যাদের এখনো ট্যাক্স রিটার্ন দেওয়া হয়নি, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের হাতে সময় আছে। শেষ মুহূর্তে ঘরে বসেই আপনি নিজের ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। ট্যাক্স রিটার্ন বা আয়কর রিটার্নের ব্যাপারে এখনো অনেকেই জানেন না। ভালোভাবে না বোঝার কারণে আয়কর নিয়ে অনেকের ভীতিও আছে। কিন্তু এটি কিন্তু নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। এছাড়া আয়কর পরিশোধ করা থাকলে ঝামেলা এড়িয়ে নানান সুবিধাও পাওয়া যায়।
আপনার যদি বছরে করযোগ্য আয় থাকলে অবশ্যই কর দিতে হবে। সময়মতো কর না দিলে জরিমানা সহ নানা ঝামেলায় পড়তে পারেন। জমি রেজিস্ট্রি থেকে শুরু করে ইউটিলিটি সংযোগ, ক্রেডিট কার্ডসহ ৩৮টি পরিষেবা পেতে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক।
বাংলাদেশে এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে ঘরে বসেই অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া যায়। ফলে অফিসে লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা অনেকটাই কমছে। তবে সঠিক তথ্য জানা না থাকলে মাঝপথে অনেকেই আটকে যান। চলুন পুরো প্রক্রিয়া জেনে নিই-
রিটার্ন দেওয়ার আগে কিছু তথ্য বা কাগজপত্র প্রস্তুত রাখবেন। এগুলো থাকলে ফরম পূরণ সহজ হবে।
১. টিন নম্বর ও পাসওয়ার্ড২. জাতীয় পরিচয়পত্র৩. মোবাইল নম্বর ও ই-মেইল৪. বেতন/ব্যবসায়িক আয়ের তথ্য৫. ব্যাংক স্টেটমেন্ট (প্রয়োজনে)৬. বিনিয়োগ/সঞ্চয়ের তথ্য৭. ট্যাক্স কাটা সনদ (যদি থাকে)৮. বাড়িভাড়া/অন্যান্য আয়ের তথ্য৯. ট্যাক্স ছাড় সম্পর্কিত ডকুমেন্ট
দেখে নিন অনলাইনে কীভাবে নিজে নিজেই ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করবেন-
>> অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে প্রথমে লিঙ্ক www.etaxnbr.gov.bd/#/landing-page বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
>> এবার এখান থেকে ই-রিটার্ন অপশন সিলেক্ট করুন।
>> এবার এখানে থাকা ‘গাইডলাইন’ অপশনে গিয়ে গাইডলাইনগুলো ভালোভাবে পড়ে নিন।
>> আগে থেকেই অ্যাকাউন্ট করা থাকলে সেটি লগ ইন করুন। না থাকলে রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করে অ্যাকাউন্ট করে নিন।
>> আপনার টিন নম্বর, মোবাইল নম্বর ও একটি ক্যাপচা থাকবে সঠিকভাবে দিয়ে ভেরিফাই অপশনে ক্লিক করে দিন।
>> আপনার দেওয়া ফোন নম্বরে যে ওটিপি কোড যাবে সেটি এবার বসিয়ে একটি নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে দিন। নতুন পাসওয়ার্ডটি আবার দিয়ে সাবমিট করুন।
>> এরপর লগইন করলেই একটি ইন্টারফেস পাবেন। যেখানে আপনার নাম ঠিকানাসহ বিভিন্ন তথ্য দিয়ে পূরণ করে সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ দিলেই একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে।
>> এখন নিজের টিআইএন এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে যে কোনো সময় যে কোনো জায়গা থেকে অ্যাকাউন্ট সাইন ইন করতে পারবেন।
>> নিবন্ধন হয়ে গেলে সাইন-ইন করুন এবং বামে উপরে থাকা রিটার্ন সাবমিশন অপশনে গেলেই একটি ফরম আসবে। আপনার সব তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করুন।
>> এভাবে পরের স্টেপগুলোতে আসা ফরমগুলো পূরণ করুন। আপনার ইনকাম সোর্সগুলো সঠিকভাবে বাছাই করুন বা লিখে দিন। তাহলে পরের স্টেপে পাবেন ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট নামের একটি পেজ। সেখানে আপনাকে কত টাকা ট্যাক্স দিতে হবে সেটিও দেখতে পাবেন।
>> রেগুলার ই-রিটার্নে ক্লিক করুন। এখানেই আপনার চাকরি, বেতন, ব্যবসা, সারাবছরের আয়, ব্যয়, সম্পদ একের পর এক ফ্রম আসবে সঠিকভাবে তথ্য যুক্ত করুন। এখানে সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ দিয়ে পরবর্তী পেজে যেতে হবে। এতে আপনি তথ্য সংশোধন এবং পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন।
>> যাদের ট্যাক্স দিতে হবে তারা পে নাও অপশনে যান। এখানে আপনি কীভাবে ট্যাক্সের টাকা পরিশোধ করতে চান তার বিভিন্ন অপশন পাবেন। এরপর সেখানে গিয়ে পেমেন্ট করে দিন। আর জিরো রিটার্ন হলে সাবমিট করুন।
>> সবশেষে আপনার রিটার্ন ও ট্যাক্স জমা দেওয়ার স্লিপ ও সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করুন। আপনার হোম পেজের উপরের বামেই সার্টিফিকেট, রিটার্ন ফরম সবকিছু পেয়ে যাবেন।
আরও পড়ুনআয়কর রিটার্ন কীভাবে ফাইল করবেন?অনলাইনে আয়কর দিতে কী কী ডকুমেন্টস লাগবে?
কেএসকে/এএসএম