দেশজুড়ে

বহিরাগতদের হামলায় ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড

ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বর্ষপূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমসের (নগর বাউল) বহুল প্রতীক্ষিত কনসার্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বহিরাগতদের হামলায় কনসার্ট পণ্ড হয়ে যায়।

এ ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে জিলা স্কুলের ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন বলে দাবি আয়োজকদের।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে জিলা স্কুল চত্বরে নগর বাউলের সংগীত পরিবেশনের কথা ছিল। তবে অনুষ্ঠান শুরুর আগ মুহূর্তে বহিরাগতদের অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশে বাধা দিলে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে মঞ্চ দখলের চেষ্টা চালায়। এতে মুহূর্তেই অনুষ্ঠানস্থলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

জিলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুললে বিক্ষুব্ধরা সরে যেতে বাধ্য হয়। তবে এরই মধ্যে ইটের আঘাতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও দর্শক আহত হন।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে রাত ১০টার দিকে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মুস্তাফিজুর রহমান শামীম মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেমসের সংগীতানুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের প্রচার ও মিডিয়া উপ-কমিটির আহ্বায়ক রাজীবুল হাসান খান বলেন, জেমসের অনুষ্ঠান সফল করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু হঠাৎ কেন, কী কারণে এবং কারা হামলা চালায় তা বুঝে উঠতে পারিনি। ইটের আঘাতে আমাদের স্কুলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে অনুষ্ঠানটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি। তবে প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আজমীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, অনুষ্ঠানটি ঘরোয়া পরিবেশে অর্থাৎ জিলা স্কুলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। বহিরাগতরা জেমসের গান শোনার জন্য ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। পরে উত্তেজিত জনতা বাইরে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে আয়োজকরা কনসার্টটি বন্ধ করে দেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুই দিনব্যাপী ১৮৫ বর্ষপূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুক্রবার রাতে র‌্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং নির্ধারিত ব্যান্ড সংগীত শিল্পী জেমসের সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য এ আয়োজনের সমাপ্তি হওয়ার হওয়ার কথা ছিল।

ঐতিহাসিক ফরিদপুর জিলা স্কুল ব্রিটিশ শাসনামলে সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হাতেগোনা কয়েকটি বিদ্যালয়ের একটি। ১৮৪০ সালে যাত্রা শুরু করা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ ১৮৫ বছর ধরে এ অঞ্চলের শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, আন্দোলন ও সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

এন কে বি নয়ন/এফএ/এএসএম