সৌদি আরব থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক ন টন ইউরিয়া সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সাবিক অ্যাগ্রো নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে এই সার আনতে ব্যয় হবে ৪০৬ কোটি ১৮ লাখ ৩১ হাজার ৪০ টাকা। সার কেনার পাশাপাশি নওগাঁ ও বগুড়া জেলায় একটি করে বাজার গুদাম নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে সার কেনার দুটি এবং বাফার গুদাম নির্মাণের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রো নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সাবিক অ্যাগ্রো নিউট্রেয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন এবং আপদকালীন ও জরুরি পরিস্থিতি এবং দেশীয় কারখানায় সারের ঘাটতি মোকাবিলায় আরও ৩ লাখ মেট্রিক টনসহ মোট ৬ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি করা হয়।
চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি মেট্রিক টন ৪১৩.৪৬ মার্কিন ডলার হিসেবে ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১ কোটি ৬৫ লাখ ৩৮ হাজার ৪০০ ডলারে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২০৩ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৫২০ টাকা।
বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরবের একই প্রতিষ্ঠান থেকে আরও ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সার আমদানিতেও ব্যয় হবে ২০৩ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৫২০ টাকা।
এদিকে বৈঠকে ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় নওগাঁ জেলায় ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার ১টি বাফার গুদাম নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাব নিয়ে আসে শিল্প মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবটি উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
বৈঠকে সূত্রে জানা গেছে, ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় নওগাঁ জেলায় ১টি বাফার গুদাম নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৫টি প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে ৪টি প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি’র সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এম/এস ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, নারায়ণগঞ্জ-এর নিকট থেকে ৫৪ কোটি ৭০ লাখ ৫১ হাজার ৭৬৫ টাকায় প্রকল্পের আওতায় ১টি বাফার গুদাম নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংশোধিত প্রকল্পটি একনেক থেকে অনুমোদিত হয় ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। প্যাকেজের আওতায় নওগাঁ জেলায় ১টি ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ইউরিয়া সার বাফার গুদাম নির্মাণ (স্টিল স্ট্রাকচার), সাইট ডেভেলপমেন্ট, অফিস কাম গেস্ট হাউস, আনসার ব্যারাক, সাব-স্টেশন ও জেনারেটর রুম, বাহ্যিক টয়লেট ব্লক, ওয়াচ টাওয়ার, আরসিসি স্টর্ম ড্রেন, পাম্প হাউস ও আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভয়ার, বাউন্ডারি ওয়াল, প্রধান গেট ও গার্ড রুম, পুকুর খনন, সাব-স্টেশন যন্ত্রপাতি (১০০ কেভিএ), জেনারেটর (৬০ কেভিএ), সোলার সিস্টেম ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে।
বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় বগুড়া জেলায় ২০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার ১টি বাফার গুদাম নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় বগুড়া জেলায় একটি বাফার গুদাম নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৫টি প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে ৪টি প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি’র সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এসএস রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের কাছ থেকে ৫৯ কোটি ২৮ লাখ ৪৫ হাজার ৫৬৭ টাকায় প্রকল্পের আওতায় একটি বাফার গুদাম নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্যাকেজের আওতায়: বগুড়া জেলায় ১টি ২০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ইউরিয়া সার সংরক্ষণের জন্য স্টিল স্ট্রাকচার বাফার গুদাম নির্মাণ, সাইট উন্নয়ন, অফিস কাম গেস্ট হাউস, আনসার ব্যারাক, সাব-স্টেশন ও জেনারেটর রুম, বাহ্যিক টয়লেট ব্লক, ওয়াচ টাওয়ার, আরসিসি স্টর্ম ড্রেন, পাম্প হাউস ও আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভয়ার, বাউন্ডারি ওয়াল, প্রধান গেট ও গার্ড রুম, পুকুর খনন, সাব-স্টেশন যন্ত্রপাতি (১০০ কেভিএ), জেনারেটর (৬০ কেভিএ), সোলার সিস্টেম ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে।
এমএএস/এমএএইচ/