থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে কক্সবাজারে উন্মুক্ত আয়োজন বন্ধ গত অর্ধযুগ। কিন্তু তারকা হোটেল গুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনডোর আয়োজন করে বর্ষবরণ ও বিদায়ে পর্যটক বিনোদনের আয়োজন করে আসছিল। এবারও এর ব্যতিক্রম ছিল না। নেয়া হয়ে প্রশাসনিক অনুমতিও। পূর্ব থেকে বুকিং দেয়া পর্যটক, সাংস্কৃতিক আয়োজনের শিল্পী ও পারফর্মারগণ মঙ্গলবার রাত ও বুধবার সকালে নির্ধারিত হোটেলে উপস্থিত হন।
কিন্তু মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যু এবং ৩১ ডিসেম্বর দাফনের দিন। বুধবার থেকে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। এসব কারণে, মনুষত্যবোধের জায়গা হতে থার্টিফাস্টের সাংস্কৃতিক আয়োজন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন ইনডোর আয়োজনের ব্যবস্থা করা তারকা হোটেলগুলো।
তবে এটি করতে গিয়ে চরম বেকায়দায় পড়তে হয়েছে প্রায় প্রতিটি হোটেলকে। ৩১ ডিসেম্বর হোটেলে অবস্থানের প্যাকেজে 'কমপ্লিমেন্টারি' থার্টিফাস্টের বিনোদন অনুষ্ঠান উপভোগের কমিটমেন্ট ছিল। কিন্তু হোটেলে এসে বেগম খালেদার মৃত্যু ও রাষ্ট্রীয় শোকের কারণে বিনোদন অনুষ্ঠান বাতিল শুনে অনেক পর্যটক হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে, টাকা ফেরত চান। ঝামেলা না বাড়িয়ে অনেক হোটেল সমুদয় টাকা ফেরত দেন।
তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, নিয়মরক্ষায় থার্টিফাস্টের আয়োজনে ৮-১০ লাখ টাকা বিল আগাম গুনতে হয়েছে। প্যাকেজে আসা অতিথিরা থাকলে খরচ পোষানোর একটা সুযোগ ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠান বন্ধ শুনে অনেক পর্যটক বুকিং ক্যান্সেল করে ফিরে গেছে। অনেককে তাদের আসা-যাওয়ার খরচও ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। ঝামেলা এড়াতে সবকিছু নীরবে সহ্য করতে হলো। একদিকে আর্টিস্ট ও লজিস্টিক পার্টির বিল পরিশোধ, অন্যদিকে বুকিং বাতিল করা টাকা ফেরত-দুদিকে ক্ষতি হলো।
অন্য তারকা হোটেলেও প্রায় একই অবস্থা হয়েছে। অনেক পর্যটক বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ করার হুমকিও দিয়েছেন বলে তথ্য এসেছে।
এদিকে অনুষ্ঠান না থাকলেও বাড়তি পর্যটক উপস্থিতিতে থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে কক্সবাজার শহরসহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট, টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ, এমনটি জানিয়েছেন জেলা পুলিশের ফোকাল পয়েন্ট ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস।
কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবদূত মজুমদার বলেন, প্রচুর পর্যটক আগমনের সুযোগে কেউ যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করাকে নিষিদ্ধ বা ক্ষতিকর সামগ্রী বহন করতে না পারে, সে কারণে শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। আগত পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ যাতে নিরাপদে ঘুরে বেড়াতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে বাস টার্মিনাল ও পর্যটন এলাকায় নজরদারি রয়েছে বেশি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সৈকত, হোটেল-মোটেল জোন, পর্যটন স্পট ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সায়ীদ আলমগীর/আরএইচ/জেআইএম