বিনোদন

দীর্ঘ বিরতির পর যেভাবে নেতৃত্বে ফেরেন পর্দার নেতারা

বলিউড অনেকবার দেখিয়েছে- নেতা সবসময় মঞ্চে থাকেন না। কেউ কেউ নীরবে সরে যান, সময় নেন, পরিস্থিতি বোঝেন। তারপর একদিন ফিরে এসে দৃশ্যপট বদলে দেন। লম্বা বিরতির পর নেতার প্রত্যাবর্তন, এ শুধু সিনেমা নয়, বাস্তব রাজনীতিতেও দারুণ প্রাসঙ্গিক।

বলিউডের ‘নায়ক’, ‘রাজনীতি’, ‘সরকার’ ছবিগুলোতে দেখা গিয়েছিল, নেতা দীর্ঘদিন আড়ালে। ফিরে এসে বক্তৃতা নয়, সিদ্ধান্ত নেন। প্রশাসন কাঁপে, দুর্নীতির দেয়ালে ফাটল ধরে, তারপর সেই দেয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। নায়কের সঙ্গে থাকে পরিবর্তনকামী জনতা। এই গল্পগুলোতে প্রত্যাবর্তন মানে প্রতিশোধ নয়, সংস্কার। দর্শক এখানে দেখতে পান একজন কার্যকর চেঞ্জমেকারকে।আরও পড়ুনচাটুকারদের এড়িয়ে চলতে তারেক রহমানকে তরুণ অভিনেতার খোলা চিঠিতারেক রহমানের দেশে ফেরার দিনে নায়ক মান্নার সঙ্গে ছবি ভাইরাল

২০০১ সালের ছবি ‘নায়ক’ ছবিতে অনিল কাপুর একজন সাধারণ টিভি রিপোর্টার। একদিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়ে রাজ্যের দুর্নীতি দূর করার চেষ্টা করেন তিনি এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়েন। বলা যায়, এ সিনেমা একটি কাল্ট ক্লাসিক ছবিতে পরিণত হয়েছে।‘নায়ক’ ছবির পোস্টার

২০০৫ সালের ‘সরকার’ মূলত রাম গোপাল ভার্মা পরিচালিত একটি রাজনৈতিক-অপরাধ থ্রিলার, যেখানে অমিতাভ বচ্চন প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। গল্পটি মুম্বাইয়ের একজন ক্ষমতাশালী, প্রভাবশালী ব্যক্তি 'সরকার', সুবোধ নারায়ণ দেশাইকে নিয়ে। তিনি আন্ডারওয়ার্ল্ড ও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং তার ছেলে শঙ্কর, অভিষেক বচ্চন, কীভাবে তার বাবার সাম্রাজ্য ও নীতি রক্ষা করতে গিয়ে তার শত্রুদের মোকাবিলা করে এবং ক্ষমতা গ্রহণ করে, সেই কাহিনি নিয়েই ছবির কাহিনি।‘সরকার’ ছবির পোস্টার

'রাজনীতি’ ২০১০ সালের সিনেমা। মহাভারতের প্রেক্ষাপটে তৈরি এক পারিবারিক রাজনৈতিক থ্রিলার, যেখানে ক্ষমতা, বিশ্বাসঘাতকতা ও ক্ষমতার লড়াই দেখানো হয়েছে। অজয় দেবগন, রণবীর কাপুর, অর্জুন রামপাল, মনোজ বাজপেয়ীসহ বেশ কিছু পরিচিত মুখ এতে অভিনয় করেছেন।‘রাজনীতি’ ছবির পোস্টার

লম্বা বিরতি রাজনীতিতে কোনো দুর্বলতা নয়। অনেক সময় কৌশল। বিরতির সময়ে নেতা জনমত বোঝেন, ভুল থেকে শেখেন, নতুন ভাষা তৈরি করেন। বলিউডের মতো বাস্তবেও প্রত্যাবর্তনের সাফল্য নির্ভর করে প্রস্তুতির ওপর। প্রস্তুতি থাকলে নীরবতাই হয়ে ওঠে শক্তির উৎস।

ফিরে এসে কি ‘বিরাট কিছু’ করা? সিনেমায় ‘বিরাট কিছু’ মানে দ্রুত অ্যাকশন। বাস্তবে তা করতে হয় ধাপে ধাপে। আস্থা পুনর্গঠন করা, সংগঠন শক্ত করা, বার্তা পরিষ্কার করা, প্রতিষ্ঠানকে কাজে লাগানো। বলিউড দেখিয়েছে, নায়ক একা নন, সিস্টেম বদলাতে দল ও কৌশল দরকার।

যখন কোনো নেতা লম্বা বিরতির পর দেশে ফেরেন, জনতা স্বাভাবিকভাবেই গল্প খোঁজে। তিনি কি ‘নায়ক’ হবেন, নাকি ‘রাজনীতি’র মতো জটিল খেলোয়ার হবেন? সিনেমা আসলে অনুপ্রেরণা দেয়, কিন্তু বাস্তব সফলতা আসে ধারাবাহিক কাজ থেকে।

সিনেমা মানুষের মধ্যে প্রত্যাশা তৈরি করে। বাস্তব রাজনীতির ক্ষেত্রে সেই প্রত্যাশাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া কঠিন। প্রত্যাবর্তন তখনই অর্থবহ, যখন তা কেবল নাটক নয়, দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের সূচনা।

 

আরএমডি/এলআইএ