সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সন্ত্রাসী সংগঠন দায়েশকে সমর্থন করার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় এক বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন কুয়ালালামপুর উচ্চ আদালত। বুধবার ঘোষিত এ রায়ে আদালত বলেছে, অভিযুক্তের কর্মকাণ্ড দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ‘গুরুতর হুমকি’।
দাতুক আজহার আবদুল হামিদের আদালতে অভিযুক্ত মোহাম্মদ দিদারুল আলম (২৯) দোষ স্বীকার করেন। তিনি কুয়ালালামপুরের একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন এবং ২১ জুলাই গ্রেফতারের পর থেকেই হেফাজতে আছেন। আদালত নির্দেশ দেন সাজা তার গ্রেফতারের দিন থেকেই কার্যকর হবে এবং কারাদণ্ড শেষে তাকে বাংলাদেশে ডিপোর্ট করা হবে।
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয় মেইল বারনামার বরাতে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ২৭ মে সকাল ৮টায় বুকিত আমানের সন্ত্রাসবিরোধী শাখা ই৮এম-এর তদন্তে নিশ্চিত হয় যে দিদারুল ‘আল মুবিন ইসলাম’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে দায়েশ সমর্থনকারী ছবি, ভিডিও ও প্রচারণামূলক সামগ্রী ছড়িয়েছেন।
অভিযোগটি দণ্ডবিধির ১৩০জে(১)(এ) ধারা অনুযায়ী গঠন করা হয়, যেখানে সর্বোচ্চ ৪০ বছরের কারাদণ্ড অথবা জরিমানার বিধান রয়েছে। তদন্তে উপস্থাপিত বঙ্গানুবাদ রিপোর্টেও তার পোস্টগুলোকে দায়েশের প্রচারণা হিসেবে শনাক্ত করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের উপ-অভিযোগকারী আফতাল মারিজ মাহামেদ বলেন, সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত কার্যক্রম বিদেশি নাগরিকসহ সবার জন্য কঠোর সতর্কবার্তা হওয়া উচিত। তিনি আদালতকে জানান, অভিযুক্তের পূর্বে কোনো অপরাধের রেকর্ড না থাকলেও দায়েশের মতো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রচারণা মালয়েশিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করে।
আইনজীবীহীন দিদারুল আদালতে দয়া প্রার্থনা করে জানান, তিনি বাংলাদেশে পরিবার বিশেষ করে বাবা-মাকে সহায়তা করতে মালয়েশিয়ায় এসেছিলেন। দোভাষীর মাধ্যমে তিনি বলেন, আমি আমার ভুলের জন্য দুঃখিত। আমার পরিবার ছাড়া কেউ নেই। আমি শুধু কাজ করতে এসেছিলাম।
আদালত তার অনুশোচনা বিবেচনায় নিলেও অপরাধের গুরুত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডই যথোপযুক্ত বলে রায় দেন।
এমআরএম/এএসএম