প্রখ্যাত ফিলিস্তিনি অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মদ বকরী আর নেই। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ৭২ বছর বয়সে তিনি মারা গেছেন। তার পরিবারই এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। এদিনই উত্তর ইসরায়েলে তার জন্মস্থান বি’নেহতে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
মোহাম্মদ বকরীর মৃত্যুর খবর জানিয়ে তার সন্তান, অভিনেতা সালেহ বকরী ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “গভীর শোক ও দুঃখের সঙ্গে আমাদের প্রিয় পিতা, অভিনেতা মোহাম্মদ বকরীর মৃত্যুর সংবাদ জানাচ্ছি।”
আশির দশকে ইসরায়েলে একজন ফিলিস্তিনি শিল্পী হিসেবে অভিনয়জীবন শুরু করেন মোহাম্মদ বকরী। থিয়েটার ও চলচ্চিত্র-দুই মাধ্যমেই তিনি সমানভাবে সক্রিয় ছিলেন। আরবি ও হিব্রু-উভয় ভাষাতেই অভিনয় করে তিনি আলাদা পরিচিতি গড়ে তোলেন। গ্রিক-ফরাসি একাডেমি অ্যাওয়ার্ডজয়ী নির্মাতা কোস্টা-গাভ্রাসের নির্দেশনায় নির্মিত ‘হানাকে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড়পর্দায় তার অভিষেক হয়।
অভিনয়জীবনে তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ১৯৮৪ সালের ইসরায়েলি চলচ্চিত্র ‘বিয়ন্ড দ্য ওয়ালস’, যা পরিচালনা করেন উরি বারবাশ। ছবিটি একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসা কুড়ায়।
অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবেও মোহাম্মদ বকরী ছিলেন সাহসী ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। তার নির্মিত তথ্যচিত্র ‘জেনিন’ (২০০২) ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে পরিচালিত অপারেশন ডিফেন্সিভ শিল্ড চলাকালে সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞ ও নাগরিক হত্যার অভিযোগ এই তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়।
এই তথ্যচিত্রটি ইসরায়েলে তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়। একপর্যায়ে ইসরায়েলি ফিল্ম বোর্ড ছবিটির প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করে। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মোহাম্মদ বকরী দীর্ঘদিন আইনি লড়াই চালান। তবে ২০২২ সালে ইসরায়েলের সর্বোচ্চ আদালত তার আপিল খারিজ করে দেন।
আরও পড়ুন:আজ যা ঘটছে ইতিহাসে চিরদিন লেখা থাকবে : বান্নাহ
তারেক রহমান দেশে ফেরায় ন্যান্সির কণ্ঠে ‘নেতা আসছে’
প্রতিবাদী শিল্পচর্চা, অভিনয় ও নির্মাণ-সব মিলিয়ে মোহাম্মদ বকরী ছিলেন ফিলিস্তিনি সংস্কৃতি ও সংগ্রামের এক শক্তিশালী প্রতীক। তার মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এমএমএফ