শিশুশ্রম দূর করতে সরকারের সুনির্দ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছেন এমপিরা। একইসঙ্গে শিশুশ্রম নিরসনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরগুলোর সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের উপরও গুরুত্বারোপ করেছেন তারা। বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের আইপিডি সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তারা এ দাবি জানান।মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডেপুটি স্পিকার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, শিশুশ্রম বন্ধে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও স্বদিচ্ছা রয়েছে। ইতোমধ্যে জাতীয় শিশুশ্রম নীতিমালা প্রণয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তার এই ঘোষণা বাস্তবায়নে এ সংক্রান্ত আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।ডেপুটি স্পিকার বলেন, সরকারের উদ্যোগের ফলে যেভাবে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো সম্ভব হয়েছে। একইভাবে শিশু শ্রম নিরসন করা সম্ভব হবে। তবে সরকারের পাশাপাশি জনগণকে আরো সচেতন হতে হবে। নিজের ঘরে শিশু শ্রমিক রাখা বন্ধ করতে হবে।সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, সরকারের পদক্ষেপের ফলে শিশুশ্রম অর্ধেকে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও সেই স্বীকৃতি দিয়েছে। বর্তমান সরকার শ্রম আইনে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করেছে। এখন অপ্রতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর সেটা করা হলে শিশুশ্রম বন্ধ করা সহজ হবে।দরিদ্রতাকে শিশুশ্রমের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করে নাজমুল হক প্রধান বলেন, শিশুশ্রম বন্ধে শুধু শহরে কাজ করলে হবে না। শিশুশ্রমের মূল উৎস্য গ্রামেও যেতে হবে। দরিদ্র মানুষের জন্য গ্রামে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে শিশুদের জন্য কর্মমূখী শিক্ষার সুযোগ বাড়াতে হবে।সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে চলেছি। ইতোমধ্যে সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। আরো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করতে হবে। এ বিষয়ে সংসদে আলোচনা উত্থাপনের আশ্বাস দেন তিনি।সংসদ সদস্য উম্মে রাজিয়া কাজল শিশুশ্রম বন্ধে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে বেসরকারি ও দাতা সংস্থাগুলোকে আরো বেশি সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান।মতবিনিময় সভায় লিখিত প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে এখানো ১৩ লাখ শিশু নানা ধরণের শ্রমের সঙ্গে জড়িত। এরমধ্যে ৪ লাখ ২০ হাজার শিশু গৃহকর্মে নিয়োজিত আছে। এ সকল শিশুকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সুনির্দ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা করা প্রয়োজন।টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি)র শিশুশ্রম নিরসন সংক্রান্ত লক্ষ্যসমূহ অর্জনে ভারতের নয়াদিল্লি ভিত্তিক গ্লোবাল মার্চ অ্যাগেইনস্ট চাইল্ড লেবারের সহায়তায় বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ) এ সভার আয়োজন করে। বিএসএর চেয়ারপারসন মো. এমরান-উল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। এইচএস/আরএস/এমএস