উদ্বোধনের অপেক্ষায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চার স্থাপনা। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তনে যোগ দিয়ে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ এ স্থাপনাগুলো উদ্বোধন করবেন।
সূত্রে জানা গেছে, স্থাপনাগুলো উদ্বোধনের জন্য এরই মধ্যে প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। স্থাপনাগুলোর মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের কাজ ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে নতুন প্রতিষ্ঠিত শেখ রাসেল হল এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের বর্ধিত অংশের কাজও শেষের পথে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল দফতর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের পরই সুবিস্তৃত ডায়না চত্বরের সবুজের সমারোহের মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদৃশ্য ম্যুরালটি সর্বপ্রথম নজড় কাড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীদেরও সহজে নজরে পড়বে জাতির জনকের ম্যুরাল। গত বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের নির্মাণ কাজের উদ্ধোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ। এরই মধ্যে নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে।
বিশ্ববিদ্যারয়ের প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুলের নকশায় ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৩৮ ফুট প্রস্থের ওপর ৩১ ফুট উচ্চতার এ ম্যুরালটি হবে জাতির জনকের দেশের দ্বিতীয় উচ্চতম ম্যুরাল। এটি নির্মাণে ৩৭ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী। তবে নির্মাণের জন্য ১৮ লাখ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী দিয়েছেন বলে তিনি জানান। এছাড়া বাকি ১৯ লাখ টাকা বিশ্ববিদ্যালয় বহন করছে।
২০১১ সালের ২৪ আগস্ট তৎকলীন উপচার্য অধ্যাপক এম আলাউদ্দীন ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ক্লাস রুম ও ল্যাব বাড়ানোর লক্ষ্যে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের কাজের উদ্বোধন করেন। দুই বছরের মধ্যে ভবনটি নির্মাণের কথা থাকলেও দফায় দফায় নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বাজেট বাড়িয়ে গত বছরের ১৭ জুন ১১ কোটি ৯১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে দ্বিতল-ভবনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়। ইতোমধ্যে ওই ভবনে আইসিই, গণিত, পরিসংখ্যান বিভাগ তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সঙ্কট লাঘবের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের দ্বিতীয় ফেজের কাজ উদ্বোধন করেন। ২৫০ আসন বিশিষ্ট হলটির বর্তমানে ৯৮ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী। ৩৭ হাজার বর্গফুট এবং ৫ তলা বিশিষ্ট হলটি নির্মানে ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এর আগে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হলের প্রথম ফেজের উদ্বোধন করেন।
বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নামে নির্মিত হয়েছে আরও একটি হল। গত ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি হলটির কাজ শুরু হয়। ২৫০ আসন বিশিষ্ট হলটির বর্তমানে ৯০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ৬ হাজার ১৯০ বর্গফুট এবং ৫তলা বিশিষ্ট হলটি ১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী জাগো নিউজকে বলেন, জাতির পিতার ম্যুরাল রাষ্ট্রপতি উদ্বোধন করবেন- এটা আমাদের বড় পাওয়া। আর অন্য স্থাপনাগুলো উদ্বোধনও আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক ও প্রেরণাদায়ক। হল দুটি উদ্বোধন হলে ৫০০ আসন বৃদ্ধি পাবে। এতে কিছুটা হলেও আবাসন সঙ্কট নিরসন হবে।
ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/আরএআর/এমএস