চট্টগ্রামের পর সিলেটের বিপক্ষেও হেরেছে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। ১৪৪ রানের লক্ষ্য দিয়ে হারের পথেই ছিল নোয়াখালী। কিন্তু শেষদিকে মেহেদী হাসান রানার হ্যাটট্রিকে ম্যাচে ফিরে এসেও নো-বল ও ওয়াইডের কারণে শেষ বলে ১ উইকেটে হেরেছে এক্সপ্রেস।
সিলেটের বিপক্ষেও হারার পথেই ছিল নোয়াখালী এক্সপ্রেস। কিন্তু ১৮তম ওভারে মেহেদী হাসান রানার হ্যাটট্রিকে পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে নোয়াখালীর কাছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর হয়নি।
১৮তম ওভারের শেষ তিন বলে সিলেটের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ ও খালেদ আহমেদকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক। চলমান আসরে এটিই প্রথম হ্যাটট্রিক। আর সবমিলিয়ে বিপিএলের ইতিহাসে নবম।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে অবশ্য সিলেটের শুরুটাও ভালো হয়নি। নোয়াখালীর মতো রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরে সিলেটের ওপেনারও। নোয়াখালী প্রথম বলে উইকেট হারায় আর সিলেট হারায় দ্বিতীয় বলে।
হাসান মাহমুদের বলে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেটকিপার জাকের আলীর গ্লাভসে ক্যাচ দেন সাইম আইয়ুব। দলের বোর্ডে যখন ১৭ রান। আরও একবার আঘাত হানেন হাসান। চমকপ্রদ এক ডেলিভারিতে রনি তালুকদারের (৯) স্টাম্প উপড়ে ফেলেন তিনি। মেহেদী হাসান রানা ১৩ রান করা জাকির হাসানকে ফেরালে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারায় টাইটান্স।
দ্রুত ৩ উইকেট তুলে নিয়ে আশা দেখাতে থাকে নোয়াখালী। কিন্তু পারভেজ হোসেন ইমন ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজে ৮৩ রানের জুটি গড়ে সিলেটকে ম্যাচে ফেরায়।
দলীয় ১১৭ রানে ৪১ বলে ৬০ রান করা ইমন বিদায় নিলে ভাঙে জুটি। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি করা ইমনকে ফেরান জহির খান। এরপর ৫ রান করে দ্রুত ফিরে যান আফিফও। ১২০ রানে ৫ উইকেট হারিয়েও পরাজয়ের শঙ্কায় ছিল না সিলেট।
কিন্তু হঠাৎ মেহেদী হাসান রানা জ্বলে উঠলেন বল হাতে। ১৮ ওভারের শেষ ৩ বলে একে একে ফেরালেন মিরাজ, নাসুম ও খালেদকে। ১২৫ রানে ৫ উইকেট থেকে সেই রানেই ৮ উইকেটে পরিণত হয় সিলেটের স্কোর।
১২ বলে সিলেটের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৯ রান। ১৯তম ওভারে হাসান মাহমুদ মাত্র ৬ রান খরচ করেন। টি-টোয়েন্টিতে ৬ বলে ১৩ রান বড় কোনো ব্যাপার নয়। তবে সিলেটকে জয় উপহার দেন নোয়াখালীর হয়ে শেষ ওভার করতে আসা সাব্বির হোসেন।
দুই বল ডট দিয়ে ভালো শুরুর পর দেন নো-বল। ফ্রি হিটে হজম করেন ছক্কা। চতুর্থ বলে ৪। দুটি বড় শট খেলা ইথান ব্রুকস পঞ্চম বলে রানআউট হলে শেষ বলে জয়ের জন্য ২ রান দরকার হয় সিলেটের, হাতে ১ উইকেট। কিন্তু ওয়াইড দিয়ে ম্যাচ ড্র করে দেন নোয়াখালীর সাব্বির। নতুন ব্যাটার ইরশাদ পরের বলে প্যাডে লাগিয়ে এক রান সম্পন্ন করলে আবারও হারের মুখ দেখে নোয়াখালী।
এর আগে, সিলেট টাইটান্সের বিপক্ষে ৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে নড়বড়ে শুরু করে দলটি। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ধীরগতির ফিফটি ও জাকের আলী অনিকের ক্যামিওতে ১৪৩ রানের সম্মানজনক পুঁজি দাঁড় করায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে নোয়াখালীকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় স্বাগতিক সিলেট। নোয়াখালীকে শুরুতেই চেপে ধরেন খালেদ আহমেদ ও মোহাম্মদ আমির।
প্রথম ৩ ব্যাটারের কেউই খুলতে পারেননি রানের খাতা। ইনিংসের প্রথম বলেই মাজ সাদাকাতকে সাজঘরে ফেরান আমির। হাবিবুর রহমান সোহান ও হায়দার আলীও রানের খাতা না খুলেই ইনিংস দ্বিতীয় ওভারে পরিণত হন খালেদের শিকারে।
ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নিতে পারেননি অধিনায়ক সৈকত আলীও। ২৪ রান করে সাইম আইয়ুবের বলে ক্যাচ দেন নাসুম আহমেদকে। ৪১ রানে ৪ উইকেট হারায় নোয়াখালী।
প্রতিপক্ষের পরের উইকেটও তুলে নেন সাইম আইয়ুব। সাব্বির হোসেন ১৫ রান করার পর সাজঘরে ফেরেন দলীয় ৭০ রানে। ৫ উইকেট হারানোর পর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও জাকের আলী অনিক দায়িত্ব নেন নোয়াখালীর।
দুজনের ৬৬ রানের জুটিতেই এতটুকু আসতে পেরেছে নোয়াখালী। পরপর দুই বলে আউট হন জাকের ও রেজাউর রহমান রাজা। ১৭ বলে ২৯ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে খালেদের বলে জাকের বোল্ড হন। পরের বলেই আউট হন রাজাও। ষষ্ঠ ও সপ্তম উইকেটের পতন হয় ১৩৬ রানে।
অর্ধশতকের দেখা পান অঙ্কন। যদিও খুবই ধীরগতির ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ বলে ছক্কা মেরে দলের স্কোর ৭ উইকেটে ১৪৩ করেন অঙ্কন। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ বলে ৬১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। অপরপ্রান্তে ১ রানে অপরাজিত ছিলেন হাসান মাহমুদ।
সিলেটের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ শিকার খালেদের। দুটি সাইম আইয়ুবের ও একটি মোহাম্মদ আমিরের।
আইএন