ফরজ নামাজের পর নবীজির (সা.) কিছু আমল এখানে তুলে ধরছি:
সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত নবীজি (সা.) ফরজ নামাজের পর বলতেন:
أَسْتَغْفِرُ اللهَ، أَسْتَغْفِرُ اللهَ، أَسْتَغْفِرُ اللهَ اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
বাংলা উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম, ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা য়া যাল-জালালি ওয়াল-ইকরাম।
বাংলা অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই (তিনবার)। হে আল্লাহ! আপনি শান্তি, আপনার কাছ থেকেই শান্তি আসে, হে মহিমা ও সম্মানের অধিকারী, আপনি বরকতময়। (সহিহ মুসলিম)
২. আয়াতুল কুরসি পড়াপ্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করা সুন্নত।
আবু উমামা (রা.) বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনও অন্তরায় থাকবে না। (সুনানে নাসাঈ)
৩. তিন তাসবিহের আমল করাপ্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তিন তাসবিহ অর্থাৎ ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ও ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’ পাঠ করা সুন্নত।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবীজি (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং ৩৩ বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে, তারপর একবার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির’ বলে, তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনার চেয়েও বেশি হলেও মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ মুসলিম)
৪. আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও জিকির করাআব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.) থেকে বর্ণিত মহানবী (সা.) প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর বলতেন:
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا نَعْبُدُ إِلَّا إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
বাংলা উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদীর লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লা না’বুদু ইল্লা ইইয়াহ লাহুন-নি‘মাতু ওয়া লাহুল ফাদলু ওয়া লাহুস-সানাউল হাসান লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুখলিসীনা লাহুদ্দীন ওয়া লাও কারিহাল কাফিরূন।
বাংলা অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো শরিক নেই। তাঁরই রাজত্ব, তাঁরই প্রশংসা, এবং তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি ও ক্ষমতা নেই। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আমরা কেবল তাঁরই ইবাদত করি। অনুগ্রহ তাঁর, মর্যাদা তাঁরই, সব সুন্দর প্রশংসা তাঁরই জন্য। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আমরা তাঁরই জন্য দ্বীনকে একনিষ্ঠ করি, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। (সহিহ মুসলিম)
মুগিরা ইবনে শোবার (রা.) থেকে বর্ণিত মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর বলতেন:
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির আল্লাহুম্মা লা মানিআ লিমা আ’তাইতা ওয়া লা মু’তিয়া লিমা মানা’তা ওয়া লাত ইয়ানফাউ যাল জাদ্দি মিনাল জাদ্দু।
বাংলা অর্থ: এক আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, একচ্ছত্র ক্ষমতা একমাত্র তারই, সব প্রশংসা তারই জন্য, তিনি সব কিছুর উপরই ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আপনি যা দিতে চান তা রোধ করার কেউ নেই, আর আপনি যা রোধ করেন তা দেওয়ার কেউ নেই। আপনার কাছে (নেক আমল ছাড়া) কোনো সম্পদশালীর সম্পদ উপকারে আসে না। (সহিহ বুখারি)
৫. আল্লাহ তাআলার আশ্রয় প্রার্থনা করাসাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর এভাবে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতেন:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ، وَأَعُوذُ بِكَ أَنْ أُرَدَّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল বুখলি ওয়া আউযু বিকা মিনাল জুবনি ওয়া আউযু বিকা আন উরাদ্দা ইলা আরযালিল উমুরি ওয়া আউযু বিকা মিন ফিতনাতিদ দুনিয়া ওয়া আউযু বিকা মিন আযাবিল কবর।
বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কৃপণতা থেকে আশ্রয় চাই, কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় চাই, নিকৃষ্ট বয়সে উপনীত হওয়া থেকে আশ্রয় চাই, দুনিয়ার ফেতনা থেকে আশ্রয় চাই, এবং কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই। (সহিহ বুখারি)
ওএফএফ