দেশজুড়ে

ফুলসজ্জিত গাড়িতে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হলো প্রধান শিক্ষককে

দীর্ঘ ৩৬ বছরের শিক্ষকতা জীবন শেষে অবসরে গেলেন বরগুনার নওয়াব সলিমুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নাজমুল ফারুক। অবসর উপলক্ষে বিয়ের সাজের মতো ফুল দিয়ে সুসজ্জিত গাড়িতে করে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিদায়ী সংবর্ধনার আয়োজন করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানানো হলে এ সময় পুরো বিদ্যালয়জুড়ে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে নওয়াব সলিমুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (বিএসসি) পদে যোগদান করেন মো. নাজমুল ফারুক। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি এমএসসি ও এমএড ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ২০১০ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পান। টানা ৩৬ বছর সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি অবসরে গেলেন।

বিদায়ের দিনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রিয় শিক্ষকের সম্মানে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন করেন। অনুষ্ঠান শেষে ফুল সজ্জিত গাড়িতে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় অনেক শিক্ষার্থী ও সহকর্মীর চোখে পানি দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা গাড়ির দুই পাশে দাঁড়িয়ে করতালির মাধ্যমে তাকে সম্মান জানান।

সংবর্ধনা বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমি এই স্কুলেই লেখাপড়া করে আবার এই স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেছি। স্যার আমাদের যেভাবে মানুষ করেছেন আমরাও সেই আদর্শে শিক্ষাদান করছি। আমি সৌভাগ্যবান স্যারের মতো শিক্ষক পেয়ে। আজ স্যারের অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা স্যারের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

এ বিষয়ে নওয়াব সলিমুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষক জাতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ। দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে একজন গুণী শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন, তার বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতেই এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন।

বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবক আলহাজ মো. গোলাম হোসেন, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান স্বপনসহ বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নওয়াব সলিমুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান শিক্ষককে সম্মাননা ও উপহার প্রদান করা হয়।

নুরুল আহাদ অনিক/এমআরএম