আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সংসদ ভবন এলাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মরদেহ গুলশানের ফিরোজায় নেওয়া হচ্ছে। তার জানাজায় অংশগ্রহণ করার জন্য এবং তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন সাধারণ মানুষ।
অনেকে মঙ্গলবার রাতেই রওয়ানা হয়েছেন দেশনেত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। ট্রাক-বাস-ট্রেনে করে ঢাকায় আসছেন তারা। বগুড়া, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংসহ অনেক জেলা থেকে আসছেন নেতাকর্মীসহ তার সমর্থকরা। অনেকে ভোর ৪টায় এসে পৌঁছেছেন জানাজাস্থলে। তাদের অনেকেই কালো ব্যাজ পরেছেন।
সকাল ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ কমিউটার ট্রেনে করে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের শহরতলী ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য একরামুল কবির মামুন ও নাদিম হাসান মিঠুসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। তারা সবাই জাতীয় সংসদ ভবনের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিতব্য জানাজায় অংশ নিতে এসেছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য নাদিম হাসান মিঠু বলেন, গতকাল থেকেই আমাদের মন ভীষণ বিষন্ন। গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে সারাদেশ শোকাহত। প্রিয় নেত্রীর নামাজে জানাজায় শরিক হতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন। আমরাও সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছি।
নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার ছাত্রদল কর্মী আতিক জানান, দলের অনেক কর্মী বাস ও ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকায় এলেও তিনি ট্রেনযোগে এসেছেন। তিনি বলেন, যে যার মতো করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের দিকে রওয়ানা দিয়েছে। আমরাও এখান থেকে সরাসরি জানাজাস্থলে যাবো।
এদিকে, সিরাজগঞ্জ থেকেও ট্রেনযোগে ঢাকায় এসেছেন বিএনপি কর্মী এনায়েতুর রহমান, সবুজ মিয়া ও নাজমুল হোসাইন।
এনায়েতুর রহমান বলেন, বাসে এলে দেরি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই রংপুর এক্সপ্রেসে করে কমলাপুরে নেমেছি। আমাদের জেলা থেকে অনেকেই বিভিন্ন পরিবহনে এরইমধ্যে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন, অনেকে জানাজা স্থলেও পৌঁছে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশবাসীর কাছে অনুরোধ গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রীর জন্য সবাই দোয়া করবেন, যেন মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন।
গাজীপুর থেকে দুই বন্ধুসহ আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী শাকিব বলেন, আমি সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হলেও বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তার আন্দোলন এবং আমাদের আন্দোলন ছিল একই। বেগম জিয়া গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন ছিল, দেশ বাঁচানোর আন্দোলন ছিল আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলন ছিল। তার জানাজায় উপস্থিত থাকা আমার নৈতিক দায়িত্ব মনে করেছি।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পাশেই তার দাফন হবে।
এভারকেয়ার হাসপাতালে ৩৭ দিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে মারা যান বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বেগম খালেদা জিয়াকে। এরপর থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ইএআর/এসএনআর/এএসএম