মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মার্কিন ফেডারেল সিস্টেমের ভবিষ্যৎ প্রধানকে নিয়ে কর্তৃত্বশীল এবং নির্দেশনামূলক বিশেষ মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হলেও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সুদহার নীতি পরিবর্তন এবং কখনোই তার সঙ্গে মতানৈক্য সৃষ্টি করবেন না বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তার এই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভবিষ্যৎ স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এমন একজনকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে চান যিনি সুদের হার কম রাখবেন এবং তার সঙ্গে কখনোই অসম্মতি প্রকাশ করবেন না।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, বাজার ভালো চললে আমার নতুন ফেড চেয়ারম্যানকে অবশ্যই সুদের হার কমাতে হবে। তবে অকারণে বাজার ধ্বংস করা যাবে না।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই সুদের হার কমানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছেন ট্রাম্প। তার মতে, কম সুদের হার অর্থনীতিতে ঋণ গ্রহণ সহজ করবে, বিনিয়োগ ও ভোক্তা ব্যয় বাড়াবে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে। জানা গেছে, চলতি বছরে তিন দফা সুদের হার কমিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সর্বশেষ ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আর্থিক নীতি সুদের হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫ থেকে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশে মধ্যে। তবে ট্রাম্পের মতে, এই হার আরও অনেক কম হওয়া উচিত। তার মতে সুদের হার ১ শতাংশের কাছাকাছি নামিয়ে আনা দরকার।
ফেডারেল সিস্টেমের বর্তমান প্রধান চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার তালিকায় শীর্ষে আছেন কেভিন হাসেট (ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক), কেভিন ওয়ার্শ (অর্থনীতিবিদ ও সাবেক ফেডারেল গভর্নর) এবং ক্রিস্টোফার ওয়ালার (বর্তমান ফেডারেল গভর্নর)। তবে এ তিনজনের মধ্যে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছেন ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হাসেট। ট্রাম্পের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় তিনিই পরবর্তী চেয়ারম্যান হবেন বলা ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া আর্থিক বিষয়ে কেভিন হাসেটের বিভিন্ন পরামর্শের প্রশংসাও করেছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত ডলার ছাপানো ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এটি সরাসরি প্রেসিডেন্ট বা কংগ্রেসের অধীন নয়। তবে কংগ্রেসের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। এই স্বাধীনতাই মুদ্রানীতিকে রাজনৈতিক চাপ থেকে মুক্ত রাখার মূল ভিত্তি। তবে চেয়ারম্যান নিয়োগকে ঘিরে ট্রাম্পের প্রকাশ্য মন্তব্য ও শর্ত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা, মুদ্রানীতি ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
সূত্র : আল-জাজিরা/এনবিসি
কেএম