নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মানবাধিকার কর্মী আলেস বিআলিয়াতস্কি এবং প্রভাবশালী বিরোধী দলীয় নেত্রী মারিয়া কোলেসনিকোভাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে বেলারুশ কর্তৃপক্ষ। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভিয়াসনার’ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, রাশিয়ার মিত্র দেশ বেলারুশের দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিনিময়ে তিনি ১২৩ জন বন্দিকে ক্ষমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বেলটা। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্র বেলারুশের পটাশ (সার) খাতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।
বেলারুশ বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়েল শুক্রবার ও শনিবার (১২-১৩ ডিসেম্বর) রাজধানী মিনস্কে লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠক করেন। আলোচনার পর তিনি একে ‘খুবই ফলপ্রসূ’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ও মিনস্কের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করাই আমাদের লক্ষ্য। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বন্দিমুক্তির মাধ্যমে দুই দেশ ধীরে ধীরে সম্পর্ক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০২২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান আলেস বিআলিয়াতস্কি (৬৩)। তিনি বেলারুশের সবচেয়ে পুরোনো মানবাধিকার সংগঠন ‘ভিয়াসনার’ প্রতিষ্ঠাতা। তাকে ‘চোরাচালান’ ও ‘জনশৃঙ্খলা লঙ্ঘনের অর্থায়ন’-এর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে ৪৩ বছর বয়সি মারিয়া কোলেসনিকোভা ছিলেন ২০২০ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পর গণবিক্ষোভের অন্যতম মুখ। তিনি নির্বাসিত বিরোধী নেত্রী স্বিয়াতলানা তিখানভস্কায়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী। ২০২০ সালে তাকে জোরপূর্বক ইউক্রেনে পাঠানোর চেষ্টা করা হলে সীমান্তে গিয়ে তিনি নিজের পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলে আবার বেলারুশে ফিরে আসেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর। এর ফলে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ও নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে। প্রায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে মানবাধিকার দমন এবং ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণে রাশিয়াকে নিজের ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার অভিযোগে একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
তবে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত ৪৩০ জনের বেশি রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে বেলারুশ। প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর এসব সিদ্ধান্তকে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সমঝোতার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সূত্র : সিএনএন
কেএম