু শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে তাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। ১৬ জুলাই যখন আমরা প্রোগ্রাম করছিলাম শহীদ মিনারে, একই সময়ে রংপুরে আমাদের আবু সাঈদের ওপর হামলা হয় এবং চট্টগ্রামে ওয়াসীম, শান্তর ওপর হামলা হয় এবং পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি তারা শহীদ হন।
এফএইচ/কেএসআর