ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে হাদিকে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বরিশাল
দুপুর দেড়টার পর বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকার ঢাকা- বরিশাল মহাসড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল বের করে ছাত্র জনতা। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এসে বিক্ষোভ হয়।
বিক্ষোভকালে ছাত্রজনতা বলেন, যারা হাদিকে গুলি করে হত্যা করেছে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। হাদিকে যারা হত্যা করেছে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত না করতে পারলে আগামীতে আরো কঠোর কর্মসুচী দেবে ছাত্রজনতা।
চবি
জুমার নামাজের পর কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিল জিরো পয়েন্টে এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, হাদি ভাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মানুষের হৃদয়ের কথা বলতেন, খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে কথা বলতেন। তিনি মানুষের মনের কথা বুঝতেন বলেই তাকে শহিদ করা হয়েছে। শুধু হাদি নয়—আধিপত্যবাদ এখন অনেকের বিরুদ্ধে কিলিং মিশনে নেমেছে। তারা আবার আধিপত্য কায়েম করতে চায়, দেশের সম্পদ লুটপাটের স্বপ্ন দেখে।
ভৈরব
দূর্জয় মোড় নুরানী মসজিদের সামনে আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলন ভৈরব-এর উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খেলাফত মজলিস ভৈরব উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সাইফুল ইসলাম সাহেল।
রাজবাড়ী
দুপুর আড়াইটার দিকে রাজবাড়ীর সর্বস্তরের জনগণ ও জুলাই বিপ্লবী ছাত্র সমাজের ব্যানারে শহরের বড়পুল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে শ্রীপুরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে এসে শেষ হয়। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
ঠাকুরগাঁও
জুমার নামাজ শেষে ছাত্র-জনতার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে ওসমান হাদি হত্যার দ্রুত বিচার ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
সিদ্ধিরগঞ্জ
জুম্মার নামাজের পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে হতে দশতলা পর্যন্ত তারা বিভিন্ন বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, অন্তবর্তী সরকারকে ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তাৎপর ভূমিকা অভিযান পরিচালনা করে বিচারের মুখোমুখি করা করতে হবে।
যশোর
জুমার নামাজ শেষে সর্বস্তরের ছাত্রজনতার ব্যানারে মুজিব সড়কের মডেল মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা দড়াটানা ভৈরব চত্বর, শহীদ জুলাই স্মৃতি স্তম্ভ ঘুরে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এনসিপির যশোর জেলা প্রধান সমন্বয়ক নুরুজ্জামান। পরে শহীদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
গাইবান্ধা
জুম্মার নামাজের পর শহরের পুরাতন বাজার মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের ডিবি রোড ঘুরে বাস টার্মিনালের সমানে সমবেত হয়। এতে অংশ নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, শহীদ-আহত পরিবারের সদস্য ও শিক্ষার্থী ছাড়াও সাধারণ জনতা।
নাটোর
বাদ জুম্মা শহরের কানাইখালী কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বাগেরহাট
জুমার নামাজ শেষে পুরাতন কোর্ট মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে জুলাই চত্বরে শেষ হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল ইসলাম, ডাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্য বেলাল হোসেন অপু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাগেরহাট জেলা আহ্বায়ক এস এম সাদ্দাম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের বাগেরহাট জেলা সভাপতি হাফেজ মোরশেদ আলম, বাগেরহাট জেলা ছাত্রদল নেতা আল মামুন প্রমুখ।
নারায়ণগঞ্জ
জুমআর নামাজের পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শহরের মিশনপাড়া এলাকা থেকে শুরু করে দুই নাম্বার রেলগেট হয়ে চাষাড়া গোলচত্বর এলাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মইনুদ্দিন আহমেদ।
ভোলা
দুপুর আড়াইটার দিকে ভোলার শহরের কালিনাথ রায়ের বাজার এলাকার হাটখোলা মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পরে শহরের মহাজনপট্টি, সদর রোড, বাংলাস্কুল মোড় হয়ে নতুন বাজার এসে সমাবেশ করেন।
চুয়াডাঙ্গা
জুমার নামাজের পর চৌরাস্তার মোড়ে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। এসময় বক্তব্য দেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান সজিব, জেলা সেক্রেটারি তুষার ইমরান সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গার মুখ্য সংগঠক সজিবুল ইসলাম, সদর উপজেলা সদস্য সচিব ফাহিম উদ্দিন মভিন, ওয়ারিয়র্স অব জুলাই চুয়াডাঙ্গা জেলার আহ্বায়ক মাহফুজ হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির চুয়াডাঙ্গা জেলার সভাপতি সাগর আহাম্মেদ, আপ বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গার সভাপতি স্বপন এবং ডাকসু হল সংসদের পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসির আল মাস্তুর।
কুড়িগ্রাম
বাদ জুমা উপজেলা মডেল মসজিদ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি বের হয়ে শহর ঘুরে শাপলা চত্বরে মিলিত হয়। সেখানে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়ক ব্লকেড করে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। এসয় বক্তব্য রাখেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক লোকমান হোসেন লিমন, সদস্য সচিব খন্দকার আল ইমরান, সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ, জাতীয় ছাত্র শক্তির আহ্বায়ক জাহিদ হাসান, সদস্য সচিব সাদিকুর রহমান প্রমুখ।
শেরপুর
বাদ জুম্মা শেরপুর পৌর শহরের শহীদ স্কয়ারে বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন শেরপুর মডেল গার্লস কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ হাসান বাদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার মূখ্য সমন্বয়ক ফারহান ফুয়াদ তুহিন, এনসিপির জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল হাসান দেওয়ান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিবলু, জেলা যুব শক্তির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শাহনূর রহমান সাঈম প্রমুখ।
নওগাঁ
দুপুর ২টার দিকে মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে একটি কফিন মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এসময় পুলিশ সুপারের বাসভবনের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপি বিক্ষোভ করেন তারা। পরে নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম তাদেরকে আশ্বস্ত করলে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে সন্ধ্যায় মশাল মিছিলের ঘোষণা দিয়ে তার স্থান ত্যাগ করেন।
মেহেরপুর
বিকেলে মেহেরপুর শহরের কোর্ট মোড় এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে জুলাই ঐক্য পরিষদ। এর আগে সংক্ষিপ্ত জমায়াত নেতারা বলেন, ওসমান হাদীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে জুলাইয়ের চেতনা মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াত সেক্রেটারি ইকবাল হোসাইন, রাজনৈতিক সেক্রেটারি রুহুল আমিন, এনসিপি জেলা মুখ্য সমন্বয়ক শাকিল আহমেদ, খেলাফত মজলিস জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গাফফারসহ জুলাই ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
টাঙ্গাইল
বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত মহাসড়কের আশেকপুর বাইপাস এলাকায় সড়ক অবরোধ করা হয়। অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এর আগে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
হবিগঞ্জ
বাদ জুমআ কোর্ট মসজিদ পয়েন্টে রাস্তা বন্ধ করে ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হয়। এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। পাশাপাশি শহিদ ওসমান হাদিকে নিয়ে কটূক্তি করায় আওয়ামী লীগ নেতা সুশান্ত দাস গুপ্তেরও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। হবিগঞ্জের ছাত্রজনতার ব্যানারে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।
মাদারীপুর
দুপুর আড়াইটার দিকে মোস্তাফাপুরের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়। এতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে প্রায় পৌনে একঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে
কুমিল্লা
জুম্মার নামাজের পর নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা কুমিল্লা নগরীর পূবালী চত্বর এলাকায় এসে সমবেত হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
এসময় বক্তব্য রাখেন, ছাত্রশিবিরের কুমিল্লা মহানগর সভাপতি হাসান আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল পঞ্চায়েত, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুমুল বারি কাউসারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
নরসিংদী
দুপুর ২টার দিকে নরসিংদীর ভেলানগরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এসময় শহরের ভেলানগর মোড়ে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও ব্যারিকেড দেওয়া হয়। এতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নরসিংদী-১ আসনের এমপি প্রার্থী ইব্রাহিম ভূঁইয়া, এনসিপির প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল ফয়সালসহ বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
এসআর/কেএইচকে/এএইচ