নড়াইলের লোহাগড়ায় অপরিকল্পিত উন্নয়নের এক অদ্ভুত নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি কংক্রিটের সেতু। উপজেলার মাকড়াইল এলাকায় বিলের মাঝে নির্মিত এই সেতুটি গত ১০ বছরেও মানুষের কোনো কাজে আসেনি। নেই নদী, নেই খাল, এমনকি সেতুর দুই পাশে নেই কোনো সংযোগ সড়কও। ফলে সরকারের প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই কাঠামোটি এখন স্থানীয়দের কাছে ‘বিষফোড়া’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) অফিস সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ১৯ লাখ ৭৪ হাজার ১৫৬ টাকা ব্যয়ে মাকড়াইল পাকা রাস্তা হতে বিল পর্যন্ত রাস্তায় জাকারিয়ার বাড়ির নিকট ২৪ ফুট দৈর্ঘ্য একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন, লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিস।
আরও পড়ুন
মাদারীপুরে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ বন্ধ
‘বাচ্চারা যখন স্কুলে যায়, আল্লাহ আল্লাহ করি’
মই বেয়ে উঠতে হয় আড়াই কোটি টাকার সেতুতে
স্থানীয়রা জানান, সেতুটি ব্যবহার করতে হলে আগে রাস্তার জায়গা নির্ধারণ করে মাটি ভরাট করে রাস্তা সংস্কার প্রয়োজন।
মাকড়াইল গ্রামের কৃষক আসিফুর বলেন, খাল নেই, নদী নেই, রাস্তা নেই, খালি খালি অকারণে বিলের মাঝে একটা ব্রিজ করে থুইছে। এই ব্রিজে আমাদের কোনো উপকার নেই।
বাতাসি গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, সরকারের টাকা খরচ করে সেতু করেছে। কিন্তু সেতুর দুইপাশে কোনো রাস্তা নেই। এই সেতুতে আমাদের কোনো উপকার নেই। যদি মাটি ভরাট করে দুইপাশে রাস্তা হত তাহলে আমাদের উপকার হত।
মাকড়াইল গ্রামের বাসিন্দা সৌমিত্র মিত্র বলেন, এখানে যে ব্রিজটা হয়েছে এর সঙ্গে রাস্তা না হওয়ায় আমাদের পুরো গ্রামের ক্ষতি। আমরা একটা ভ্যান নিয়েও বিলে যেতে পারি না। দেড় কিলোমিটার ঘুরে আমাদের বিলে যেতে হয়। ব্রিজের দুইপাশ দিয়ে মাটি ভরাট করে রাস্তা করে দিলে আমরা স্থানীয়রা এর সুফল ভোগ করতে পারবে।
লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শরিফ মোহাম্মদ রুবেল বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তখন কেন কী কারণে সংযোগ সড়ক করা হয়নি সেটা আমার জানা নেই। সরজমিন পরিদর্শন করে ব্রিজের দুইপাশে চলাচলের জায়গাটি মাটি দ্বারা ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।
হাফিজুল নিলু/কেএইচকে/এমএস