মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেছেন, সরকার ও রাজনীতিতে নারীর পদায়ন নয়, প্রকৃত অর্থে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন দরকার। দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীদের সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মহিলা পরিষদের অভ্যন্তরীণ বাৎসরিক মূল্যায়ন ও পরিকল্পনার লক্ষ্যে ২৫-২৬ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী আয়োজিত জাতীয় পরিষদ সভায় উদ্ধোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার রমনায় ইঞ্জিনিয়ারস্ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী অবিশেনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী মৃদুলা সমাদ্দার ও সানোয়ারা জাহান নিতু। আয়েশা খানম বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করা এবং সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য নারী আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে এবং সরকারসহ রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে সুপরিকল্পিত সুপারিশ পেশ করে আসছে। অপরদিকে ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত শারলোতা স্লাইটার বলেন, বাংলাদেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে সুশাসন একটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। সুইডেনে সমাজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নারী আন্দোলন বড় ভূমিকা রেখেছিল, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তা হতে পারে। এখন থেকে একশ বছর আগে সুইডেনে নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করেছে এবং বর্তমানে দেশের সংসদে এবং মন্ত্রী পরিষদে নারী ও পুরুষের সংখ্যা প্রায় সমান। এ জন্য সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার।
ইউএন. উইম্যান, বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শোকো ইশিকিয়া বলেন, বাংলাদেশ প্রতিনিধি বৈশ্বিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে মিটু ম্যুভমেন্ট শুরু হয়েছে তা নারীর অধিকারের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশেও এই আন্দোলনের মাধ্যমে তরুণ সমাজের মধ্যে সাহস ও সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং নারী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য বেজিং+২৫ এর পর্যালোচনার লক্ষ্যে বাংলাদেশে নারী আন্দোলন সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন এবং এ কার্যক্রমে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সরকার এবং সামাজিক ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে পারে।
অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আঞ্জুমান আরা আকসির এবং সাধারণ শোক প্রস্তাব পাঠ করেন কাউখালী জেলা শাখার সভাপতি সুনন্দা সমদ্দার। অধিবেশন পরিচালনা করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম। প্রথম কর্ম অধিবেশনে কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম।
সভায় সংগঠনের ৫৩টি জেলা শাখার ৩৪৮ জন প্রতিনিধি এবং উপদেষ্টা, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দসহ মোট ৪ শতাধিক সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
এফএইচএস/আরএস